ভিডিও মঙ্গলবার, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৫

সাইবার ঝুঁকি

সাইবার ঝুঁকি। প্রতীকী ছবি

সারাবিশ্বে প্রযুক্তির জয়জয়কার। এমন পরিস্থিতিতে যদি দেশ প্রযুক্তি ঝুঁকিতে থাকে তবে তা কতটা আশঙ্কার বলার অপেক্ষা রাখে না। প্রসঙ্গত সম্প্রতি পত্র-পত্রিকায় প্রকাশিত খবরে জানা গেল, প্রযুক্তি খাতে সংস্কার জরুরি। অন্যথায় বড় ধরনের সাইবার ঝুঁকিতে পড়তে পারে দেশ।

এ ছাড়া চলমান পরিস্থিতিতে যেকোনো সময় প্রযুক্তি খাতে ঘটে যেতে পারে বড় ধরনের বড় অঘটন। হ্যাক হয়ে যেতে পারে সরকারি বিভিন্ন ওয়েব সাইট। অন্যদিকে সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রযুক্তি খাত সংস্কার না হওয়া, নিয়মিত সাইবার মনিটরিং না করা -এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন প্রযুক্তিবিদরা।

তথ্য প্রযুক্তির সহজলভ্যতায় বিভিন্ন বয়স ও শ্রেণির মানুষের মধ্যে ইন্টারনেট এবং স্মার্ট ফোনের ব্যবহার যত বাড়ছে তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে সাইবার অপরাধও। তরুণ-তরুণী থেকে শুরু করে বিভিন্ন বয়সের মানুষ প্রতিদিনই সাইবার অপরাধে আক্রান্ত হচ্ছেন। ফেসবুক, টুইটার, ইনষ্টাগ্রাম, গুগল, স্কাইপিতে ভুয়া আইডি খুলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম সহ বিভিন্ন অনলাইন পোর্টাল, ব্লগে মিথ্যা মানহানিকর তথ্য প্রচার, বিভিন্ন এপসে অশ্লীল ছবি, ভিডিও এবং মেসেজ পাঠিয়ে উত্ত্যক্ত করছে সাইবার অপরাধীরা। ফিশিংয়ের মাধ্যমে অন্যের আইডি হ্যাক করে প্রতারণাও করা হচ্ছে।

অনেকে সাইবার অপরাধের শিকার হয়ে পারিবারিক ও সামাজিকভাবে অপমান-অপদস্তের শিকার হচ্ছেন। ক্রমেই সাইবার অপরাধীদের অপতৎপরতা ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে। কোনোভাবেই যেন ঠেকানো যাচ্ছে না সাইবার অপরাধীদের তৎপরতা। তারা যেন অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, সাইবার অপরাধের মামলাগুলো দ্রুত নিষ্পত্তি করতে হবে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সরকারের শক্ত মনিটরিংয়ের ব্যবস্থা না থাকায় এমন জটিলতার সৃষ্টি হয়েছে। তাদের দাবি, সাইবার আইনের যথাযথ প্রয়োগ না হওয়ায় এসব ভার্চুয়াল অপরাধের ঘটনা দিন দিন বেড়েই চলছে।

তথ্য অনুযায়ী, দেশে বর্তমানে ফেসবুক ব্যবহারকারীর সংখ্যা প্রায় তিন কোটি। আর সাইবার অপরাধের ৭৫ ভাগ অভিযোগই ফেসবুক কেন্দ্রিক। ইন্টারনেটের মাধ্যমে হয়রানি ও প্রতারণার শিকার ৪৯ শতাংশই স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী। আমরা মনে করি, এই আশঙ্কাকে আমলে নিতে হবে এবং এর পরিপ্রেক্ষিতে করণীয় নির্ধারণ ও তার যথাযথ বাস্তবায়নে কাজ করতে হবে। প্রযুক্তিবিদরা বলছেন, প্রতিনিয়ত দেশের বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের ওয়েব সাইটে হানা বা আক্রমণ করা হচ্ছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে। আক্রমণ করার মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে, সাইবার সিকিউরিটি সিস্টেম ভেঙে তথ্য চুরি  করা।

আরও পড়ুন

অধিকাংশ সময়ই হ্যাকাররা সফল হচ্ছে। আবার অনেক ক্ষেত্রে সফল হচ্ছে না। হ্যাকারদের তথ্য চুরির সফলতার হার সবচেয়ে বেশি এটাও জানা যাচ্ছে। আমরা মনে করি, যখন এই আলোচনা সামনে আসছে যে, প্রযুক্তি খাতে সংস্কারের অভাবে সাইবার ঝুঁকিতে দেশ-তখন এটি সহ সামগ্রিক পরিস্থিতি আমলে নিতে হবে।

দুর্বল প্রযুক্তি ব্যবস্থাপনার কারণে সাইবার ঝুঁকিতে রয়েছে দেশ। নিম্নমানের সরঞ্জাম দিয়ে ওয়েবসাইট তৈরি সহ বিভিন্ন কারণে এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় সোনালী ব্যাংক ও বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে মোটা অংকের রিজার্ভ চুরির ঘটনা ঘটেছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে চুরি হওয়া এই রিজার্ভের মধ্যে ফিলিপিন্সে যাওয়া ৮১ মিলিয়ন অর্থাৎ ৮১০ কোটি টাকা বাজেয়াপ্ত করেছেন ঢাকার একটি আদালত। শুধু ব্যাংকিং খাতই নয় সাইবার আক্রমণ ও হ্যাকারদের তথ্য চুরির ঝুঁকিতে রয়েছে দেশের প্রায় সব সরকারি প্রতিষ্ঠান বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।

এটাও খবরে উঠে এসেছে, জুলাই-আগষ্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় ঢাকা মহানগর পুলিশের কাছে থাকা ৩২ লাখ পরিবারের তথ্য চুরি হয়ে গেছে। চুরি বলতে, তথ্য কপি করে নিয়ে গেছে হ্যাকাররা। এ ছাড়া তথ্য স্থানান্তর, পোস্টিং বা আপডেট করা এবং প্লাগিং সিস্টেমের দুর্বলতার কারণে প্রচুর তথ্য চুরিসহ নানা ধরনের ঘটনা ঘটেছে। স্মর্তব্য যে, প্রযুক্তি জড়িয়ে গেছে সবকিছুর সঙ্গে।  ফলে দেশ সাইবার ঝুঁকিতে থাকলে তা অত্যন্ত উৎকন্ঠার। আমরা মনে করি, সাইবার অপরাধ ঠেকাতে সরকারের সর্বাত্মক প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে-এমনটি কাম্য।

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

৮৫ সহকারী সচিবকে পিএসসিতে সংযুক্তি

বিএনপি নেতা মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল হাসপাতালে ভর্তি

চীনের হয়ে গুপ্তচরবৃত্তির দায়ে জার্মান নাগরিকের কারাদণ্ড

মৌসুমী বৃষ্টি বলয় ‘প্রবাহ’ সক্রিয়, টানা গরমের পর বৃষ্টিতে জনজীবনে স্বস্তি

জোর করে বৃদ্ধের চুল, দাড়ি কাটার ঘটনায় একজন গ্রেফতার

বগুড়ায় র‌্যাব-১২ এর অভিযানে ৫৫ বোতল কেরুসহ আটক ১