বগুড়ার ধুনটে মৃত ব্যক্তিকে জীবিত দেখিয়ে জাল দলিলে জমি দখলের অভিযোগ

ধুনট (বগুড়া) প্রতিনিধি : বগুড়ার ধুনট পৌর এলাকায় মৃত মোজাম্মেল হক ফকির নামে এক ব্যক্তিকে জীবিত দেখিয়ে ১৯ শতক জমির জাল দলিল তৈরি করে বেদখলের অভিযোগ উঠেছে তার শ্যালকের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় মৃত মোজাম্মের হকের সন্তানেরা আদালতে মামলা দায়ের করেছেন। মোজাম্মেল হক পৌর এলাকার পশ্চিম চান্দাপাড়া গ্রামের রবিয়া ফকিরের ছেলে।
মামলা ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ধুনট মৌজার পৌর এলাকায় পশ্চিম চান্দারপাড়া গ্রামে ১৯ শতক জমির ওপর প্রায় ৫০ বছর আগে বাড়ি নির্মাণ করেন মোজ্জাম্মেল হক। ওই বাড়িতে পরিবার-পরিজন নিয়ে মোজাম্মেল হক বসবাস করতেন। এ অবস্থায় ১৯৯২ সালের ৯ মার্চ তিনি মারা যান। তখন ওই পরিবারের দায়িত্ব নেন সাইফুল ইসলাম।
ওই সময় মৃত মোজাম্মেলের হতদরিদ্র ছয় সন্তান জীবিকার তাগিদে ঢাকায় অবস্থান করতেন। এ সুযোগে সাইফুল ইসলাম মৃত মোজাম্মেল হককে জীবিত দেখিয়ে ১৯৯৫ সালে দু’টি, ১৯৯৬ সালে দু’টি, ২০০২ সালে একটি ও ২০০৩ সালে আর একটিসহ মোট ছয়টি জাল দলিল নিবন্ধনের মাধ্যমে ১৯ শতক জমি নিজের নামে নেন।
এ অবস্থায় ২০১১ সালের ৭ নভেম্বর মোজাম্মেল হকের স্ত্রী হাজরা খাতুন মারা যান। এসময় মোজাম্মেল হকের সন্তানেরা ঢাকা থেকে গ্রামে ফিরে এসে মামা সাইফুল ইসলামকে বাড়ি ছেড়ে অন্যত্র যেতে বলেন। তখন সাইফুল ইসলাম দাবি করেন ওই ১৯ শতক জমি মোজাম্মেল হকের কাছ থেকে কিনে নিয়েছেন।
আরও পড়ুনমৃত মোজাম্মেল হকের সন্তানেরা জাল দলিলের বিষয়টি টের পেয়ে ২০২৩ সালের ১৫ জুন বগুড়ার ধুনট সহকারী জজ আদালতে মামলা দায়ের করেন। এদিকে জাল দলিল টিকে রাখার জন্য সাইফুল ইসলাম ২০২৪ সালের ৯ জুলাই ধুনট পৌরসভা থেকে মোজাম্মেল হকের নামে ভুয়া মৃত্যু সনদ তৈরি করে নেন। ওই সনদে মোজাম্মেল হককে ২০০৩ সালের ১৭ নভেম্বর মৃত দেখানো হয়েছে।
এ বিষয়ে সাইফুল ইসলাম বলেন, ভগ্নিপতি মৃত্যুর আগে আমার নামে জমি দলিল করে দিয়েছেন। তারপরও তার সন্তানেরা আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগে মামলা করেছেন। আমি আইনিভাবে বিষয়টি মোকাবেলা করছি। তবে পৌরসভা থেকে মোজাম্মেল হকের নামে তাকে মৃত্যু সনদটি পাইয়ে দিয়েছেন ফোরহাদ হোসেন নামে সাবেক এক কাউন্সিলর।
এ বিষয়ে মৃত মোজাম্মেল হকের মেয়ে রহিমা খাতুন বলেন, জাল দলিল তৈরি করে আমাদেরকে বাবার জমি থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। ওই জমি উদ্ধারের জন্য আদালতে মামলা দায়ের করেছি। কিন্তু এই মামলা তুলে নেওয়ার জন্য মামা চাপ সৃষ্টি করেছেন। জাল দলিল ও ভুয়া মৃত্যু সনদ তৈরিকারীদের শাস্তি দাবি করছি। ধুনট পৌর নির্বাহী কর্মকর্তা শাহীনুর আলম বলেন, মোজাম্মেল হকের নামে কোন মৃত্যু সনদ ইস্যু করা হয়নি। তবে পৌরসভার সই, সিল ব্যবহার করে কীভাবে তারা এই মৃত্যু সনদ তৈরি করেছেন তা জানা নেই।
মন্তব্য করুন