মিরপুরে আজ সিরিজের শেষ টি- টোয়েন্টি
পাকিস্তানকে হোয়াইটওয়াশ করার অভিযানে বাংলাদেশ

স্পোর্টস ডেস্ক: ২০১৫ সালে মিরপুরে শের-ই-বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে পাকিস্তানের বিপক্ষে প্রথম ওয়ানডে সিরিজ জয়ের ইতিহাস গড়ে বাংলাদেশ। ওই সিরিজে পাকিস্তানকে ৩-০ তে হোয়াইটওয়াশ করেছিল স্বাগতিকরা। এরপর গত বছর পাকিস্তানের বিপক্ষে প্রথম টেস্ট সিরিজ জয়ের রেকর্ডও গড়ে তারা। দুই টেস্টের সিরিজে পাকিস্তানকে তাদের মাটিতে ২-০ ব্যবধানে হোয়াইটওয়াশ করার নৈপুণ্য দেখায় বাংলাদেশ। চলতি জুলাইয়ে ঘরের মাঠে পাকিস্তানের বিপক্ষে প্রথম টি-টোয়েন্টি সিরিজ জিতেছে বাংলাদেশ। তাও আবার এক ম্যাচ হাতে রেখেই! হাতে থাকা সেই শেষ টি- টোয়েন্টি শুরু হচ্ছে আজ সন্ধ্যায়। ভেন্যু সেই মিরপুর। তাহলে কি এবার টি-টোয়েন্টিতেও প্রথম সিরিজ জয়ের পাশাপাশি পাকিস্তানকে হোয়াইটওয়াশ করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ?
এ সিরিজটি বাংলাদেশের জন্য একট হিসেব বরাবর করার সিরিজও বটে। গত মে-জুনে পাকিস্তান সফরে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ ৩-০ ব্যবধানে হেরে এসেছে বাংলাদেশ। ওই সিরিজে পাকিস্তানের কাছে পাত্তাই পায়নি তারা। কিছুদিনের ব্যবধানে ঠিক অনুরূপভাবে ফিরতি সিরিজে বাংলাদেশের সামনে এসে দাঁড়াতে পারছে না পাকিস্তান! সিরিজের প্রথম দুই ম্যাচে বাংলাদেশ স্রেফ উড়িয়ে দিয়েছে সফরকারীদের। যেভাবে সিরিজে প্রভাব দেখিয়ে খেলছে স্বাগতিকরা, তাতে সিরিজ ৩-০ হওয়াটাই প্রত্যাশিত। আজ পাকিস্তানকে হোয়াইটওয়াশ করার অভিযানেই নামছে বাংলাদেশ।
খুবই কঠিন এক দুঃসময় পার করে আসার পর অন্য চেহারায় দেখা যাচ্ছে বাংলাদেশকে। গত মে মাসে টি-টোয়েন্টি দলের অধিনায়কের দায়িত্ব পান লিটন কুমার দাস। পরিবর্তিত একটি দলের নেতৃত্ব পেয়ে একের পর এক সিরিজ হেরে তোপের মুখে পড়েন নতুন অধিনায়ক। পাকিস্তান সফরের আগে সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিপক্ষে তিন ম্যাচের প্রস্তুতিমূলক সিরিজে অংশ নেয় বাংলাদেশ। এ সিরিজে অখ্যাত আমিরাতের কাছে ২-১ ব্যবধানে হেরে বসে দলটি। এরপর পাকিস্তান সফরটি কেটেছে এক দুঃস্বপ্নের মতো। টানা সিরিজ হারের যন্ত্রণার সঙ্গে যোগ হয় তীব্র সমালোচনা। ব্যক্তিগত ফর্মহীনতায় অধিনায়ক লিটনও হয়ে পড়েন কোণঠাসা। দেয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়ার মতো অবস্থায় শ্রীলঙ্কা সফরে যায় বাংলাদেশ। সেখানে রূপকথার গল্পের মতো ঘুরে দাঁড়াল তারা। দোর্দণ্ড প্রতাপ দেখিয়ে শ্রীলঙ্কাকে তাদের মাটিতে টি-টোয়েন্টি সিরিজে হারায় বাংলাদেশ ২-১ ব্যবধানে। শ্রীলঙ্কার মাটিতে পাওয়া সাফল্যের ধারাবাহিকতা পাকিস্তান সিরিজেও ধরে রাখল তারা। দেশে-বিদেশে দাপটের সঙ্গে টানা দুটি সিরিজ জিতে বাংলাদেশ বার্তা দিল-আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে ক্রিকেটে এখন আমরাও বদলে যাওয়া দল। যারা শুধু ম্যাচই নয়, সিরিজও জিততে জানে।
আরও পড়ুনপাকিস্তান সিরিজে আলোচনায় এসেছে মিরপুরের উইকেট। তবে মিরপুরের যে উইকেটে খেলছে বাংলাদেশ, সেটি নিয়ে এত আলোচনার কিছু নেই। সিরিজের প্রথম ম্যাচ শেষে পাকিস্তান কোচ মাইক হেসন বলেছেন, আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের জন্য মিরপুরের উইকেট ‘মানসম্মত নয়’ ও ‘অগ্রহণযোগ্য’। তবে দুই প্রথম দুই ম্যাচে পাকিস্তানের ব্যাটিং দশায় দৈন্যতার জন্য উইকেটের চেয়ে তাদের দায়টা ব্যাটারদেরই বেশি। জুলাইয়ের বর্ষায় মিরপুরে এমন স্লো এবং গ্রিপিং উইকেটই মিলবে- সেটা জানার জন্য বড় ক্রিকেট বিজ্ঞানী হওয়ার প্রয়োজন নেই। এটা ওপেন সিক্রেট একটা বিষয়। এমন উইকেটে ব্যাটারদের স্কিল দেখানোর একটা বিষয় থাকে। যা পাকিস্তানের ব্যাটিং লাইনআপে অনুপস্থিত ছিল। এমন উইকেটে খেলার জন্য যেমন হোমওয়ার্কের প্রয়োজন ছিল তার কিছুই দেখা যায়নি পাকিস্তানের ব্যাটিং লাইনআপে। দুই ম্যাচেই তাদের টপঅর্ডার ভয়াবহভাবে ব্যর্থ। সিরিজে হারের জন্য দলটির এই ব্যাটিং ব্যর্থতাই দায়ী, উইকেট থেকে অজুহাত খোঁজা দায় এড়ানো ছাড়া আর কিছু নয়। এই একই উইকেটে তো বাংলাদেশও খেলেছে এবং জিতেছে।
আজ সিরিজের শেষ ম্যাচে পাকিস্তান সেই ব্যাটিং ব্যর্থতা কাটিয়ে উঠতে না পারলে শূন্য হাতে দেশে ফিরবে। আর বাংলাদেশ সিরিজ রাঙাবে ৩-০’র আনন্দে।
মন্তব্য করুন