দিনাজপুরের ঘোড়াঘাটে প্রকাশ্যে জুয়ার আসর উৎকন্ঠিত এলাকাবাসী!

ঘোড়াঘাট (দিনাজপুর) প্রতিনিধি : দিনাজপুরের ঘোড়াঘাটে করতোয়া নদীর চরে প্রকাশ্যে দিনেদুপুরে জমে উঠছে জুয়ার আসর। এমন পরিস্থিতিতে চুরি-ডাকাতিয় উৎকন্ঠায় দিন পার করছেন এলাকাবাসী। সরেজমিনে ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলঅর বুলাকিপুর ইউনিয়নের কুলানন্দপুর সীমানা ঘেঁষা করতোয়া নদীর চরে প্রতিদিন দুপুরের পর থেকে রাত পর্যন্ত বসছে এই জুয়ার আসর।
মূলহোতা হিসেবে নাম উঠে এসেছে রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার বড় আলমপুর ইউনিয়নের ধর্মদাশপুর উচাপাড়া গ্রামের কুখ্যাত জুয়ারু আতাউর রহমান আতোয়ারের নাম। তার বিরুদ্ধে রংপুর ও দিনাজপুর জেলার বিভিন্ন থানায় চুরি, মাদক, মারামারি এমনকি ধর্ষণচেষ্টার মতো একাধিক মামলা থাকা সত্ত্বেও রহস্যজনক কারণে সে ধরা-ছোঁয়ার বাইরে রয়েছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, আতাউর দীর্ঘদিন ধরে প্রভাবশালী ব্যক্তিদের সাথে নিয়ে কুলানন্দপুর এলাকায় মাদক ও জুয়ার আসর চালাচ্ছে। প্রতিদিন ইজিবাইক, মোটরসাইকেল ও মাইক্রোবাসযোগে বিভিন্ন এলাকা থেকে শতশত মানুষ এসে এই জুয়ার আড্ডায় অংশ নিচ্ছে। এতে করে যুবসমাজ মাদকের জালে জড়িয়ে পড়ছে, তৈরি হয়েছে এক বিপজ্জনক সামাজিক অবক্ষয়। শুধু জুয়ায় নয়, কুলানন্দপুর এলাকায় ইয়াবা ট্যাবলেটসহ বিভিন্ন মাদকদ্রব্যের অবাধ বিক্রি বেড়ে গেছে।
এছাড়াও নদীর বালু অবৈধভাবে উত্তোলন, জুয়ার টাকার ভাগাভাগি নিয়ে সংঘর্ষ এবং কখনও কখনও খুন-জখমের ঘটনাও ঘটছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় একাধিক বাসিন্দা জানান, জুয়া ও মাদকের কারণে আমাদের এলাকার কিশোর ও যুবকরা ধ্বংসের পথে যাচ্ছে। প্রশাসনের নীরবতা আমাদের হতাশ করেছে। এ যেন দেখার কেউ নেই!
আরও পড়ুনএলাকাবাসীর অভিযোগ, দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলা প্রশাসন অভিযান পরিচালনা করলে রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার সীমানায় গিয়ে আসর বসে। আবার পীরগঞ্জ উপজেলা প্রশাসন অভিযান পরিচালনা করলে ঘোড়াঘাট উপজেলার সীমানায় আসর বসে। এলাকাবাসীর প্রশ্ন এ যেন চোর-পুলিশ খেলা চলছে! তাদের দাবি, প্রশাসনের নির্লিপ্ততা দূর করে দ্রুত আতোয়ার ও তার সহযোগীদের দ্রুত আইনের আওতায় এনে জুয়া, মাদক এবং অন্যান্য অবৈধ কর্মকাণ্ড বন্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
এ বিষয়ে ঘোড়াঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজমুল হক বলেন, জুয়ারিরা মূলত অন্য জেলার সীমান্তবর্তী এলাকায় জুয়ার আসর বসায়। আমরা অভিযান চালাতে গেলে তারা পীরগঞ্জ এলাকায় পালিয়ে যায়। তবুও আমরা বিষয়টি নিয়ে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলে দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের উদ্যোগ নিবো।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার রফিকুল ইসলাম বলেন, নদী ও সীমান্ত এলাকা হওয়ার কারণে আমরা ঘটনাস্থলে পৌঁছানোর আগেই অপরাধের সাথে জড়িতরা পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়। আমি বিষয়গুলো নিয়ে জেলা আইনশৃঙ্খলা মিটিংয়ে আলোচনা করেছি। এ বিষয়ে খুব দ্রুত আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
মন্তব্য করুন