নওগাঁর রাণীনগরে দুই প্রতিবন্ধীর জীবন কাটছে চার দেয়ালের মাঝে
নওগাঁ প্রতিনিধি : নওগাঁর রাণীনগরের কাশিমপুর ইউনিয়নের কাশিমপুর প্রাথমিক স্কুল পাড়ায় দুইজন প্রতিবন্ধীর জীবন কাটছে চার দেয়ালের মাঝে। গরীব পরিবারের সন্তান হওয়ায় অর্থাভাবে সন্তানের জন্য উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা করাতে পারেনি পরিবার।
সরেজমিনে দেখা যায় উপজেলার কাশিমপুর স্কুলপাড়ার দিনমজুর নয়ন কুমার প্রামাণিকের প্রতিবন্ধী ছেলে আকাশ কুমার প্রামাণিক। আকাশের জন্ম ১৯৯৬ সালে। জন্মের পর থেকেই প্রতিবন্ধী আকাশ। অর্থাভাবে ছেলের উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা করাতে পারেনি আকাশের পরিবার। তাই ২৮টি বছরের বেশি সময় একটি পরিত্যক্ত ঘরেই জীবন কাটছে আকাশের।
ঘরেই মল-মূত্র ত্যাগসহ খাবার গ্রহণ সবই করতে হয়। শুধুমাত্র ঘরের একটি ছোট্ট জানালা দিয়ে ফ্যাল ফ্যাল দৃষ্টিতে বাহিরের আকাশ ও পরিবেশকে দেখে। আকাশের মা অলোকা রাণী বলেন হয়তোবা উন্নত চিকিৎসা পেলে আকাশ সুস্থ হয়ে উঠতো। কিন্তু আমরা গরীব মানুষ পরিবারের অন্য সদস্যদের পেটের ভাত জোটাবো নাকি আকাশের উন্নত চিকিৎসা করবো।
শুধুমাত্র প্রতিবন্ধী ভাতাটুকুই পায় আকাশ। যদি আকাশের উন্নত চিকিৎসার জন্য আর্থিক সহযোগিতা পেতাম তাহলে ছেলের উন্নত চিকিৎসার জন্য চেস্টা করতাম। আকাশের বাড়ির পশ্চিম দিকে আরেক প্রতিবন্ধী ছেলে দীপনম সূত্র। সেও জন্ম থেকেই শারীরিক প্রতিবন্ধী।
আরও পড়ুন
২০০৬ সালে জন্ম নেয়া দীপনমের বাবা একজন ভ্যান চালক। দীপনম সূত্রকে হুইল চেয়ার করে একস্থান থেকে অন্যস্থানে নিয়ে যাওয়া যায়। দীপনমও শুধুমাত্র চেয়ে চেয়ে দেখে। হয়তোবা উন্নত চিকিৎসা পেলে সেও সুস্থ্য হয়ে উঠতে পারে, এমনটিই মনে করছে তার পরিবার। দীপনম সূত্রের মা চন্দনা নমসূত্র বলেন সে আমার প্রথম সন্তান।
প্রতিবন্ধী হয়ে জন্ম নেওয়ার পর গরীব মানুষ হিসেবে চেস্টা করেছি চিকিৎসা করাতে। কিন্তু ব্যয়বহুল চিকিৎসার খরচ আমাদের পক্ষে যোগানো সম্ভব হয়ে ওঠেনি। তাই উন্নত চিকিৎসার আশা ছেড়ে দিয়েছি। অনেক কষ্টে প্রতিবন্ধী ভাতাটুকু পায় দীপনম। এছাড়া সরকারের অন্য কোন সহযোগিতা আজ পর্যন্ত তার ভাগ্যে জোটেনি। তাই সরকারের পক্ষ থেকে সহযোগিতা পেলে ছেলের উন্নত চিকিৎসা করানোর চেষ্টা করতাম। উন্নত চিকিৎসা পেলে হয়তো সে কিছুটা সুস্থ্য হয়ে উঠতো।
উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মাহবুবুল আলম কচি জানান, ওই দুইজন প্রতিবন্ধী ভাতা পাচ্ছে। এছাড়া আগামীতে উন্নত চিকিৎসার কোন সুযোগ আসলে তাদের জন্য সেই সুযোগ প্রদান করার চেষ্টা করবো। আমাদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখলে নানা সময়ে আসা বিভিন্ন সুবিধাও ওদের দিতে চেষ্টা করবো।
মন্তব্য করুন