সুখাইড়ের সেই ছেলেটিই আজকের অনির্বাণ
_original_1758290901.jpg)
অভি মঈনুদ্দীন ঃ সুখাইর জমিদার বাড়ি-সুনামগঞ্জ জেলার অন্তর্গত ধর্মপাশা উপজেলার হাওর রাজ্যের (মধ্যনগর বাজারের খুউব কাছে) সুখাইড়ের জমিদারদের দ্বারা (প্রায়) ৪০০ বছর আগের দৃষ্টিনন্দন নির্মাণশৈলী ও ঐতিহ্যবাহী ঐতিহাসিক স্থাপনা । এই জমিদার বাড়ি ‘রাজমহল’ ও ‘সুখাইড় রাজবাড়ি’ নামেও পরিচিত এবং এই রাজকীয় বাড়ির জমিদারি উত্তর পূর্বে মেঘালয় রাজ্য, উত্তরে আসাম রাজ্য ও পূর্ব দক্ষিণে ত্রিপুরা রাজ্য পর্যন্ত বিস্তৃত ছিলো। আর এই সুখাইড়েই জন্ম এই প্রজন্মের আলোচিত ও নির্ভরযোগ্য তবলা বাদক অনিবার্ণ সরকারের। সুখাইড়ের ওস্তাদ নিখিল সরকার ও সঞ্চয়িতা সরকারের ছেলে অনির্বাণ সরকার। ছোটবেলায় ভীষণ দুষ্টু ছিলেন বিধায় অনির্বাণের বাবা অনির্বাণকে বাঘা বাঙ্গালী বলে ডাকতেন।
তবলা বাজানোর শক অনির্বাণের ছোটবেলা থেকেই। যে কারণে একসময় তার মামা গোপাল দে’র কাছে তার তবলায় হাতেখড়ি হয়। এরপর কাকু মানস দত্ত্ব, পণ্ডিত পবিত্র মোহন দে এবং পরবর্তীতে ঢাকায় এসে মিলন ভট্টাচার্র্য্য, পল্লব স্যানাল, সবুজ আহমেদ’র কাছে তবলা প্রশিক্ষণে তালিম নেন। ভারতের মনোজ পাণ্ডে ও বিপ্লব ভট্টাচার্য্যরে কাছেও তিনি তালিম নেন। পেশাগতভাবে তবলায় তার যাত্রা শুরু ২০০৫ সাল থেকে। অর্থাৎ পেশাগত জীবনে অনির্বাণ দেখতে দেখতে দুই ধমক পার করছেন। ঢাকায় পেশাগতভাবে তার তবলা বাজানো শুরু হয়েছিলো রথীন্দ্র নাথ রায়, সুবীর নন্দী, অনুপ ভট্টাচার্য্য’র সঙ্গে। এরপর একে একে রফিকুল আলম, অ্যাণ্ড্রু কিশোর, আবিদা সুলতানা, ফেরদৌস আরা, মনির খান, ’সহ অনেক সিনিয়র শিল্পীদের সঙ্গে তবলা বাজিয়েছেন তিনি। ২০০২ সাল থেকে সাবিনা ইয়াসমিনের সঙ্গে যন্ত্রশিল্পী হিসেবে অনেক শো’তে তবলা বাজিয়েছেন। এই প্রজন্মের প্রায় সব আলোচিত সঙ্গীতশিল্পীর সঙ্গেও তবলা শিল্পী হিসেবে কাজ করেছেন অনির্বাণ। তবে স্বপ্ন রয়েছে তার উপমহাদেশের প্রখ্যাত সঙ্গীতশিল্পী রুনা লায়লার সঙ্গে কোনো অনুষ্ঠানে তবলা বাজানোর। অনির্বাণ বিশ্বাস করেন একদিন সেই সুযোগও আসবে। তবলা শিল্পী হিসেবে তিনি এরইমধ্যে দেশের বাইওে দুবাই, কাতার, ব্যাংকক, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, সৌদী আরব, ভারত’সহ আরো বেশকিছু দেশে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে তবলা শিল্পী হিসেবে কাজ করেছেন। তবে আজ পর্যন্ত কোনো গানের সুর করা হয়ে উঠেনি। ইচ্ছে আছে গানের সুর করার। তবে সেই সময় এখনো হয়ে উঠেনি তার।
অনিবার্ণ বলেন,‘ একজন তবলা শিল্পী হিসেবে আমি সবসময়ই ভীষণ গর্ব করি। কারণ একজন তবলা শিল্পী হিসেবে আমি জীবনে যা পেয়েছি, যে প্রাপ্তি আমার তা নিয়ে আমি সত্যিই ভীষণ আনন্দিত, গর্বিত। আমার কোনোই দুঃখ নেই। এই পেশা আমার জীবনকে সৃমদ্ধ করেছে, সুখে ভরে দিয়েছে। আমি এক জীবনে তবলা শিল্পী হিসেবে ভীষণ সফল। আমি কৃতজ্ঞ আমার সকল গুরুদের প্রতি, কৃতজ্ঞ সকল আয়োজক, শিল্পীদের প্রতি। সবার দোয়া আর আশীর্বাদে আমি আরো বহুদূর যেতে চাই।’
আরও পড়ুনএদিকে ২০০৮ সাল থেকে অনির্বাণ বাংলাদেশ বেতারে একজন তবলা বাদক হিসেবে চাকুরী করছেন। অনির্বাণের স্ত্রী পল্লবী সরকার মনি ও একমাত্র সন্তান অপূর্ব সরকার অংশুমান।
মন্তব্য করুন