ভিডিও রবিবার, ২৭ জুলাই ২০২৫

জুয়েনা মিতুলের তৈরি ব্যাগ দেশের গণ্ডি পেরিয়ে রফতানি হচ্ছে স্পেনে

জুয়েনা মিতুলের তৈরি ব্যাগ দেশের গণ্ডি পেরিয়ে রফতানি হচ্ছে স্পেনে। ছবি : দৈনিক করতোয়া

রংপুর জেলা প্রতিনিধি : একেকটি ব্যাগ যেন একেকটি ইতিহাস ঐতিহ্যের বাহক। এমন দেশীয় ঐতিহ্য ও লোকজ সংস্কৃতি নিয়ে গড়ে উঠছে উদ্যোক্তা জুয়েনা ফেরদৌস মিতুলের শৈল্পিক আহ্লাদ। কারুশিল্প প্রতিষ্ঠানের ‘আহ্লাদ’ উদ্দেশ্যেই হচ্ছে পাটসহ বিভিন্ন পরিবেশ বান্ধব উপকরণ দিয়ে পণ্য তৈরী ও বাজারজাত করা। কারুশিল্প প্রতিষ্ঠান ‘আহ্লাদ’ এর পণ্য দেশের বাজারে বিক্রির পাশাপাশি বিদেশেও রপ্তানি হচ্ছে।

ইতিমধ্যে দেশের গণ্ডি পেরিয়ে আহ্লাদ এর ব্যাগ নেদারল্যান্ড, জাপান, আমেরিকা ও লন্ডনে ব্যাগ রপ্তানি করেছেন। এ বছর স্পেনে বড় পরিসরে ১০ হাজার ব্যাগ রপ্তানির চুক্তি  সম্পন্ন করেছেন। এর আগে জার্মান এ্যাম্বাসি, ওয়াল্ড ব্যাংক, দৃক এর ব্যাগ সরবারহ করেন তিনি। কারুশিল্প প্রতিষ্ঠান ‘আহ্লাদ’ এর পরিচালক জুয়েনা ফেরদৌস এর কর্মজীবন শুরু করেন চলচ্চিত্রের কস্টিউম অ্যাসিস্ট্যান্ট হিসেবে।

চলচ্চিত্র পরিচালক তারেক মাসুদের মুক্তির কথা, নারীর কথা, মাটির ময়না ও অন্তর্যাত্রায় তিনি কাজ করেছেন। তারিক মাসুদের সাথে দীর্ঘদিন কাজ করেছেন তিনি। দীর্ঘদিন যুক্ত ছিলেন ‘গাও’ নামের একটি প্রডাকশন হাউজে। ২০১৭ সালে সব ছেড়ে পারিবারিক কারনে রাজধানী ঢাকা ছেড়ে চলে আসেন জন্মভিটা রংপুরে। দুই সন্তান নিয়ে খানিকটা হোচঁট খান তিনি। এরপর ঘুরে দাঁড়ানোর প্রত্যাশায় সফটওয়ার কোম্পানীতে চাকুরী শুরু করেন।

করোনার সময়ে সেই চাকুরীও চলে যায় তার। আবারও ছন্দপতন জীবনে। হঠাৎ একদিন সুইডেন প্রবাসী বন্ধুর ফোন। তার কিছু পরিবেশবান্ধব ব্যাগ প্রয়োজন। পরে প্রবাসী বন্ধুর ব্যবসায়ি প্রয়োজনে পরিবেশ বান্ধব ব্যাগের উপাদান খুজতে গিয়ে পাট পণ্যের প্রতি আগ্রহী হয়ে ওঠেন তিনি। ধীরে ধীরে প্রশিক্ষণ নিয়ে ও বিভিন্ন কারখানা পরিদর্শন করে অভিজ্ঞতা বাড়ান ও প্রস্তুতি নেন তিনি। নিজের ডিজাইনে প্রথমে অন্য কারখানায় ব্যাগ তৈরীর কাজ শুরু করেন তিনি।

অন্য কারখানায় নিজের মনের মতো ও গুণগত মান নিয়ে সংশয় থাকায় একসময় প্রতিষ্ঠা করেন কারুশিল্প প্রতিষ্ঠান ‘আহ্লাদ’। প্রথমে একটি মেশিন দিয়ে একজন কর্মী নিয়ে পথচলা শুরু তার। রংপুর নগরীর কেরানীপাড়ায় অবস্থিত কারুশিল্প প্রতিষ্ঠান আহ্লাদ। প্রতিষ্ঠানটির পণ্য যেমন- বাহারি ব্যাগ, খেলনা, শোপিস, ওয়ালমেট, আল্পনা, পাপোশ, শিকা, দড়ি তৈরি হয়। তৈরি পণ্যগুলো দিয়ে তিনি দেশের ইতিহাস ও ঐতিহ্যকে তুলে ধরারা চেষ্টা করছেন।

আরও পড়ুন

প্রতিষ্ঠানটিতে কাজ করা কর্মীদের প্রায় ৯০ শতাংশই নারীকর্মী।  বর্তমানে  প্রতিষ্ঠানটিতে নিয়মিত ১২ থেকে ১৫ জন নারী কর্মরত। এছাড়াও রংপুর নগরীর ৪টি গ্রামে নারীদের প্রশিক্ষণ দিয়ে প্রশিক্ষিত করে গড়ে তোলা হয়েছে। সেখানে চুক্তিভিত্তিকভাবে কাজ করনে আরও ৮০ জন নারী। জুয়েনা ফেরদৌস মিতুল বলেন, একটা সৃষ্টি একটা জার্নি, এটাই আমাকে অনুপ্রাণিত করেছে।

তিনি আরো জানান, এই ব্যগ তৈরীর লক্ষ উদ্দেশ্য হচ্ছে আমরা যখন একটা ব্যাগ বহন করি, সেই ব্যাগের সাথে যেন আমরা আমাদের ইতিহাস ঐতিহ্য বহন করতে পারি। সেই চিন্তা থেকেই ব্যাগের ডিজাইন করা হয়। ডিজাইনগুলো বেশ সাড়াও ফেলছে ইতিমধ্যে।

এদিকে কারুশিল্প প্রতিষ্ঠান ‘আহ্লাদ’ এর জুয়েনা ফেরদৌস মিতুল ইতিমধ্যে কাজের স্বীকৃতি স্বরুপ পিকেএসএফ এর দুটি জাতীয় পুরুস্কার পেয়েছেন এবং রংপুর সদর উপজেলা ও জেলা পর্যায়ে হয়েছেন জয়ীতা।

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

দগ্ধদের দেখতে বার্ন ইনস্টিটিউটে প্রধান উপদেষ্টা

রংপুরের বদরগঞ্জে সেনাবাহিনীর অভিযানে বিপুল পরিমাণ দেশীয় মদসহ আটক ১

বগুড়ার দুপচাঁচিয়ায় শিশু ও নারী নির্যাতন মামলার আসামিসহ গ্রেফতার ২

মুজিববাদি সংবিধানকে গত জুলাইয়ে আমরা কবর দিয়েছি : বগুড়ায় জুলাই সমাবেশে জাহিদ আহসান

ফ্যাসিস্ট ও খুনীদের বিচার না হওয়া পর্যন্ত কোনো নির্বাচন হবে না : গোলাম রব্বানী

বগুড়া মহিলা ডিগ্রি কলেজে পরিচিতি সভায় সাবেক এমপি লালু