স্টারলিংক নিয়ে যত কৌতূহল

শ্রীলঙ্কার পর দক্ষিণ এশিয়ার দ্বিতীয় দেশ হিসেবে মার্কিন ধনকুবের ইলন মাস্কের স্পেসএক্স পরিচালিত স্যাটেলাইটভিত্তিক ইন্টারনেট পরিষেবা স্টারলিংক বাংলাদেশে আনুষ্ঠানিকভাবে কার্যক্রম শুরু করেছে। আজ মঙ্গলবার (২০ মে) থেকে শুরু হওয়া এ সেবার মাধ্যমে দেশের সব জায়গায় উচ্চগতির ইন্টারনেট সংযোগ পাওয়া যাবে। এরই মধ্যে স্টারলিংকের ওয়েবসাইটে বাংলাদেশে ব্যবহারের জন্য দুটি প্যাকেজের তথ্য দেওয়া হয়েছে।
অথচ মাত্র ৯০ দিন আগেও বাংলাদেশে কোনো এনজিএসও (নন-জিওস্টেশনারি অরবিট) লাইসেন্স ছিল না। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের রেকর্ড সংখ্যক দ্রুততার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ একটা এনজিএসও গাইডলাইন করেছে। যার অনুকূলে একটি স্যাটেলাইট ইন্টারনেট অপারেটর আবেদন করা হয়। আবেদনটিও যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে চার মাসের (ফেব্রুয়ারি-মে) মধ্যে বাণিজ্যিকভাবে যাত্রা শুরু করলো।
বাংলাদেশের ইতিহাসে এ ধরনের টেলিকমিউনিকেশন লাইসেন্সের রোল আউটের ঘটনা প্রথম ও অনন্য বলে বর্ণনা করেছেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব। তিনি বলেছেন, বাংলাদেশের যে ইন্টারনেট, এটি পৃথিবীর মধ্যে অন্যতম নিকৃষ্ট। এ ইন্টারনেটের একটি বিকল্প কোয়ালিটি তৈরির দায় থেকে স্যাটেলাইট ইন্টারনেট স্টারলিংককে সুযোগ দেওয়া হয়েছে। প্রচলিত বাংলাদেশের স্যাটেলাইট বা ইন্টারনেটের চেয়ে স্টারলিংকের স্যাটেলাইট ইন্টারনেট শতগুণ বেশি গতিসম্পন্ন।
শুরুতে স্টারলিংক দুটি প্যাকেজ দিয়ে শুরু করছে। প্রথমটি স্টারলিংক ‘রেসিডেনশিয়াল’। এর জন্য প্রতি মাসে খরচ করতে হবে ছয় হাজার টাকা। আর দ্বিতীয়টি ‘রেসিডেনশিয়াল লাইট’। এর জন্য মাসে খরচ হবে চার হাজার ২০০ টাকা। এছাড়া সেটআপ যন্ত্রপাতির জন্য এককালীন খরচ হবে ৪৭ হাজার টাকা। এর মাধ্যমে শহর এবং প্রত্যন্ত অঞ্চলসহ সব জায়গায় একই গতির ইন্টারনেট সেবা পাওয়া যাবে।
স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব ক্ষুণ্ন হওয়া কিংবা জাতীয় নিরাপত্তা বিঘ্নিত হওয়ার কোনো ঝুঁকি আছে কি না- জনমনে এরই মধ্যে এ ধরনের নানান প্রশ্ন উঁকি দিচ্ছে। তবে অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, স্টারলিংকের মাধ্যমে জাতীয় নিরাপত্তা বিঘ্নিত হওয়ার কোনো সুযোগ নেই।
তড়িঘড়ি করে বাংলাদেশে স্টারলিংকের স্যাটেলাইট ইন্টারনেট সেবা কেন শুরু করা হলো, এটির গ্রাহক কারা হবেন, এর ফলে স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব ক্ষুণ্ন হওয়া কিংবা জাতীয় নিরাপত্তা বিঘ্নিত হওয়ার কোনো ঝুঁকি আছে কি না- জনমনে এরই মধ্যে এ ধরনের নানান প্রশ্ন উঁকি দিচ্ছে। তবে অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, স্টারলিংকের মাধ্যমে জাতীয় নিরাপত্তা বিঘ্নিত হওয়ার কোনো সুযোগ নেই।
সরকারের ভাষ্য, স্টারলিংকের একটি লোকাল গেটওয়ে থাকবে। এর কমার্শিয়াল টেস্ট রান ও গ্রাউন্ড টেস্ট চলমান। এসব কার্যক্রম সম্পন্ন করার জন্য স্টারলিংক কোম্পানিকে ৯০ দিনের সময় দেওয়া হয়েছে, যার দশ দিন অতিবাহিত হয়েছে। এ সময় শেষ হলেই তাদের লোকাল গেটওয়ে বাধ্যতামূলকভাবে ব্যবহার করতে হবে। এর ফলে জাতীয় নিরাপত্তা বিঘ্নিত হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। পাশাপাশি ডিভাইসের ক্ষেত্রে রেট, ভ্যাট, ট্যাক্স আছে, তাই ডিভাইসের বিষয়ে এনওসি নেবে।
ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব আজ মঙ্গলবার (২০ মে) ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ বিষয়গুলো নিয়েও কথা বলেছেন। তার কথায়, মূলত চারটি কারণে তারা স্টারলিংককে দ্রুততার সঙ্গে ব্যবসা পরিচালনার জন্য লাইসেন্সসহ আনুষাঙ্গিক সুযোগ-সুবিধা দিয়েছেন।
কী সেই চার কারণ
প্রথমত, গতবছর অর্থাৎ ২০২৪ সালের জুলাইয়ে গণঅভ্যুত্থানকালীন ইন্টারনেট বন্ধ হওয়ায় গ্লোবাল কমিউনিটিতে বিনিয়োগ সক্ষমতার যে চিত্র ভয়াবহ রকমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল, সেজন্য আমরা হাইস্পিড এবং হাই কোয়ালিটির ইন্টারনেটের টেকসই বিকল্প খুঁজেছিলাম। সেই বিকল্প খুঁজতে গিয়েই স্টারলিংক নিয়ে আসা হয়েছে।
দ্বিতীয়ত, আমরা বিশ্বকে দেখাতে চেয়েছি যে বাংলাদেশ বিনিয়োগবান্ধব। স্টারলিংক বাংলাদেশে এলে আরও বহু কোম্পানি আসবে। এরই মধ্যে আমরা তা দেখেছি। এনজিএসও অপারেটর হিসেবে কমপক্ষে চারটি কোম্পানি বাংলাদেশে আসার জন্য প্রস্তাব করেছে।
তৃতীয়ত, বাংলাদেশের যে ইন্টারনেট, এটি পৃথিবীর মধ্যে অন্যতম নিকৃষ্ট। এই ইন্টারনেটের একটি বিকল্প কোয়ালিটি তৈরির দায় আমাদের ছিল।
চতুর্থত, বাংলাদেশের যে ফ্রিল্যান্সার তারা প্রতিনিয়ত ফরেন কোম্পানির সঙ্গে মিটিং করেন, মিটিংয়ের মাঝখানে তাদের ইন্টারনেট কানেকশন জুমটা বন্ধ হয়ে যায়। তারা ফরেন কাস্টমারের বেঁধে দেওয়া সময় মেনে চলতে পারেন না। এটি (স্টারলিংক) বাংলাদেশের ফ্রিল্যান্সার কমিউনিটির জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
বাংলাদেশে স্টারলিংক পরিষেবা নিয়ে জনমনে যেসব প্রশ্ন ও সন্দেহ রয়েছে, সেসব বিষয়ে সংবাদ সম্মেলনে সুনির্দিষ্ট করে কথা বলেছেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব।
কতটা উদ্যোক্তাবান্ধব হবে
স্টারলিংকের কোনো ডাটা লিমিট রয়েছে কি না—এ প্রশ্নে ‘না’ বোধক উত্তর দেন বিশেষ সহকারী। স্টারলিংক আসলে আমরা কাদের জন্য করছি, এর সেবাগ্রহীতা কারা—জানতে চাইলে ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, মূলত বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গায় এখনো ফাইবার পৌঁছায়নি। মাত্র ৩০ শতাংশ মোবাইল টাওয়ারে ফাইবার রয়েছে। এ অবস্থায় মোবাইল কোম্পানিগুলোর যে সেবাদান সেটি মাইক্রোওয়েভের মাধ্যমে হয়, যেটি লো ক্যাপাসিটি। বাংলাদেশে এখনো হাজার হাজার মোবাইল টাওয়ার আছে, যারা শুধু ৩০০ এমবিপিএস-এর ব্যান্ডউইথ দিয়ে একটা মোবাইল টাওয়ার সচল রাখে ডেটা ইন্টারনেটের জন্য এবং সেই ডেটা ইন্টারনেট বিক্রি করা হয় কয়েক হাজার গ্রাহকের কাছে।
‘স্টারলিংকের ক্ষেত্রে মাত্র একটা সেটআপ বক্স দিয়ে এ সমস্যার সমাধান হবে। অর্থাৎ, গ্রামের একজন উদ্যোক্তা স্টারলিংকের একটি সেটআপ বক্স কিনে (দাম ৪৭ হাজার টাকা) নিরবচ্ছিন্ন এবং লো লেটেন্সি অর্থাৎ ডাউনলোড করতে তার অনেক কম সময় খরচ হবে। লো লেটেন্সি এবং উচ্চগতির ইন্টারনেটটা ব্যবহার করতে পারবেন। এক্ষেত্রে লক্ষণীয় যে, সংসদ ভবনে কিংবা উপদেষ্টার বাসভবন বা তার কার্যালয়ে যে স্পিডে ইন্টারনেট ব্যবহার করা হয়, একই স্পিডে দেশের প্রত্যন্ত ও দূরবর্তী অঞ্চল যেমন- পার্বত্য অঞ্চল, হাওরাঞ্চল কিংবা বনাঞ্চলে যেকোনো গ্রাহক উচ্চগতির ইন্টারনেট ব্যবহার করতে পারবেন। এটি ডিজিটাল বৈষম্য রোধে একটি কার্যকর পদক্ষেপ।’
আরও পড়ুনস্টারলিংক কতটা উদ্যোক্তাবান্ধব? উদ্যোক্তারা ইন্টারনেট সেবা প্রদানে কীভাবে স্টারলিংক ব্যবহার করতে পারবেন? এসব প্রশ্নে বিশেষ সহকারী বলেন, আমরা এনজিএসও-র বিধিবিধান এমনভাবে করেছি যেন স্টারলিংক বা সমজাতীয় ইন্টারনেট সুবিধা উদ্যোক্তাবান্ধব হয়। অর্থাৎ, একজন উদ্যোক্তা কিংবা একাধিক উদ্যোক্তা নিজেরা যদি ৪৭ হাজার টাকার একটা তহবিল গঠন করে, এ তহবিলের মাধ্যমে তারা ইন্টারনেট সেটআপ বক্স কিনবেন। যার মাধ্যমে তারা তাদের আশপাশের দোকানে এই ইন্টারনেটের বিক্রি বা সেবা দিতে পারবেন।
‘ওয়াইফাই রেঞ্জ আনুমানিক ২০ থেকে সর্বোচ্চ ৫০ মিটার। এই ৫০ মিটার জোনের মধ্যে বাংলাদেশের গ্রামের গ্রোথসেন্টারগুলোতে অনেক দোকানপাট থাকে। সেখানে সহজেই ইন্টারনেট সেবা এক ব্যক্তি কিনে বা একাধিক ব্যক্তি সমিতি আকারে কিনে মাল্টিপল ব্যবহার সম্ভব। আইনে কোনো প্রতিবন্ধকতা তৈরি করা হয়নি। এছাড়া শহরের বাসভবনে ওয়াইফাই শেয়ারিং করে ইন্টারনেট ব্যবহার সম্ভব। স্টারলিংকে যেহেতু বিল্টইন রাউটার আছে ফলে রাউটার থেকে রাউটারে আইএসপি সেটআপেও ব্যবহার সম্ভব।’
‘পাশাপাশি আমরা চেষ্টা করবো আমাদের মাইক্রোক্রেডিট অথোরিটি কিংবা ফাইন্যান্সিয়াল অর্গানাইজেশন কিংবা ব্যাংকের জন্য, যেন এই স্টারলিংক উদ্যোক্তাদের অর্থের সংস্থান হয়। যারা নাগরিক সেবার উদ্যোক্তা হবেন, তাদের জন্য স্টারলিংক কিভাবে সহজে নেওয়া যায়, সেজন্যও আমরা ফাইন্যান্সিয়াল প্যাকেজ করার পরিকল্পনা করছি।’
ব্যবহারে খরচ কেমন হবে
ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, আমরা বলছি যে, স্টারলিংকের দাম কিছুটা বেশি। মাসিক খরচ ছয় হাজার এবং চার হাজার নির্ধারণ করা হয়েছে। আমরা এটি স্টারলিংকের সঙ্গে কিছুটা নেগোশিয়েশন করে কমিয়েছি। কিন্তু যেহেতু এটি শেয়ার্ড হবে এবং শেযার করা যাবে, শেযার করার ওপর যেহেতু আমরা বিধিনিষেধ রাখিনি এবং বিক্রির ওপরও বিধিনিষেধ রাখিনি, ফলে এই ইন্টারনেট দিয়ে সফল ব্যবসা মডেল বা এসএমই তৈরি করা সম্ভব।
একজন উদ্যোক্তা কিংবা একাধিক উদ্যোক্তা নিজেরা যদি ৪৭ হাজার টাকার একটা তহবিল গঠন করে, এ তহবিলের মাধ্যমে তারা ইন্টারনেট সেটআপ বক্স কিনবেন। যার মাধ্যমে তারা তাদের আশপাশের দোকানে এই ইন্টারনেটের বিক্রি বা সেবা দিতে পারবেন
‘কেউ যদি স্টারলিংক ব্যবহার করে (মোবিলিটি এবং রোমিং সুবিধা ছাড়া) সেটাকে ফিড করে ইন্টারনেট ব্যবহার করেন সেখানেও আমরা কোনো বাধা রাখিনি। অর্থাৎ, বাংলাদেশের এসএমই কিংবা উদ্যোক্তা বিকাশে সব ধরনের ফ্যাসিলিটি আইন, আইনগত ফ্যাসিলিটেশন রাখা হয়েছে। এর বাইরে আমরা সবাই ড. মুহম্মদ ইউনূসের ফোন লেডি কনসেপ্টে বড় হয়েছি।’
‘স্টারলিংকের মাধ্যমে আমাদের মাইক্রোক্রেডিট কিংবা ইএমআই অথবা যেকোনো এমএফআই/এমআরএ পদ্ধতিতে অন্য কোম্পানিগুলো ফাইন্যান্সিয়াল অর্গানাইজেশনগুলো চাইলে ওয়াইফাই লেডি হিসেবে নতুন একটা উদ্যোক্তার ধারা সৃষ্টি করতে পারে। তারা চাইলে শুধু গ্রামীণ নারীদের একটি বিশেষ ঋণ দিতে পারেন। যে ঋণের মাধ্যমে তারা স্টারলিংক নিয়ে ইন্টারনেট সেবা বিক্রি করতে পারেন। সেক্ষেত্রে ভবন ছাড়াও ইনফরমাল কো-ওয়েবিং বিজনেসের মাধ্যমে এ প্রক্রিয়ায় যুক্ত হতে পারবেন।’
সার্বভৌমত্ব বিঘ্নিত হবে কি
স্টারলিংকের মাধ্যমে জাতীয় সার্বভৌমত্ব বিঘ্নিত হবে কি না, জানতে চাইলে বিশেষ সহকারী বলেন, স্টারলিংকের একটি লোকাল গেটওয়ে থাকবে। এর কমার্শিয়াল টেস্ট রান ও গ্রাউন্ড টেস্ট চলমান। এসব কার্যক্রম সম্পন্ন করার জন্য স্টারলিংক কোম্পানিকে ৯০ দিনের সময় দেওয়া হয়েছে, যার দশ দিন গত হয়েছে। ৯০ দিন শেষ হলেই তাদের লোকাল গেটওয়ে বাধ্যতামূলক হিসেবে ব্যবহার করতে হবে। এর ফলে জাতীয় নিরাপত্তা বিঘ্নিত হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। পাশাপাশি ডিভাইসের ক্ষেত্রে রেট, ভ্যাট ও ট্যাক্স আছে। তাই ডিভাইসের বিষয়ে এনওসি নেবে।
চীন-যুক্তরাষ্ট্রের চলমান বাণিজ্যযুদ্ধের প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশে মার্কিন কোম্পানি স্টারলিংকের ব্যবহারে অনুমতি দেওয়ায় কোনো প্রভাব পড়বে কি না—এ প্রশ্নে ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, বাংলাদেশ যোগাযোগ প্রযুক্তির বিচারে বিশ্বের সর্বাধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার নিশ্চিত করতে চায়। বাংলাদেশে ফোরজি বা ফাইভজি টেকনোলজিতে সর্বাধুনিক নেটওয়ার্ক ও ব্যাকবোন স্থাপনে চীনা প্রযুক্তিই ব্যবহার করা হচ্ছে। এছাড়া বিটিসিএল, টেলিটক সংস্থার অধীন চীনা অর্থায়নে ও প্রকৌশলীদের মাধ্যমে বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়ন চলমান রয়েছে।
‘বাংলাদেশের মোবাইল কোম্পানির ভেন্ডর হিসেবেও অনেক চীনা কোম্পানি কাজ করছেন। আমরা চাই, চীনা কিংবা মার্কিন ব্যবসায়ীরা যেন স্বাধীনভাবে এখানে জাতীয় স্বার্থ রক্ষা করে উন্মুক্তভাবে ব্যবসা করতে পারেন। চীনা কোম্পানি জি ডব্লিউ যদি আসতে চায় তারাও একই সুবিধা পাবে। অন্য দেশগুলোর কিছু কোম্পানি যেমন- অ্যামাজন টুইটার, টেলি সেট, স্যাটেলয়েট, ওয়ান ওয়েব (ইউকে) আগ্রহী। তারা এখানে ব্যবসা করলে আমরা তাদেরও একই রকম নীতি সুবিধা দিতে প্রস্তুত।’
আবাসিক গ্রাহকদের জন্য স্টারলিংকের সেবার দাম সহনীয় কি না—এ প্রশ্নে তিনি বলেন, একটি ভবনে ইন্টারনেট ব্যবহার করে এমন অনেকগুলো অ্যাপার্টমেন্ট, কন্ডোমিনিয়াম ও ফ্ল্যাট থাকে। বেশ কয়েকটি অ্যাপার্টমেন্ট যারা পাশাপাশি থাকে তারা মিলে বা কয়েকটি একতলা-দোতলা মিলে এ সার্ভিস ব্যবহার করতে পারেন। তবে এক্ষেত্রে রেঞ্জ সর্বোচ্চ ২০ মিটার করতে পারবেন।
‘সব মিলিয়ে উদ্যোক্তা এবং কনজ্যুমারদের জন্য এককালীন সেটআপ খরচটা বেশি হলেও আমার মনে হয় এটি যখন ডিস্ট্রিবিউটেড হয়ে যাবে, অর্থাৎ সমবায় ভিত্তিতে হবে, তখন এই বাড়তি ব্যয় আর খুব বেশি অনুভূত হবে না।’
শ্রীলঙ্কা ও থাইল্যান্ডের চেয়েও দাম কম
রিজিওনাল প্রাইস বিবেচনায় স্টারলিংকের ব্যয় কী বাংলাদেশে বেশি—জানতে চাইলে ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, রিজিওনাল প্রাইস নিয়ে আমরা যে অ্যানালাইসিস করেছি সেখানে দেখেছি, রিজিওনাল প্রাইসের তুলনায় বাংলাদেশে স্টারলিংকের দাম সবচেয়ে কম। এমনকি শ্রীলঙ্কা ও থাইল্যান্ডের চেয়েও কম। আমরা এভাবে করেছি, যেন সাধারণ মানুষের নাগালের মধ্যে থাকে। যেহেতু বিষয়টি শেয়ার্ড হবে, একক ব্যক্তি যিনি কিনবেন, যিনি ব্যয় নির্বাহ করবেন তার জন্য দাম বেশি হলেও শেয়ারিংয়ের কোনো সীমা না থাকায় একাধিক শেয়ারিংয়ে দাম কমে আসবে।
স্টারলিংক ব্যবহারে সরকারি কোম্পানির স্বার্থ কীভাবে রাখা হচ্ছে—এ প্রশ্নে তিনি বলেন, দুইভাবে সরকারি কোম্পানির স্বার্থ সংরক্ষণ করা হচ্ছে। প্রথমত, সাবমেরিন ক্যাবল কোম্পানির মাধ্যমে এবং দ্বিতীয়ত, স্যাটেলাইট কোম্পানির মাধ্যমে।
মন্তব্য করুন