ভিডিও সোমবার, ২৮ জুলাই ২০২৫

কেজিতে বেড়েছে ১০ টাকা পর্যন্ত, বছরে ১৫ শতাংশ

অস্থির চালের বাজারে বিপাকে নিম্ন আয়ের মানুষ

অস্থির চালের বাজারে বিপাকে নিম্ন আয়ের মানুষ

স্টাফ রিপোর্টার : অনেকদিন থেকেই অস্থির দেশের চালের বাজার। বছরের ব্যবধানের চালের দাম বেড়েছে ১৫ শতাংশের বেশি। অঞ্চলভেদে বস্তাপ্রতি চালের দাম বেড়েছে দুইশ’ থেকে আড়াইশ’ টাকা পর্যন্ত। আর দেড় মাসে মানভেদে কেজিতে দাম বেড়েছে ৫ থেকে ১০ টাকা পর্যন্ত। কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) হিসাব মতে, গত এক বছরে বাজারে গড়ে চালের দাম বেড়েছে ১৫ শতাংশ। এর মধ্যে গত এক মাসে চিকন চালের দাম বেড়েছে ৫ শতাংশ, আর মাঝারি ও মোটা চালের দাম বেড়েছে ৯ শতাংশ।

এদিকে, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের তথ্য অনুযায়ী, দেশের মোট চালের প্রায় ৫৫ শতাংশ বোরো মৌসুমে উৎপাদন হয়। ফলন ভালো হলে সরবরাহ বাড়ে, আর বাজারে দাম কমে। এবছর বোরোতে রেকর্ড ২ কোটি ১৪ লাখ টন চাল উৎপাদন হয়েছে।

চাল বিক্রেতারা বলছেন, মিল মালিক ও মজুদদাররা সিন্ডিকেট করেই এই দাম বাড়িয়েছেন। আর মিল মালিকরা বলছেন, মজুদ কমে যাওয়া ও ধানের দাম বাড়ার কারণেই বাড়তি চালের দাম। তবে ক্ষুব্ধ মত ক্রেতাদের। তারা বলছেন, কৃষকের কাছে ধান নেই, মিল মালিকরা ধান মজুত করে কৃত্রিম সংকট তৈরি করে চালের বাজার অস্থির করে তুলেছেন। এদিকে খাদ্য উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদার জানিয়েছিলেন, বাজারে নজরদারি আছে। ওএমএস ও খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি চালু হলেই দাম কমে আসবে। তবে কোন কিছুতেই চালের দাম কমেনি।

বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বগুড়া শহরের বেশিরভাগ বাজারে প্রতি কেজি বিআর-২৮ চাল মানভেদে ৬০-৬৫, যা আগে ছিল ৫৪-৬০, বিআর-৪৯ চাল ৬০-৬৫, আগের দাম ৫৫-৫৮, রঞ্জিত ৬০ টাকা, আগের দাম ৫৫-৫৮, কাটারিভোগ ৭৫-৭৮, যা আগে ছিল ৬৫-৭০, মিনিকেট চাল ৭০-৮০, আগের দাম ৬৫-৭০ এবং নাজিরশাইল চাল আগে ৭৫ টাকায় বিক্রি হলেও বর্তমানে তা কয়েক দফায় দাম বেড়ে ৮০ টাকা কেজিতে বিক্রি হতে দেখা যায়। দীর্ঘ সময় ধরে চালের এই বাড়তি দামে অস্থির হয়ে পড়েছেন নিম্ন আয়ের মানুষ, চাপ বাড়ছে তাদের সংসার খরচে।

ক্রেতারা বলছেন, হঠাৎ করে চালের দাম অনেক বেড়ে গেছে। আগে যে দামে চাল কিনেছি, এখন তার চেয়ে ৫-১০ টাকা পর্যন্ত বাড়তি দামে তা কিনতে হচ্ছে। সব ধরনের চালের দামই বেড়েছে। এভাবে হঠাৎ চালের দাম বেড়ে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন নিম্ন আয়ের খেটে খাওয়া মানুষ। ক্ষোভ প্রকাশ করে তারা বলেন, কৃষকরা যখন ধান বিক্রি করে তখন দাম থাকে না, আর এখন চাল কিনতে গেলে চালের দাম বেশি।

আরও পড়ুন

চালের খুচরা বিক্রেতা বলছেন, যেই সময়ে ধান ওঠে, সেই সময়ে মিল মালিক বা বড় বড় ব্যবসায়ীরা মজুদ করে। যখন কৃষকের কাছে ধান থাকে না, তখন তারা বেশি দামে ধান বাজারজাত করেন। প্রতি বছরই এই সময়ে মজুদদাররা সিন্ডিকেট করে ধান ও চালের দাম বাড়ান। তাদের অভিযোগ, মজুদদারদের কারণে ধানের দাম বেশি। তাছাড়া বিভিন্ন কোম্পানি প্যাকেটজাত করার উদ্দেশে বেশি দামে চাল কিনছে। এতে করে বাজারে চালের সংকট দেখা দিয়েছে। চালের দাম বেশি হওয়ায় তাদের ব্যবসাতেও মন্দাভাব চলছে।

পাইকারি বিক্রেতারা জানান, কোরবানির ঈদে পর থেকে চিকন চালে দাম ৮ থেকে ১০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। অন্য জাতের চালে বেড়েছে ৩ থেকে ৫ টাকা। অন্যসময় খুব অল্প দাম বাড়ে। তবে এবার হুট করে কয়েক দফায় দাম বাড়তে বাড়তে এ অবস্থায় দাঁড়িয়েছে।

তবে ব্যবসায়ীদের এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন মিল মালিকরা। তারা বলছেন, হিসেব মোতাবেক বর্তমানে চালের বাজার স্থিতিশীল রয়েছে। মজুদ শেষ হয়ে যাওয়ার কারণেই দাম কিছুটা বেড়েছে। মৌসুমের শেষ সময়ে একটু বাজার বেশি থাকে। এর কারণে কিছু কিছু চালের দাম কেজিতে কিছুটা বেড়েছে।

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈলে স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা গ্রেফতার

ঠাকুরগাঁওয়ের হরিপুরে সাপেড় ছোবলে গৃহবধূর মৃত্যু

ঠাকুরগাঁওয়ে ৮শ’ পিস ট্যাপেন্টাডলস ১ গ্রেফতার

বগুড়া নন্দীগ্রামে সংবাদিকদের সাথে জামায়াত মনোনীত এমপি প্রার্থীর মতবিনিময় সভা

কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ীতে ৩৯ পিস ইয়াবাসহ মাদক কারবারি গ্রেফতার

বগুড়ায় ৮১০টি চায়নিজ ফোল্ডিং চাকু উদ্ধার, দোকানে দোকানে অভিযান