ভিডিও রবিবার, ২৫ মে ২০২৫

পাবনার বেড়ায় অনিয়মতান্ত্রিকভাবে বালু উত্তোলন ও বিক্রি করা হচ্ছে

পাবনার বেড়ায় অনিয়মতান্ত্রিকভাবে বালু উত্তোলন ও বিক্রি করা হচ্ছে। ছবি : দৈনিক করতোয়া

পাবনা প্রতিনিধি : পাবনার বেড়া উপজেলার হুরাসাগর নদীতে অনিয়মতান্ত্রিভাবে চলছে বালু উত্তোলন। সেইসঙ্গে নীতিমালা উপেক্ষা করে চলছে অবাধে বালু বিক্রি। স্থানীয় একটি প্রভাবশালী চক্র প্রকাশ্যে বালু উত্তোলন ও বিক্রি করলেও নিশ্চুপ প্রশাসন।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বাঙ্গালী-করতোয়া, ফুলজোড়-হুরাসাগর নদীর সিস্টেম ড্রেজিং/পুনঃখননসহ তীর সংরক্ষণ প্রকল্পের আওতায় চলছে নদী খননকাজ। নিয়ম অনুযায়ী নদী খনন করার কথা ২৬ ইঞ্চি ড্রেজার দিয়ে। কিন্তু ঠিকাদার কাজ করছেন ১৮ ইঞ্চি ড্রেজার দিয়ে। আবার খননকৃত বালু/মাটি ডাইকে রেখে জেলা পানিসম্পদ উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনা কমিটির সিদ্ধান্ত মোতাবেক নিলামের মাধ্যমে বিক্রি করার কথা। কিন্তু মানা হচ্ছে না সেই নীতিমালাও।

সম্প্রতি সরেজমিনে বেড়া উপজেলার বৃশালিখাঘাট, ডাকবাংলোঘাট, পায়নাঘাট ও মোহনগঞ্জঘাট এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, নিয়ম না মেনে অপেক্ষাকৃত ছোট ড্রেজার দিয়ে চলছে নদী খনন। খননকৃত বালু/মাটি স্তুপ করে রাখা হয়েছে নদীপাড়ে কৃষি জমিতে। আবার চুক্তি অনুযায়ী যে পরিমাণ নদী ড্রেজিং করে বালু তোলার কথা, তার চেয়ে কয়েকগুণ বেশি পরিমাণ বালু তোলা হচ্ছে। অভিযোগ রয়েছে, রাতেও চলছে অবাধে বালু তোলার কাজ।

অন্যদিকে আবার নিলাম ছাড়াই প্রকাশ্যে খননকৃত বালু/মাটি বিক্রি করছেন ঠিকাদার। সরেজমিনে তার সত্যতা পাওয়া যায়। নদী থেকে তোলা বালু বলগেটে তীরে নিয়ে আসার পর নদী থেকেই ট্রাকযোগে বিক্রি হচ্ছে বিভিন্ন এলাকায়। প্রতি ট্রাক বালু/মাটি বিক্রি হচ্ছে ১৪০০-১৬০০ টাকায়। বালু বহনকারী ট্রাকচালকরা জানান এ তথ্য।

এদিকে হুরাসাগর ছাড়া পদ্মা ও যমুনা নদীতেও প্রতিদিন অবৈধভাবে লাখ লাখ ঘনফুট বালু উত্তোলন করছে স্থানীয় কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তি। বর্তমানে বিএনপির কিছু নেতা এই অপকর্মের সাথে জড়িত। অতিরিক্ত বালু তোলায় নদীর তলদেশ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। ভাঙন দেখা দিয়েছে নদীর বিভিন্ন এলাকায়। ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে কৃষি জমি। ইতোমধ্যে নদীর পাড়ে বেশকিছু গ্রাম বিলীন হয়ে গেছে। অনেক গ্রাম হুমকির মুখে। ভাঙন আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে নদীপাড়ের বাসিন্দারা।

আরও পড়ুন

বেড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মোরশেদুল ইসলাম বলেন, বেড়া উপজেলায় কোন বালুমহাল নেই। তবে হুরাসাগর নদীতে সেনাবাহিনী কর্তৃক ড্রেজিং প্রকল্প চলমান রয়েছে এবং বিআইডব্লিওটিএ কর্তৃক নৌ-পথ সচল রাখার জন্য যমুনা নদীর বিভিন্ন জায়গায় ড্রেজিং করে।

ড্রেজড ম্যাটেরিয়াল নির্ধারিত পদ্ধতিতে নিষ্পত্তি হচ্ছে। এছাড়া কোথাও মাটি কাটা ও অবৈধ বালু উত্তোলনের তথ্য পেলে নৌপুলিশ- থানা পুলিশ, সেনাবাহিনীর সহযোগিতায় মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হচ্ছে এবং নিয়মিত মামলা দায়ের হচ্ছে। অবৈধ বালু উত্তোলনের তথ্য পেলেই অভিযান চালিয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে এবং  অব্যাহত থাকবে।

বেড়া মডেল থানার ওসি অলিউর রহমান বলেন, এখানে পুলিশের কিছু করণীয় নেই। আমাদের উপরে প্রশাসন রয়েছে। তাদের কাজ। তারা যখন অভিযান চালাবেন পুলিশের সহযোগিতা চাইলে তখন ফোর্স দেই। বেড়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী ও জেলা পানি সম্পদ উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য সচিব জাহিদুল ইসলাম বলেন, এই কাজের সাথে পাবনা পানি উন্নয়ন বোর্ড জড়িত না। বগুড়া ও সিরাজগঞ্জ জেলার পানি উন্নয়ন বোর্ড জড়িত।

সিরাজগঞ্জ জেলার পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোখলেছুর রহমান বলেন, এটা আমরা নিয়ন্ত্রণ করি না। আমরা কিছু বলতে পারবো না। এ বিষয়ে বিটিসি এমএলবি জেভি এর নির্বাহী পরিচালক (অপারেশন) অবসরপ্রাপ্ত মেজর শেখ আশরাফুল বারী বলেন, বাংলা ড্রেজার দিয়ে যারা কেটে বিক্রি করছে তাদের সাথে আমাদের কোন সংশ্লিষ্টটা নেই, আমরা নিয়ম মেনেই কাটছি। যারা এভাবে কেটে বিক্রি করছে তারা অবৈধ।

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

রাজশাহীতে মাদক মামলায় বাবা-ছেলের যাবজ্জীবন 

দিনাজপুরের হিলিতে কোরবানির আগে ক্ষতির মুখে খামারিরা

চাকরির ক্ষেত্রে লটারি নেই শিক্ষার্থী ভর্তিতে লটারি থাকবে কেন : সাবেক এমপি আকবর আলী

হাতুড়ি পেটানোর ঠুকঠাক শব্দে মুখর নওগাঁর কামার পল্লী

বৃষ্টি উপেক্ষা করে হাজার হাজার মানুষ বগুড়ার সমাবেশে

পাবনার চাটমোহরে নদী থেকে নিখোঁজ যুবকের হাত-পা বাঁধা লাশ উদ্ধার