ভিডিও মঙ্গলবার, ০৬ মে ২০২৫

জিআই পণ্যের তালিকায় দিনাজপুরের ‘বেদানা লিচু’

জিআই পণ্যের তালিকায় দিনাজপুরের ‘বেদানা লিচু’

দিনাজপুর জেলা প্রতিনিধি : আর ক’দিন পরই বাজারে আসবে লিচু। বাজারে আসার প্রাক্কালেই দিনাজপুরের বিখ্যাত ‘বেদানা লিচু’ ভৌগলিক নির্দেশক (জিআই) পণ্যের তালিকায় স্থান পাওয়ায় উচ্ছ্বসিত দিনাজপুরের লিচু চাষি ও আগাম বাগান কেনা লিচু ব্যবসায়ীরা। লিচু সংশ্লিষ্ঠরাও বলছেন, জিআই স্বীকৃতি পাওয়ায় দিনাজপুরের এই সুস্বাদু লিচু আন্তর্জাতিক বাজারে রপ্তানিযোগ্য পণ্য হিসেবে নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করেছে।

লিচুর রাজধানী হিসেবে খ্যাত দিনাজপুরে উৎপন্ন হয় বোম্বাই, মাদ্রাজি, বেদানা, মোজাফ্ফরপুরী, চায়না-থ্রি, চায়না-টু, কাঁঠালী, হাড়িয়াসহ প্রায় ১০ থেকে ১২টি জাতের লিচু। এসব লিচুর মধ্যে স্বাদে, গন্ধে, রসে ও মিষ্টতায় দিনাজপুরের ‘বেদানা লিচু’ অতুলনীয়।

দিনাজপুর হর্টিকালচার সেন্টারের উপ-পরিচালক ড. এজামুল হক জানান, দেশে চাষ হওয়া লিচুর সব জাতের মধ্যে দিনাজপুরের বেদানা জাতের লিচু গুণে, মানে ও বৈশিষ্ট্যে সেরা। দিনাজপুরের বিভিন্ন উপজেলায় কমবেশি এ লিচুর চাষ হলেও দিনাজপুর সদর উপজেলার মাশিমপুর, শিকদারগঞ্জ, মহব্বতপুর, উলিপুর এবং বিরল উপজেলার মাধববাটী, রবিপুর গ্রামে উৎকৃষ্ট মানের বেদানা লিচু পাওয়া যায়।

যে কোনো লিচুর চেয়ে বেদানা লিচুর মিষ্টতা ও শাঁসের পরিমাণ সবচেয়ে বেশি। অন্যান্য জাতের লিচুর শাঁসের পরিমাণ যেখানে ১৯ শতাংশ, সেখানে বেদানা লিচুর শাঁসের পরিমাণ ২৮ শতাংশ। আকারে গোলাকার, এ লিচুর রঙ গোলাপি, এর বীজ ছোট, রসালো, খোসা পাতলা। এছাড়াও অন্য জাতের লিচুর খোসা খুললে লিচুর রস মাটিতে বা শরীরে গড়িয়ে পড়ে। কিন্তু বেদানা লিচুর খোসা ছাড়ানোর পর রস মাটিতে বা শরীরে পড়ে না। অনন্য এসব বৈশিষ্ট্যের কারণে বেদানা লিচুর জনপ্রিয়তা ও চাহিদা দেশের সর্বত্র।

আরও পড়ুন

দিনাজপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক মোস্তাফিজুর রহমান জানান, দিনাজপুরের লিচুর ইতিহাস বেশ পুরোনো ও সমৃদ্ধ। বলা হয়ে থাকে বৃটিশ শাসনামলে দিনাজপুরে শুরু হয়েছিলো লিচুর চাষ। পরবর্তীতে ১৯ শতকের শেষে এবং ২০ শতকের শুরুতে দিনাজপুরে বেদানা লিচুর চাষ শুরু হয়। তিনি বলেন, দিনাজপুর জেলায় মোট ৫ হাজার ৪৮৪ হেক্টর জমিতে লিচুর চাষ হচ্ছে। এর মধ্যে বেদানা জাতের লিচু চাষ হচ্ছে ৩০৮ হেক্টর জমিতে। সুস্বাদু এই লিচুর ফলন প্রতি হেক্টরে ৫ দশমিক ৬৯ টন। সেই হিসেবে দিনাজপুরে বেদানা লিচু উৎপন্ন হয় ১ হাজার ৭৫৫ টন।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের হিসাবমতে এবং লিচু চাষিদের সাথে আলাপ করে জানা যায়, আর ১৫ থেকে ২০ দিন পরই উঠবে লিচু। গত শনিবার  দিনাজপুর সদর উপজেলার মাশিমপুর ও বিরল উপজেলার মাধববাটী গ্রামে ঘুরে দেখা যায়, গাছে গাছে ঝুলছে সবুজ রঙের থোকা থোকা লিচু।

যে মুহুর্তে বেদানা লিচু গাছে গাছে থোকা থোকা ঝুলছে সবুজ রঙ নিয়ে। আর ক’দিন পর এই সবুজ রঙ পরিবর্তন করে গোলাপী রঙ ধারণ করবে। ঠিক সেই মুহুর্তে ভৌগলিক নির্দেশক (জিআই) পণ্যের তালিকায় স্থান পেয়েছে দিনাজপুরের বিখ্যাত এই বেদানা লিচু। বাজারে আসার প্রাক্কালেই জিআই সনদ পাওয়ায় উচ্ছ্বসিত দিনাজপুরের লিচু চাষি ও আগাম বাগান কেনা লিচু ব্যবসায়ীরা।

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

জমির বিরোধের জেরে প্রতিপক্ষের লাঠির আঘাতে স্কুল শিক্ষক নিহত

গাইবান্ধার সাঘাটায় অজ্ঞান পার্টির খপ্পরে প্রাণ গেল অটোচালকের

চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌরসভার সাবেক মেয়র ও আওয়ামী লীগ নেতা মোখলেসুর রহমান গ্রেফতার

কাঁচা আম ও শর্ষেবাটায় মুরগির কষা

কৃষিবিদদের অধিকার রক্ষার দাবিতে ঢাকা-ময়মনসিংহ রেললাইন অবরোধ 

গাইবান্ধার সাদুল্লাপুরে অপহৃত চিকিৎসক তিনদিন পর উদ্ধার