বগুড়ায় চাষাবাদে বেড়েছে কীটনাশকের ব্যবহার, মিলছে না পরামর্শ

শাওন রহমান : বগুড়ায় আগাম শীতকালীন ফসলে পোকা-মাকড় দমনে কীটনাশক স্প্রে করছেন কৃষক। ফসলের ক্ষেতে অতিরিক্ত রাসায়নিক সার ও কীটনাশক ব্যবহারে পরিবেশের ক্ষতি হচ্ছে, হুমকির মুখে পড়েছে জনস্বাস্থ্য। এ জেলার কৃষকেরা বছর জুড়েই সবজি উৎপাদন করে থাকেন। স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে সবজির একটি বড় অংশ পাঠানো হয় দেশের বিভিন্ন জেলায়। কৃষকেরা এতে আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন।
তবে উৎপাদন থেকে শুরু করে ভোক্তার খাবার টেবিলে পৌঁছানো পর্যন্ত সহনীয় মাত্রার চেয়ে বেশি সার ও কীটনাশক ব্যবহার করা হচ্ছে। নিজেদের ধারনা, দোকানীর পরামর্শ, ওষুধের সঠিক মাত্রা-প্রয়োগ ও নির্দিষ্ট দিনের ব্যবধান না মেনেই ক্ষেতে কীটনাশক প্রয়োগ করছেন কৃষকরা। খুব কম সংখ্যক কৃষক কৃষি বিভাগের পরামর্শ অনুসরণ করছেন বা পাচ্ছেন।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর বগুড়া সূত্রে জানা গেছে, চলতি খরিপ-২ বা আগাম শীতকালীন সবজি চাষ মৌসুমে বগুড়ায় এখন পর্যন্ত ২ হাজার ৩৭৫ হেক্টর জমিতে চাষাবাদ হয়েছে, এই কার্যক্রম চলবে আরও কয়েক দিন। গত বছর ২ হাজার ৬৫০ হেক্টর জমিতে আগাম শীতকালীন সবজি চাষ হয়। এবার প্রতি কেজি সবজির উৎপাদন খরচ ধরা হয়েছে ২৭-২৯ টাকা। হেক্টর প্রতি ফলন ধরা হয়েছে সাড়ে ১৭ মেট্রিকটন।
বগুড়া সদরের কয়েকজন কৃষকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ফসলের বেশি ফলনের জন্য ক্ষেতে মাত্রাতিরিক্ত রাসায়নিক সার, কীটনাশক ও ছত্রাকনাশক প্রয়োগ করা হচ্ছে। নিয়মানুযায়ী কোনো ফসলে এক সপ্তাহ বা ১৫ দিন পরপর ক্ষেতে কীটনাশক দেওয়ার কথা। কীটনাশক প্রয়োগের এক সপ্তাহ পর ফসল সংগ্রহ করার কথা থাকলেও অনেক কৃষক তা প্রয়োগের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ফসল সংগ্রহ করে বাজারজাত করছেন।
আরও পড়ুনএসব কীটনাশক প্রয়োগ করলে ক্ষেতের আশপাশের নদী, ছড়া, নালা এমনকি জলাভূমিতে তা ছড়িয়ে পড়ে উদ্ভিদ, ব্যাঙ, মাছসহ বিভিন্ন প্রজাতির জলজ প্রাণি মারা যায়। তবে এসব ব্যাপারে কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে পরামর্শ পেতে সময়মত পাওয়া যায় না কাউকে। কৃষি বিভাগের পরামর্শ না মিললেও বিভিন্ন ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিরা তাদের পণ্য বিক্রির স্বার্থে কৃষকদের ফ্রিতেই দিচ্ছেন পরামর্শ, বাগিয়ে নিচ্ছেন টাকা।
জানতে চাইলে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর বগুড়ার উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা ফরিদুর রহমান দৈনিক করতোয়া’কে বলেন, বগুড়ার কৃষকেরা সবজি ক্ষেতে অতিমাত্রায় কীটনাশক ব্যবহার করেন এটা যেমন ঠিক তেমনি কীটনাশক ব্যবহার কমাতে কৃষি অফিসের পক্ষ থেকে বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। মূলত বেশিরভাগ কৃষক দ্রুত ও বেশি ফসল পাওয়ার আশায় কীটনাশক ব্যবহারে ঝুঁকছেন।
মন্তব্য করুন