শনিবার অথবা রোববার গণবিজ্ঞপ্তি জারি
সিটি কর্পোরেশন হওয়ার পথে বগুড়া

স্টাফ রিপোর্টার : সিটি কর্পোরেশনের পথে বগুড়া। আর কিছু পথ পেরুলেই বগুড়া সিটি কর্পোরেশন হচ্ছে। গতকাল বৃহস্পতিবার এ সংক্রান্ত একটি পত্র বগুড়া জেলা প্রশাসকের কাছে এসেছে। ওই পত্রে বলা হয়েছে গত ২৪ ফেব্রুয়ারি বগুড়া জেলা প্রশাসকের কার্যালয় হতে প্রাপ্ত পত্রের প্রেক্ষিতে বগুড়া পৌর এলাকায় সিটি কর্পোরেশন প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে স্থানীয় সরকার (সিটি কর্পোরেশন) বিধিমালা, ২০১০ এর বিধি-৫ অনুযায়ী গণবিজ্ঞপ্তি জারি এবং এলাকার অধিবাসীদের মতামত/আপত্তি নিস্পত্তিপূর্বক চূড়ান্ত প্রতিবেদন দিতে বলা হয়।
স্থানীয় সরকার বিভাগের উপসচিব ফিরোজ মাহমুদ স্বাক্ষরিত পত্র সম্পর্কে বগুড়ার স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক ও বগুড়া পৌরসভার প্রশাসক মো. মাসুম আলী বেগ জানান, বৃহস্পতিবার চিঠি পাওয়া গেছে। গনবিজ্ঞপ্তি জারি করতে বলা হয়েছে। দ্রুত বিজ্ঞপ্তি জারি করা হবে। এ ব্যাপারে বগুড়া পৌরসভার সাবেক মেয়র এড. মাহবুবর রহমান জানান ১৮৭৬ সালে বগুড়া পৌরসভা গঠিত হয়। সে সময় সুত্রাপুর, কাটনার পাড়া এবং শিববাটি মৌজা নিয়ে পৌরসভা গঠিত হয়।
পরবর্তীতে এর আয়তন বেড়ে ১২ বর্গকিলোমিটার করা হয়। দীর্ঘদিন এই অবস্থায় ছিলো। সে সময় ওয়ার্ড ছিলো ১২টি। ২০০৬ সালে ১৮ অক্টোবর বিএনপির নেতৃত্বোধীন জোট সরকার পৌরসভার আয়তন ও ওয়ার্ড সংখ্যা বৃদ্ধি করে গ্যাজেট প্রকাশ করে। এর আয়তন করা হয় প্রায় ৭০ বর্গ কিলোমিটার। মোট মৌজার সংখ্যা ৫৪ টি এবং ওয়ার্ড করা হয় ২১ টি।
বিএনপির তৎকালীন সিনিয়র যুগ্ম মহাসচির তারেক রহমানের ঐকান্তিক প্রচেষ্টার বগুড়া পৌরসভার আয়তন এবং ওয়ার্ড সংখ্যা বৃদ্ধি করা হয় সিটি কর্পোরেশন করার জন্য। কিন্তু পরে আর সময় পাওয়া যায়নি। পরবর্তী সরকার ক্ষমতায় এসে আর বগুড়ার দিকে নজর দেয়নি।
তিনি বলেন, সিটি কর্পোরেশন হওয়ার দিক থেকে বগুড়া অনেক দিক দিয়েই এগিয়ে বরিশাল, খুলনা এবং সিলেট সিটি কর্পোরেশনের চেয়ে বগুড়া পৌর সভার আয়তন এবং লোক সংখ্যা বেশি। বগুড়াসহ ১১ টি জেলার গাড়ি চলাচল করে এই শহরের উপর দিয়ে। বগুড়া একটি গ্রোয়িং সিটি। গ্যাস, রাস্তা, মেডিকেল কলেজ দেশের অন্যতম বৃহৎ কলেজ রয়েছে। এটি আরও আগে হলে ভালো হতো। তিনি দ্রুত এটি কার্যকর করার আহবান জানান।
আরও পড়ুনবগুড়া পৌরসভার সাবেক মেয়র ও বগুড়া জেলা বিএনপির সভাপতি মো. রেজাউল করিম বাদশা জানান, ২০০৬ সালে বিএনপির তৎকালীন সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব তারেক রহমান বগুড়া সিটি কর্পোরেশন করার জন্য ১২ টি ওয়ার্ড থেকে বৃদ্ধি করে ২১ টি ওয়ার্ড করেন। তিনি মেয়র থাকাকালে এ বিষয়ে একাধিক চিঠি দিয়েছেন মন্ত্রণালয়ে। বর্তমান জেলা প্রশাসকও চিঠি দিয়েছেন।
এটি বগুড়াবাসীর ন্যায্য পাওনা। এর মূল রূপকার হলেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। ইতোপূর্বে তিনি সব করে রেখেছিলেন। কিন্তু পরবর্তী ফ্যাসিস্ট সরকার এটি করেনননি। তিনি অবিলম্বে এটি ঘোষণা করার আহবান জানান।
বগুড়ার জেলা প্রশাসক হোসনা আফরোজা করতোয়া’কে জানান, বগুড়ার বেশকিছু উন্নয়ন প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। তারই অংশ হিসেবে সিটি কর্পোরেশনের জন্য স্থানীয় সরকার বিভাগে চিঠি দেওয়া হয়েছিলো। তারই প্রেক্ষিতে আমাদের কাছে বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টার দিকে চিঠি দিয়ে গণবিজ্ঞপ্তি জারি এবং স্থানীয় জনগণের অভিমত এবং কারো আপত্তি থাকলে তা নিস্পত্তি করে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। আগামী শনিবার অথবা রোববারের মধ্যে বহুল প্রচারিত পত্রিকার মাধ্যমে গণবিজ্ঞপ্তি জারি করা হবে। সুশিল সমাজের ব্যক্তিদের সাথে কথা বলা হবে। গণবিজ্ঞপ্তি জারির পর ১০ দিন সময় দেওয়া হবে। এরপর যথাযথ নিয়ম অনুসরণ করে প্রতিবেদন পাঠানো হবে। প্রতিবেদন পাঠানোর পর মন্ত্রণালয় থেকে গেজেট হবে।
মন্তব্য করুন