নাটোরের চলনবিলে ব্রিধান-৭৫ আবাদে কৃষকের মাথায় হাত

সিংড়া (নাটোর) প্রতিনিধি : নাটোরের সিংড়ায় সুপ্রিম বীজ এর ব্রিধান-৭৫ রোপা আমন ধান আবাদ করে ক্ষতিগ্রস্ত প্রায় ২০ জন কৃষক। শতাধিক বিঘা জমি আবাদ করে ক্ষতিগ্রস্ত উপজেলার শেরকোল ইউনিয়নের পমগ্রামের কৃষকরা।
ব্রিধান-৭৫ আবাদ করে এসব কৃষকের মাথায় হাত। খরচের টাকাই উঠছে না এবার কৃষকদের। বিঘাকে বিঘা ধান জমিতেই পড়ে আছে কোনো কোনো কৃষকের। এবার এই গ্রামের এসব কৃষকদের মাঝে আনন্দ নাই। পরিবার পরিজন নিয়ে দু:শ্চিন্তা তাদের। এ বিষয়ে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা উপজেলা কৃষি অফিসার বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
সিংড়া উপজেলা কৃষি বিভাগ সরেজমিন পরিদর্শন করলেও এখনও কোনো সুরাহা হয়নি। তবে কৃষি বিভাগ জানিয়েছে তারা এ বিষয়ে তারা সুপ্রিম বীজ কোম্পানির উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলেছেন। তারা দ্রুত ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের ক্ষতিপূরণ দেয়ার জন্য আশ্বাস দিয়েছেন।
কৃষকরা জানায়, এ বছর জুন মাসে উপজেলা কৃষি বিভাগের প্রাক্তন সহকারী কৃষি অফিসার নিখিল এবং কেউ কেউ নাটোর সুপ্রিম ডিলার পয়েন্ট থেকে বীজ সংগ্রহ করে রোপণ করে। ২০২৪ সালে কৃষি বিভাগ থেকে বীজ সংগ্রহ করে বিঘা প্রতি ১৮/২০ মণ ধান পেলেও এবার পাওয়া গেছে মাত্র ৪/৫ মণ ধান। যারা ধান কেটেছে তারা হতাশায় মাথায় হাত দিয়েছেন। আর যারা ধান কাটতে পারেনি তাদের ধান মাঠেই পড়ে আছে। বিঘা প্রতি ৪/৫ হাজার খরচের টাকা ও উঠছে না কৃষকদের।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ব্রিধান-৭৫ রোপন করে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের ধান জমিতেই পড়ে আছে। একটি গোছে কোনো ধান কাঁচা, কোনোটা পাকা, কোনোটার শীষ ফেটে গেছে। কৃষক জিয়াউর জানান, আমি ৬ বিঘা জমিতে লীজ নিয়ে এবার ব্রিধান-৭৫ ধান আবাদ করি। কোম্পানি আমাদের অপক্ক বীজ দিয়েছে আমরা ব্যপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত। বিঘা প্রতি ৫/৬ মণ ধান হবে। কাটার খরচই উঠবে না। তাই মাঠেই ধান পড়ে আছে।
আরও পড়ুনকৃষক আব্দুল হাকিম জানান, ৪ বিঘা জমিতে ১০ কেজি বীজ নিয়ে রোপণ করি। ১শ’ টাকা কেজি করে কিনে রোপণ করি, ধান কেটে ৪/৫ মণ করে ফলন পাই। অথচ গতবার ১৭/১৮ মণ করে পেয়েছিলাম। বিঘা প্রতি ধান কাটা পর্যন্ত ১০ হাজার টাকা খরচ হবে সেখানে ধান কাটলে তারা ঘরে তুলতে পাচ্ছে ৪/৫ হাজার টাকা।
এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি অফিসার খন্দকার ফরিদ জানান, আমার কাছে ঐ এলাকার কয়েকজন কৃষক আসছিলো। সরেজমিনে গিয়ে সত্যটা পাওয়ার পর সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলেছি। আশা করি দ্রুত বিষয়টি সমাধান হবে।
প্রতি বছর ইরি-বোরো ধান এবং রোপা আমন ধান আবাদ করে চলনবিলের কৃষকরা। কিছু কিছু কোম্পানির নিম্নমানের বীজের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে কৃষকরা। এ বিষয়ে কৃষকদের সচেতন হওয়ার পরামর্শ দিয়েছে বিশেষজ্ঞরা।
মন্তব্য করুন