কক্সবাজারের বাঁকখালীতে উচ্ছেদে বাধা, ৩ মামলায় আসামি ১৬৫০

কক্সবাজারের বাঁকখালী নদীতে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদকে কেন্দ্র করে স্থানীয়দের বিক্ষোভ ও প্রতিরোধের ঘটনায় কক্সবাজার সদর মডেল থানায় আরও একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
আজ রোববার (৭ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) কক্সবাজার নদী বন্দরের পোর্ট অফিসার মোহাম্মদ আবদুল ওয়াকিল বাদী হয়ে এ মামলাটি দায়ের করেন।
মামলায় ১ নম্বর আসামি করা হয়েছে অ্যাডভোকেট মনির উদ্দিনকে। এছাড়াও উল্লেখযোগ্য আসামিদের মধ্যে রয়েছেন- উন্নয়ন ইন্টারন্যাশনালের মালিক ও সিআইপি আতিকুল ইসলাম (আতিক), জেলা আওয়ামী লীগ নেতা মাশেদুল হক রাশেদ, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মুজিবুর রহমান, জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান শাহীনুল হক মার্শাল, আওয়ামী লীগ নেতা অ্যাডভোকেট আব্দুল খালেক চেয়ারম্যানসহ মোট ২৯ জন।
গত শুক্রবার (৫ সেপ্টেম্বর) অভিযানের পঞ্চম দিনে সকাল ৯টার পর থেকেই শহরের ১, ২ ও ৩ নম্বর ওয়ার্ডের হাজারো বাসিন্দা গুমগাছতলা এলাকায় বিমানবন্দর সড়কের দিকে জড়ো হতে থাকেন। সকাল ১০টার দিকে উচ্ছেদ অভিযানে ব্যবহৃত একটি এস্কেভেটর ভাঙচুর করা হয় এবং সেনাবাহিনী, পুলিশ ও প্রশাসনের কর্মকর্তাদের ঘিরে ফেলেন বিক্ষোভকারীরা। একপর্যায়ে সকাল ১১টার দিকে প্রশাসনকে উচ্ছেদ কার্যক্রম বন্ধ করে পিছু হটতে বাধ্য হতে হয়। এ ঘটনার প্রেক্ষিতে আজ রোববার নতুন মামলাটি দায়ের করা হয়।
এর আগে, দ্বিতীয় দিনের উচ্ছেদ অভিযানে পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় ২৫০ জনকে আসামি করে মামলা করা হয়। তৃতীয় দিন পেশকারপাড়ায় স্থানীয়দের বাধার মুখে পড়ে অভিযান, এ ঘটনায় আরও ৪০০ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করা হয়।
আরও পড়ুনকক্সবাজার সদর মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইলিয়াস খান বলেন, মামলায় ২৯ জনের নাম উল্লেখ করে আরও ৮০০ থেকে ১,০০০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে।
গতকাল শনিবার (৬ সেপ্টেম্বর) ঢাকায় এক অনুষ্ঠানে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, যেকোনো মূল্যে বাঁকখালী নদীকে দখলমুক্ত করা হবে। যদি প্রথম তিন দিনের উচ্ছেদ কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করেন, দেখবেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নিয়েছিল। তারপরও কোথা থেকে বাধা এসেছে, তা খুঁজে বের করা আমাদের দায়িত্ব। নদীর দখল গত চার বছরে কোনো রাজনৈতিক দলের পৃষ্ঠপোষকতায় হয়েছে কি না, এবং এখন কেন বাধা দেওয়া হলো এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে হবে।
উল্লেখ্য, হাইকোর্টের আদেশের ভিত্তিতে গত ১ সেপ্টেম্বর থেকে কক্সবাজার শহরের বাঁকখালী নদীতে গড়ে ওঠা অবৈধ স্থাপনার উচ্ছেদ অভিযান শুরু হয়। এর আগে, ৩০ আগস্ট কক্সবাজার সফরে এসে নৌপরিবহন ও শ্রম মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন এক সমন্বয় সভায় হাইকোর্টের আদেশ অনুযায়ী বাঁকখালী নদীর অবৈধ দখলদারদের তালিকা তৈরি ও অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের নির্দেশনা দেন।
এর এক সপ্তাহ আগে, ২৪ আগস্ট হাইকোর্ট বাঁকখালী নদীর সীমানায় থাকা সব দখলদারের তালিকা তৈরি করে চার মাসের মধ্যে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ এবং দূষণ নিয়ন্ত্রণে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে সরকারকে নির্দেশ দেয়।
মন্তব্য করুন