সেই ফেলানীর ছোট ভাই আরফান চাকরি পেলেন বিজিবিতে

লালমনিরহাট প্রতিনিধি: ভারতের কুচবিহার সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে নিহত কুড়িগ্রামের কিশোরী ফেলানী খাতুনের ছোট ভাই আরফান হোসেন চাকরি পেলেন বিজিবিতে। গত বুধবার বিকেলে আনুষ্ঠানিকভাবে তার হাতে নিয়োগপত্র তুলে দেন বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) লালমনিরহাট ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মেহেদী ইমাম। এরআগে গত ২৩ ফেব্রুয়ারি লালমনিরহাট ব্যাটালিয়ন (১৫ বিজিবি) আয়োজিত নিয়োগ পরীক্ষায় অংশ নিয়ে উত্তীর্ণ হওয়ার পর তাকে এ নিয়োগপত্র দেওয়া হয়।
জানা যায়, গত ২০১১ সালের ৭ জানুয়ারি ১৫ বছর বয়সী কিশোরী ফেলানী বাড়ির পাশের সীমান্ত পাড়ি দিয়ে ভারতে যায়। সেখান থেকে কাঁটাতার পার হয়ে দেশে ফেরার সময় ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) তাকে গুলি করে হত্যা করে। এরপর তার লাশ ঝুলে ছিল ভারতীয় কাঁটাতারের বেড়ায়। এ হত্যাকাণ্ড দেশ-বিদেশে ব্যাপক আলোড়ন তোলে। সেই থেকে দীর্ঘদিন ধরে ন্যায় বিচারের দাবিতে লড়াই করে আসছিল ফেলানীর পরিবার। সেই ফেলানীর ছোট ভাই আরফান হোসেন নিয়োগ পেলেন বিজিবিতে সৈনিক পদে।
ফেলানীর ভাই আরফান হোসেন নিয়োগপত্র হাতে পেয়ে আবেগাপ্লুত কণ্ঠে বলেন, বাবা-মায়ের স্বপ্ন ছিল দেশের জন্য কাজ করার। ফেলানী হত্যার পর মানুষ যে প্রতিবাদ জানিয়েছিল, তখন থেকেই আমার ইচ্ছা ছিল বিজিবিতে যোগ দেওয়ার। আজ আমার সেই স্বপ্ন পূর্ণ হলো। এসময় দেশের মানুষের সেবা করার সুযোগ দেওয়ার জন্য বিজিবিকে ধন্যবাদ জানান তিনি।
আরও পড়ুনএপ্রসঙ্গে বলতে গিয়ে ফেলানীর বাবা নুর ইসলাম বলেন, ভারত থেকে ফেরার পথে আমার কিশোরী মেয়ে ফেলানীকে পাখির মতো গুলি করে হত্যা করে কাঁটাতারের বেড়ায় লাশ ঝুলিয়ে রাখে বিএসএফ। সেই দৃশ্য আজও ভুলতে পারিনি। তবে দেশবাসী আর বিজিবি সবসময় পাশে ছিল। আজ আমার ছেলে মেধা ও যোগ্যতায় বিজিবিতে সুযোগ পেল। এটা আমার জীবনের বড় প্রাপ্তি।
বিজিবি লালমনিরহাট-১৫ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মেহেদী ইমাম বলেন, বিজিবি সবসময় ফেলানীর পরিবারের পাশে রয়েছে। ফেলানীর ছোট ভাই নিয়োগ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন। আজ শুক্রবার প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে যোগ দেবেন তিনি। প্রশিক্ষণ শেষে তিনি একজন দক্ষ সদস্য হিসেবে দেশের সেবায় নিয়োজিত হবেন বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
মন্তব্য করুন