ভিডিও সোমবার, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫

যেকোন ইস্যুতে ছাত্রশিবির শিক্ষার্থীদের স্বার্থকে প্রাধান্য দেবে : এজিএস মহিউদ্দীন খান

যেকোন ইস্যুতে ছাত্রশিবির শিক্ষার্থীদের স্বার্থকে প্রাধান্য দেবে : এজিএস মহিউদ্দীন খান। ছবি : দৈনিক করতোয়া

ডাকসু (ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ) নির্বাচনের পর শিক্ষার্থীদের নিয়ে ভাবনা ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে কথা বলেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি ও ডাকসু’র নির্বাচিত এজিএস মহিউদ্দীন খান। তার সাক্ষাৎকার নিয়েছেন দৈনিক করতোয়ার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি সাকিব হাসান।

করতোয়া : দীর্ঘদিন পর ডাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলো, নির্বাচিত হয়ে আপনার কেমন লাগছে?
মহিউদ্দীন খান : দীর্ঘ সময়ের পর ডাকসু’র নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এটা আমাদের সবার-ই দাবি ছিল। নির্বাচিত হওয়ার অনুভূতির চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো দায়িত্ব পালন করা। আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করবো শিক্ষার্থীদের আবেগ ও যে দাবি দাওয়াগুলো রয়েছে সেগুলোকে সম্মান করে কাজ করতে।


করতোয়া : এত বড় দায়িত্ব পেয়েছেন, প্রথমেই শিক্ষার্থীদের জন্য কোন কাজগুলো করতে চান?
মহিউদ্দীন খান : প্রথমত অনেকগুলো কাজ আছে, কিছু কমন সমস্যা আছে। কাজগুলো দুই ক্যাটাগরির। কিছু কাজ দ্রুত করা যায়, আর কিছু কাজ সময় নিয়েই আমাদের করতে হবে। আমরা দীর্ঘমেয়াদি যে কাজগুলো, সেগুলোর প্ল্যান করে ফেলেছি। আপাতত আমাদের ইশতেহারে যে ছোট ছোট কাজগুলো আছে সেগুলো বাস্তবায়নের জন্য কাজ করবো।


করতোয়া : নির্বাচনের আগে একটা গুঞ্জন উঠেছিল শিবির মেয়েদের হলে ভোট পাবে না, কিন্তু মেয়েদের হলগুলোতেই শিবির এক চেটিয়া ভোট পেয়েছে, এর পিছনে কী কী কারণ আছে বলে আপনি মনে করেন?
মহিউদ্দীন খান : মেয়েদের হলে শিবির ভোট পাবে না, এটা আমরা বারবার বলে আসছি এটা মিথ্যা, ন্যারেটিভ। আমরা যখনই নারী শিক্ষার্থীদের কাছে গিয়েছি তারা আমাদের গ্রহণ করেছে, আমাদের পরামর্শও দিয়েছে। এখন শিক্ষার্থীরা কথার চেয়ে কাজে বেশি বিশ্বাস করে। আমরা সেই কাজগুলোই করেছি গত এক বছরে। শুধু নারী শিক্ষার্থী না, আমাদের কাজের মাধ্যমেই শিক্ষার্থীরা আমাদের নির্বাচিত করেছেন।

করতোয়া : কাজ করার সময় যদি উপাচার্যের সাথে মতবিরোধ হয় সেক্ষেত্রে আপনি শিক্ষার্থীদের স্বার্থ নাকি প্রশাসনের স্বার্থ কোনটা আগে দেখবেন?
মহিউদ্দীন খান : অবশ্যই শিক্ষার্থীদের স্বার্থেই কাজ করব। যেকোন ইস্যুতে আমরা শিক্ষার্থীদের স্বার্থকে প্রাধান্য দেবো।

করতোয়া : ছাত্ররাজনীতিতে অর্থের প্রভাব অস্বীকার করা যায় না, আপনাদের নির্বাচনি প্রচারণা অর্থের উৎস কী ছিল?
মহিউদ্দীন খান : আমরা বারবার বলেছি, আমাদের যে অর্থের উৎস-তা আমাদের শুভাকাঙ্খী ও সাবেক যারা আছেন তাদের যে ডোনেশন সেটাই। তাদের এই ডোনেশনের মাধ্যমেই আমরা ডাকসু’র যে যাবতীয় খরচ সেটি বহন করেছি।

করতোয়া : শিক্ষক নিয়োগের ব্যাপারে দলীয়করণকে আপনারা কীভাবে ঠেকাবেন? এবং শিক্ষক নিয়োগের স্বচ্ছতার জন্য কীভাবে কাজ করবেন?
মহিউদ্দীন খান : শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে সরাসরি ডাকসু’র ইনভল্ভমেন্ট নেই। তবে এ ক্ষেত্রে আমরা নিশ্চিত করতে চাই যে-শিক্ষক নিয়োগের যেসকল স্ট্যান্ডার্ড সেট করা হয়েছে, প্রত্যেকটা বিষয় যাতে সঠিকভাবে বিচার করা হয়, সেটির জন্য আমরা কাজ করবো। তাছাড়া দলীয় বিবেচনা, আঞ্চলিকতা ও নেটওয়ার্কিং এসবের ঊর্ধ্বে অবশ্যই প্রার্থীর রেজাল্ট, গবেষণা কর্ম, পাবলিকেশন এবং অন্যান্য একাডেমিক বিষয়গুলোকে ফোকাস দেওয়ার জন্য আমরা বিশ্ববিদ্যালয়কে বলবো। যার সাথেই বৈষম্য করা হবে আমরা তার পাশেই দাঁড়াবো।

আরও পড়ুন

করতোয়া : আপনারা ডাকসুকে একাডেমিক ক্যালেন্ডারে যোগ করতে চেয়েছেন? সে কাজটি কীভাবে করবেন?
মহিউদ্দীন খান : ডাকসুকে একাডেমিক ক্যালেন্ডারে যুক্ত করা আমাদের প্রথম কাজ। আমাদের পরিকল্পনা হবে শিক্ষার্থীদের সাথে নিয়ে আন্দোলন গড়ে তোলা। আমাদের প্রতিনিধিরা সিনেটে থাকবেন তাদের ভয়েসও শোনা হবে। আমরা আশা করছি, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এটাকে কনসিডার করবে। আমরা সংগঠন ও শিক্ষার্থীদের ভয়েস হিসেবে এই দাবিগুলো যে যে জায়গায় তুললে বাস্তবায়ন হবে আমরা সেভাবেই করবো।


করতোয়া : ডাকসু’র মেয়াদ এক বছর এই অল্প সময়ে আপনাদের ইশতেহারগুলো কী বাস্তবায়ন করা সম্ভব? 
মহিউদ্দীন খান : ডাকসু’র মেয়াদ এক বছর এটি যেমন সত্য, তেমনি ডাকসুতে চাইলে কাজ করা যায় এটাও সত্য। আমরা বিগত ডাকসুতে দেখেছি রাজনৈতিক এজেন্ডা বাস্তবায়নই মূল উদ্দেশ্য ছিল। আমরা বার বার বলেছি, রাজনৈতিক এজেন্ডা বাস্তবায়ন করা আমাদের উদেশ্য নয়।

বরং শিক্ষার্থীদের দাবি-দাওয়া এবং স্বার্থ আদায়ই আমাদের মূল উদ্দেশ্য। এখানে বেশকিছু বিষয় আছে-যেগুলো এক বছরে করা সম্ভব নয়। আমরা মনে করি, আমরা যদি কাজ করি তাহলে আমাদের ৩৬টা ইশতেহার অর্ধেক সময়ের মধ্যেই বাস্তবায়ন করা সম্ভব। তবে আবাসন সমস্যা, রেজিস্ট্রার বিল্ডিংয়ের লাল ফিতার দৌড়াত্ম এগুলো সমাধান করতে কিছুটা সময় লাগবে, তবে আমরা বিশ্বাস করি সেটি আমরা সমাধান করতে পারবো।

করতোয়া : আবাসন ও হলের খাদ্যের সমস্যা কীভাবে সমাধান করতে চান?
মহিউদ্দীন খান : আবাসনের ব্যাপারে আমরা বার বার বলেছি, দুইটা বিকল্প সমাধান আছে। একটি হচ্ছে-হোস্টেল চালু করা অথবা শিক্ষার্থীদের জন্য শিক্ষাবৃত্তির ব্যবস্থা করা। আর হলের খাদ্যের যে সমস্যা, এটা দ্রুত সমাধান করে ফেলা সম্ভব। আমার মনে করি, ভুর্তুকি বাড়ানো এবং কোয়ালিটি কন্ট্রোলের টিম যদি থাকে, তারা যদি এগুলো ভিজিট করে তাহলে এই সমস্যা থাকবে না।

করতোয়া : আগামীতে জাতীয় রাজনীতিতে আসার ইচ্ছা আছে কী?
মহিউদ্দীন খান : জাতীয় রাজনীতির বিষয়ে কথা হচ্ছে যে, আমরা শিক্ষার্থীদের অধিকার আদায়ের জন্য এখানে কাজ করছি। জাতীয় রাজনীতিতে যাবো কী যাবো না, সেটি মুখ্য বিষয় নয়। মুখ্য বিষয় হচ্ছে, আমি এখন যে জায়গায় কাজ করছি সেটি কতটুকু সঠিকভাবে পালন করছি। জাতীয় রাজনীতির বিষয়টি সময় বলে দেবে।

করতোয়া : আপনাকে ধন্যবাদ।
মহিউদ্দীন খান : দৈনিক করতোয়াকেও ধন্যবাদ।

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

রাজশাহীতে দুলাভাইয়ের ছুরিকাঘাতে শ্যালক খুন

টাকা ফেরত না দিয়েই চাকরি থেকে অব্যাহতি নিলেন এক ক্বারি শিক্ষক, শর্ত না মেনে চাকরি

বগুড়ায় এবার দেড়শ’ কোটি টাকার আগাম শীতকালিন সবজি চাষের লক্ষ্য

রাকসু নির্বাচনে মোট প্রার্থী ৩০৬ জন : চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা প্রকাশ ব্যালট নম্বর পেল প্রার্থীরা

বগুড়ার সোনাতলায় গোসাইবাড়ী-হাট করমজা সড়কের বেহাল দশা

যেকোন ইস্যুতে ছাত্রশিবির শিক্ষার্থীদের স্বার্থকে প্রাধান্য দেবে : এজিএস মহিউদ্দীন খান