বিএনপি’র সঙ্গে আসন ভাগাভাগি নিয়ে যা জানালেন হাসনাত

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) বিরুদ্ধে সম্প্রতি অনলাইন টকশোতে অভিযোগ এনেছেন একটি রাজনৈতিক দলের প্রধান। যেখানে তিনি দাবি করেছেন, এনসিপি পর্দার অন্তরালে বিএনপি’র সঙ্গে আসন ভাগাভাগি করেছে।
আজ শনিবার (৩১ মে) সামাজিক যোগাযোগামধ্যম ফেসবুকে এ বিষয়ে দলের অবস্থান তুলে ধরেছেন এনসিপি’র দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ। এছাড়াও এনসিপি’র বিরুদ্ধে নির্বাচন পেছানোর অভিযোগকে ভিত্তিহীন বলে জানিয়েছেন তিনি। সেই সঙ্গে জানিয়েছেন, দল হিসেবে এনসিপি’র প্রধান লক্ষ্যের কথা। হাসনাত আবদুল্লাহ তার পোস্টে লিখেছেন, ‘সম্প্রতি আমরা লক্ষ করেছি, একটি দলের প্রধান এক অনলাইন টকশোতে মন্তব্য করেছেন, “এনসিপি কিন্তু পর্দার অন্তরালে বিএনপি’র সঙ্গে সিট নেগোসিয়েশন করেছে। আমরা হাইপোথেটিকালি ধরে নিলাম, পর্দার অন্তরালে সিট নেগোসিয়েশন হয়ে গেল, একটা আন্ডারস্ট্যাডিং হয়ে গেল, তাহলে দেখবেন, ডিসেম্বর না, সবাই সেপ্টেম্বরে নির্বাচনের ব্যাপারে রাজি হয়ে যাবে”।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমরা উল্লেখিত রাজনীতিবিদের প্রতি আমাদের সম্মান ও সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রেখে বলতে চাই, বিএনপি বা অন্য কোনো দলের সঙ্গে আসন ভাগাভাগির সমঝোতার দাবি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। কোনো দলের সঙ্গেই এনসিপি আসন ভাগাভাগিজনিত কোনো আলোচনায় যায়নি। কাজেই সম্মানিত ওই রাজনীতিবিদের বক্তব্য অসত্য ও বিভ্রান্তিকর। দল হিসেবে এনসিপি সারাদেশে সাংগঠনিক বিস্তৃতিকে প্রধান লক্ষ্য রেখে কাজ করে যাচ্ছে।’
এনসিপি’র বিরুদ্ধে নির্বাচন পেছানোর অভিযোগ নিয়ে হাসনাত লিখেছেন, ‘আমরা আরও লক্ষ করেছি, উল্লেখিত আলোচনায় এবং অন্যত্র এনসিপি সম্পর্কে ভিত্তিহীন এক ইম্প্রেশন তৈরির চেষ্টা হয় যে, দল গোছানোর স্বার্থে এনসিপি নির্বাচন পেছাতে চায়। আত্মপ্রকাশের পর থেকেই এনসিপি বিচার, সংস্কার ও নির্বাচনের রোডম্যাপ চেয়ে আসছে।’ নির্বাচনের ব্যাপারে এনসিপি’র অবস্থান তুলে ধরে হাসনাত বলেন, ‘এনসিপি বলে এসেছে, যেহেতু আওয়ামী লীগ আমলের ভুয়া নির্বাচনগুলোতে জনগণের ভোটাধিকার বাস্তবায়ন হয়নি; কাজেই আসন্ন নির্বাচন হতে হবে অবাধ, নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু নির্বাচন; যাতে জনগণ ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারে। একটি অবাধ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য প্রয়োজনীয় লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করতে হবে। প্রশাসনিক সংস্কারগুলো সম্পন্ন করতে হবে।’
আরও পড়ুনহাসনাত আরও বলেন, ‘এনসিপি মনে করে, প্রশাসনিক সংস্কারসহ অন্যান্য মৌলিক সংস্কার সম্পন্ন করে নির্ধারিত সময়েই নির্বাচন আয়োজন করা সম্ভব। তবে সংস্কার ব্যতীত আয়োজিত নির্বাচন একচেটিয়া ও একপেশে হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল।’ জুলাই চার্টারের ভিত্তিতে সংস্কার ও জুলাই ঘোষণাপত্র জারির আহ্বান জানিয়ে হাসনাত লিখেছেন, ‘জনগণের ভোটাধিকার আদায়ের লক্ষ্যে এ বছরের ডিসেম্বর থেকে আগামী বছরের জুনের মধ্যে জুলাই চার্টারের ভিত্তিতে সংস্কার কার্যক্রমের মধ্যে দিয়ে সুষ্ঠু গণপরিষদ ও আইনসভার নির্বাচন আয়োজন করতে হবে। পাশাপাশি বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার কর্তৃক প্রতিশ্রুত জুলাই ঘোষণাপত্র জারি করতে হবে।’
বিচার, সংস্কার ও নির্বাচনের রোডম্যাপ প্রশ্নে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে হাসনাত লিখেছেন, ‘যেনতেন ও প্রশ্নবিদ্ধ নির্বাচন যেন স্রেফ ক্ষমতায় যাওয়ার সিঁড়ি না হয়; বরং মৌলিক সংস্কারের মাধ্যমে অর্থবহ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি করে বাংলাদেশ রাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক উত্তরণ ঘটুক, এনসিপি সেই প্রত্যাশা করে। সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষকে বিভ্রান্তি এড়িয়ে বিচার, সংস্কার ও নির্বাচনের রোডম্যাপ প্রশ্নে এনসিপি ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানায়।’
মন্তব্য করুন