ভিডিও মঙ্গলবার, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৫

ইট ও সুড়কি খসে ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে বাগমারার গোয়ালকান্দি জমিদারবাড়ি

ইট ও সুড়কি খসে ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে বাগমারার গোয়ালকান্দি জমিদারবাড়ি

পুঠিয়া (রাজশাহী) প্রতিনিধি :  জমিদারী প্রথা শেষ কিন্তু ইতিহাস ও ঐতিহ্য নিয়ে কালের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে রাজশাহী জেলার বাগমারা উপজেলার গোয়ালকান্দি জমিদার বাড়ি। কিন্তু সংস্কার ও সংরক্ষণের অভাবে বাড়ির তিনটি ভবনের ইট ও সুরকি খসে যাওয়ায় এখন ধ্বংসের পথে। যথাযথ ভাবে সংরক্ষণ করতে পারলে ভ্রমণ পিপাসুদের কাছে আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে পরিণত হবে বলে মনে করেন স্থানীয়রা।

রাজশাহী শহর থেকে প্রায় ৫২ কিলোমিটার পূর্ব-উত্তরে বাগমারা উপজেলার গোয়ালকান্দি জমিদার বাড়ি অবস্থিত। এই জমিদার বাড়ি কবে নাগাদ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে তার কোন সঠিক তথ্য জানা যায়নি। তবে ১৯৪৭ সালে ভারতবর্ষ ভাগের সময় জমিদার বংশধরগণ ভারতে চলে গেলে, গোয়ালকান্দি জমিদার প্রথার বিলুপ্তি ঘটে। বর্তমানে গোয়ালকান্দি জমিদার বাড়ির একটি ভবনে ইউনিয়ন পরিষদের কার্যক্রম পরিচালত হচ্ছে। অপর ভবনগুলো লিজ, ক্রয় বা বিনিময় সূত্রে দখল হয়ে আছে অনেকে।

কথিত আছে, ততকালীন জমিদার ছিলেন কংস নারায়ন। পরবর্তীতে গ্রীস দত্ত, সতীস দত্ত জমিদারী পরিচালনা করতেন। পরবর্তী সময়ে বড় ভাই অক্ষয় কুমার দত্ত, মেজ ভাই আশ্বিনী কুমার দত্ত ও ছোট ভাই অনিল কুমার দত্ত এই তিন ভাই পৈত্রিক সূত্রে গোয়ালকান্দি জমিদার প্রাপ্ত হন। তাবে তারাই ছিলেন এই বংশের শেষ জমিদার। সে সময় জমিদারী পারিচলনার জন্য তিন ভাই ৩টি ভবন ও মন্দির নির্মাণ করেন। বর্তমানে জমিদার বাড়িগুলো ধ্বংসের পথে। কক্ষগুলো বিলীন হয়ে গেছে।

অযত্ন আর অবহেলায় ভেঙে পড়ে যাচ্ছে দেওয়ালগুলোও। লতাগাছে ঢেকে গেছে পুরো বাড়ি। কারুকার্য খচিত দরজা-জানালাগুলোর কিছুই অবশিষ্ট নেই। খসে পড়েছে মূল স্থাপনার নানা অংশ। চুরি হয়ে গেছে অনেক মূল্যবান পাথরসহ আসবাবপত্র।

আরও পড়ুন

স্থাপত্য শৈলীর অনুপম নিদর্শন মুছে এই গোয়ালকান্দি জমিদারবাড়িতে রয়েছে তিনটি দৃষ্টিনন্দন ভবন, একটি মন্দির ও হরিবাসর পরিচালনার জন্য একটি ঘর, ভবনের একপাশে জমিদারদের ব্যবহৃত শিব মন্দির, কালি মন্দির, রাধা গোবিন্দ মন্দিরসহ পুকুর ও অসংখ্য গাছগাছালী রয়েছে। এক সময় কারুকার্য খচিত রং মহলগুলো থেকে ইট ও সুরকি খসে বেহাল হয়ে পড়েছে জমিদার বাড়িটি।

বর্তমানে জমিদার ভবনে বসবাসকারী সাবেক শিক্ষক মাহাতাব উদ্দিন সরকার (৯০) জানান, আমি সরকারের কাছ থেকে ২ দাগে ২৮ শতক জমি পত্তন নিয়ে নিয়ে বসবাস করছি। আমি যে টুকু শুনেছি, ১৯৪৭ সালে এখানকার জমিদার তিন ভাই ভারতে চলে যায়। সে সময় বড় ভাই অক্ষয় কুমার দত্ত তার জমি-জমা এনামুল হক বিন্দু’র সাথে বিনিময় করে যান। মেজ ভাই আশ্বিনি কুমার দত্তের জমি সরকার প্রাপ্ত হয়। ছোট ভাই অনিল কুমার দত্ত তার ভাগের জমিজমা বিক্রি করে চলে যান। বর্তমানে অনিল কুমার দত্তের বাসভবনে গোয়ালকান্দি ইউনিয়ন পরিষদ কার্যক্রম পরিচালিত হয়।

এ ব্যাপারে বাগমারার গোয়ালকান্দি ইউনিয়ন পরিষদ প্যানেল চেয়ারম্যান মোঃ বকুল সরদার জানান, রাজবাড়ীর একটি অংশে ইউনিয়ন পরিষদ বাকি অংশগুলো বিভিন্নজন বিভিন্নভাবে ইজারা বা পত্তন নিয়ে আছে। এই জমিদার বাড়িটা ঐতিহ্যবাহী প্রাচীন একটি জমিদার বাড়ি। এই জামিদার বাড়ি সংস্কার ও রক্ষনাবেক্ষন করা হলে প্রাচীন এটি দর্শনীয় স্থান হিসাবে রুপান্তিত হবে।

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

গাইবান্ধায় শেষ হলো নৌকাবাইচ 

দিনাজপুরের আর্লি-৪৫ জাতের শিম চাষ করে ব্যাপক সফলতা

লালমনিরহাটে আন্তঃজেলা মোটরসাইকেল চোরচক্রের ৮ সদস্য গ্রেফতার

রাজধানীতে কনটেন্ট ক্রিয়েটর হিরো আলমের ওপর হামলা

নওগাঁর রাণীনগরে লাখ টাকার নিষিদ্ধ রিং জাল বিনষ্ট

পাবনার চাটমোহরে অবৈধ সোঁতিবাঁধ অপসারণ করলেন ইউএনও