ভিডিও মঙ্গলবার, ২৬ আগস্ট ২০২৫

গরুর মাংস আমদানির খবর ভিত্তিহীন: মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়

ছবি : সংগৃহীত,গরুর মাংস আমদানির খবর ভিত্তিহীন: মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়ানো ‘ব্রাজিল বাংলাদেশকে কেজি প্রতি ১২০ টাকায় গরুর মাংস সরবরাহ করবে’ তথ্যটি সঠিক নয়। বরং বিদেশ থেকে মাংস আমদানির খবর সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন বলে জানিয়েছে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়।

মঙ্গলবার (২৬ আগস্ট) মন্ত্রণালয় এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, বাংলাদেশ সরকার প্রাণিসম্পদ খাতের উন্নয়ন, দেশীয় খামারিদের স্বার্থরক্ষা এবং জনগণকে নিরাপদ ও মানসম্মত মাংস সরবরাহে অঙ্গীকারবদ্ধ। এ মুহূর্তে বিদেশ থেকে মাংস আমদানির কোনো সিদ্ধান্ত সরকার নেয়নি।


মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, সম্প্রতি বিভিন্ন গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এমন খবর প্রচারিত হচ্ছে যে, ‘ব্রাজিল বাংলাদেশকে কেজি প্রতি ১২০ টাকায় গরুর মাংস সরবরাহ করবে।’ এ বিষয়ে স্পষ্টভাবে জানানো যাচ্ছে যে, সরকার বিদেশ থেকে, বিশেষ করে ব্রাজিল থেকে গরুর মাংস আমদানির বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি। ভ্রান্ত ও যাচাইকৃত নয় এমন সংবাদ জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করছে। জনগণকে এ ধরনের বিভ্রান্তিকর প্রচারণায় প্রভাবিত না হতে অনুরোধ জানানো হচ্ছে।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বাংলাদেশের প্রাণিসম্পদ খাত শুধু মাংস উৎপাদনেই সীমাবদ্ধ নয়, এটি নারীর ক্ষমতায়ন, আত্মকর্মসংস্থান, দারিদ্র্য নিরসন ও সামগ্রিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। প্রায় ১৫ লাখ প্রান্তিক খামারি এবং ৬ লাখেরও বেশি মৌসুমি খামারি কোরবানির ঈদ উপলক্ষ্যে গবাদিপশু পালন করে জীবিকা নির্বাহ করে। দেশের শতভাগ কোরবানির পশুর চাহিদা দেশীয়ভাবে পূরণ করা সম্ভব হয়েছে। প্রাণিসম্পদ অধিদফতর প্রান্তিক ও ক্ষুদ্র খামারিদের দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য প্রশিক্ষণ প্রদান, উৎপাদন উপকরণ বিতরণ, বাজার সংযোগ এবং ভ্যালু চেইন উন্নয়নের কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে। পাশাপাশি দেশীয় গবাদিপশুর জাত উন্নয়ন, সুষম খাদ্য ব্যবস্থাপনা, টিকা সরবরাহ ও পশু চিকিৎসা সম্প্রসারণের মাধ্যমে উৎপাদন ব্যবস্থাকে আরও টেকসই ও সমৃদ্ধ করার উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে।


প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় আরও জানিয়েছে, মাংস একটি অতি-পচনশীল প্রাণিজাত পণ্য, যার গুণগত মান ও নিরাপত্তা বজায় রাখতে প্রক্রিয়াজাত থেকে ভোক্তা পর্যায় পর্যন্ত কার্যকর কোল্ড চেইন অবকাঠামো দরকার। বাংলাদেশে বর্তমানে আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন হিমায়িত মাংস সংরক্ষণ ও পরিবহন অবকাঠামো যথাযথভাবে গড়ে ওঠেনি। কোল্ড চেইনের দুর্বলতা মাংসের গুণগত মান নষ্ট করে জনস্বাস্থ্য ও খাদ্য নিরাপত্তায় হুমকি তৈরি করতে পারে।

আরও পড়ুন

বাংলাদেশ বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা (ডব্লিউটিও)’র নীতি ও বিধিবিধান মেনে চলে। তবে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার স্যানিটারি ও প্যাথস্যানিটারি (এসপিএস) ও টেকনিক্যাল ব্যারিয়ার্স টু ট্রেড (টিবিটি) চুক্তি অনুযায়ী, কোনো দেশ জনস্বাস্থ্য, খাদ্যনিরাপত্তা, পশু স্বাস্থ্য ও পরিবেশ সুরক্ষার স্বার্থে যৌক্তিক ও বৈজ্ঞানিক ভিত্তিতে শর্ত আরোপ করতে পারে। দেশীয় খামারি ও উদ্যোক্তাদের বিপুল বিনিয়োগ, আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার ও সরকারের নীতিগত সহায়তায় বাংলাদেশ মাংস উৎপাদন স্বয়ংসম্পূর্ণ পর্যায়ে পৌঁছেছে। সরকার এ খাতকে রপ্তানিমুখী করার লক্ষ্যে ইতোমধ্যে রোগমুক্ত অঞ্চল তৈরির কার্যক্রমও শুরু করেছে। এ অবস্থায় বিদেশ থেকে মাংস আমদানি প্রাণিসম্পদ খাতের উন্নয়নকে ব্যাহত করবে।

এছাড়া, বিদেশ থেকে কিছু রোগ বা জীবাণু যেমন: ক্ষুরারোগ (এফএমডি), ল্যাম্পি স্কিন ডিজিস (এলডিএস), পিপিআর, তড়কা, এভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জা, যক্ষ্মা, ব্রুসেলোসিস, সালমোনেলা ও ই-কোলাই-এর মতো জীবাণুসমূহ বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের আশঙ্কা রয়েছে, যা জনস্বাস্থ্য ও প্রাণিস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক হুমকি।

 

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

২ মাস বন্ধ থাকার পর সেপ্টেম্বর থেকে আবার খোলা বাজারে আটা বিক্রি শুরু

সিরাজগঞ্জের সলঙ্গায় পাটের হাটে ফিরেছে পুরোনো ঐতিহ্য

বগুড়ার ধুনটে ট্রাকের ধাক্কায় প্রাণ গেল মোটরসাইকেল চালকের

দেশীয় প্রজাতির মাছ উৎপাদনের অপার সম্ভাবনাময় আশুড়ার বিল

বিমান পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান হলেন শেখ বশিরউদ্দীন

ব্যবহারের অভাবে বগুড়ার ধুনটে যমুনা নদীর তীরে নষ্ট হচ্ছে সরকারের অর্ধকোটি টাকার নৌকা