বগুড়ার নন্দীগ্রামে মাছ ধরার ধুম, চাহিদা ও বিক্রি বেড়েছে ডারকি, খোলশানির

নন্দীগ্রাম (বগুড়া) প্রতিনিধি : কয়েকদিনের ভারী বর্ষণে নন্দীগ্রামের মাঠ-ঘাট, খাল-বিল ও নিচু জমি পানিতে ভরে উঠেছে। বর্ষার এই সময় গ্রামবাংলার জনজীবনে আসে এক বিশেষ আমেজ। নতুন পানির স্রোতে দেশি নানা প্রজাতির মাছ ভেসে আসায় শুরু হয়েছে মাছ ধরার হিড়িক, আর সেই সঙ্গে বাজারে বেড়ে গেছে মাছ ধরার বিভিন্ন সরঞ্জামের চাহিদা ও বিক্রি।
অঞ্চলভেদে এসব দেশীয় সরঞ্জামের রয়েছে ভিন্ন ভিন্ন নাম যেমন-ডারকি, খোলশানি, কুজি, পলই ইত্যাদি। পেশাদার ও মৌসুমি জেলেরা এগুলো ব্যবহার করে মাছ ধরে পরিবারের চাহিদা মিটিয়ে বাজারে বিক্রি করছেন। তাই হাট-বাজারে মাছ ধরার সরঞ্জাম কিনতে ভিড় জমাচ্ছেন ক্রেতারা। এসব সরঞ্জামের চাহিদা থাকলেও উৎপাদন খরচ বাড়ায় এসব বিক্রি করে তেমন লাভ হচ্ছে না। এতে করে ক্ষতির সম্মুখিন হচ্ছে কারিগররা।
উপজেলার বিভিন্ন হাটে এখন বিক্রি হচ্ছে হাতের তৈরি নানা রকমের খোলশানি, ঠুশি, বিত্তি, কুজি ও পলই। আকারভেদে খোলশানি বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ২৫০ টাকা, বিত্তি ১০০ থেকে ২৩০ টাকা, ঠুশি ৩০০ টাকা, আর পলই ১৫০ থেকে ২৫০ টাকায়। নন্দীগ্রামের ওমরপুর, রনবাঘা, পন্ডিতপুকুর ও কুন্দার হাটে খুচরা ও পাইকারি বিক্রি হয় এসব সরঞ্জাম। গতকাল শুক্রবার ওমরপুর ও রনবাঘা হাট, আর রবিবার ও বুধবার কুন্দার হাটে বসে মাছ ধরার সরঞ্জামের জমজমাট বাজার।
আরও পড়ুনউপজেলার দলগাছা গ্রামের সিরাজুল ইসলাম বলেন, গ্রামের জমি ও ডোবা-নালা বর্ষার পানিতে ভরে গেছে। সেখানে দেখা মিলছে বিভিন্ন জাতের দেশি মাছ। শখের বসে মাছ ধরতে খোলশানি, জাল ও কুজি কিনেছি। প্রায় ১৫ বছর ধরে মাছ ধরার সরঞ্জাম তৈরি ও বিক্রি করছেন নকুল কুমার সরকার।
তিনি বলেন, আগের মতো লাভ নেই। বাঁশ ও সুতার দাম বেড়েছে। আগে যে সুতা ১০০ টাকায় কিনতাম, এখন লাগে ৩০০ টাকা। নন্দীগ্রাম উপজেলা বণিক সমিতির কোষাধ্যক্ষ আলহাজ্ব মাহাবুবুর রহমান জানান, নন্দীগ্রামের ঐতিহ্যবাহী ওমরপুর হাট একসময় মাছ ধরার সরঞ্জামের জন্য বিখ্যাত ছিল। আধুনিকতার কারণে এসব সরঞ্জামের ব্যবহার কমেছে। এ ব্যবসার সাথে জড়িতদের টিকিয়ে রাখতে সরকারি সহযোগিতা প্রয়োজন।
মন্তব্য করুন