চিকিৎসক না থাকায় বরগুনার হাসপাতালে তালা

নিউজ ডেস্ক: চিকিৎসক না থাকায় তালা ঝুলিয়ে দেয়া হয়েছে বরগুনার বেতাগী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। এতে বিপাকে পড়ছেন চিকিৎসা নিতে আসা রোগীরা। তাদেরকে যেতে হচ্ছে পার্শ্ববর্তী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স বা বরিশালের শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে।
বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) সন্ধ্যায় হাসপাতাল বন্ধ-সংক্রান্ত গণবিজ্ঞপ্তি জারি করে তা মূল ফটকে ঝোলানো হয়েছে।
৫০ শয্যা বিশিষ্ট বেতাগী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বহির্বিভাগে দৈনিক পাঁচ শতাধিক রোগীকে সেবা দেওয়ার মতো চিকিৎসক নেই। ১৬ পদের বিপরীতে চিকিৎসক আছেন মাত্র এক জন। নার্স আছেন ছয় জন।
এমন অবস্থায় প্রধান ফটকে তালা মেরে গণবিজ্ঞপ্তি টাঙিয়ে রেখেছে কর্তৃপক্ষ। বিজ্ঞপ্তিতে লেখা আছে, ‘পুলিশ কেইস বা মারামারি রোগীদের চিকিৎসক না থাকার জন্য অত্র উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হতে মেডিকেল সার্টিফিকেট দেওয়া সম্ভব হইতেছে না। সুতরাং অনুগ্রহপূর্বক অন্য উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পুলিশ কেইস এন্ট্রি করুন ও প্রয়োজনে ভর্তি থাকুন’।
আরেকটি গণবিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে,‘অনিবার্য কারণে (ডাক্তার না থাকার কারণে) আন্তঃবিভাগে ভর্তিসহ সকল কার্যক্রম বন্ধ আছে। জরুরি বিভাগে সকাল ৮ ঘটিকা থেকে রাত ৮ ঘটিকা পর্যন্ত এবং বহির্বিভাগে সকাল ৮ ঘটিকা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত চিকিৎসা সেবা চালু থাকবে। আশা করি, এই অবস্থা সাময়িক, এই অবস্থার উত্তরণ হইলেই পুনর্নিয়মে সেবা চালু থাকবে’।
শুক্রবার (৭ মার্চ) সকালে চিকিৎসা নিতে এসে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স তালাবদ্ধ পেয়ে ফিরে যান সেবাপ্রার্থীরা।
আরও পড়ুনবেতাগী উপজেলার কাজিরাবাদ এলাকা থেকে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আসা রাজু মিয়া বলেন, দূর থেকে এসে দেখি হাসপাতালের গেটে তালা। এটা কেমন কথা! মানুষ চিকিৎসা নিবে কোথায়?
স্থানীয়রা বলছেন, এখানে চিকিৎসক আসার পরপরই বদলি নিয়ে অন্যত্র চলে যান। তারা ওখানে গেলেও চিকিৎসা দিতে হবে, তাহলে কেন বদলি নিচ্ছেন? সিভিল সার্জন বদলির আবেদন গ্রহণ করেন কেন? আমাদের স্বাস্থ্যসেবা এতটাই খারাপ, যা কল্পনার বাইরে।
চিকিৎসা নিতে আসা কয়েকজন রোগী বলেন, “আমরা হাসপাতালে আইছি, কিন্তু ডাক্তারই নাই। ডাক্তারের লেখা কাগজ ছাড়া কেমনে ঔষধ খামু? হাসপাতালে তালা মাইরা রাখছে।”
এ বিষয়ে বরিশাল বিভাগীয় স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. শ্যামল কৃষ্ণ মন্ডল বলেন, এটা খুবই দুঃখজনক যে, চিকিৎসকরা পদায়ন পাওয়ার পর যোগদান না করেই অন্যত্র চলে যান। শুধু বেতাগীতে নয়, অনেক উপজেলায় এরকম অবস্থা। এবার যাদের পদায়ন করা হবে, তাদের এমনভাবে দেওয়া হবে, যাতে বদলি বদলি করে বিপাকে না ফেলতে পারে। ওখানে চাকরি করলেও সরকারি আর আমার এখানে চাকরি করলেও সরকারি। দ্রুত এ অবস্থার উন্নতি ঘটবে।
মন্তব্য করুন