সংবাদ সম্মেলন
টিএমএসএস বায়ো-মলিকুলার ল্যাব দেশের প্রথম পূর্ণাঙ্গ জেনেটিক ল্যাব

স্টাফ রিপোর্টার : বগুড়ার ঠেঙ্গামারায় টিএমএসএস মেডিকেল কলেজ ও রফাতুল্লাহ কমিউনিটি হাসপাতালে স্থাপিত ‘টিএমএসএস বায়ো-মলিকুলার ল্যাব’ দেশের প্রথম পূর্ণাঙ্গ জেনেটিক ও মলিকুলার ল্যাব, যা ক্যান্সারসহ বিভিন্ন জেনেটিক রোগ নির্ণয়ে বাংলাদেশের চিকিৎসা ক্ষেত্রে এক যুগান্তকারী অর্জন বলে জানানো হয়েছে। আজ রোববার (১৩ জুলাই) বগুড়া প্রেস ক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে টিএমএসএস বায়ো-মলিকুলার ল্যাব প্রধান, সহযোগী অধ্যাপক (হিস্টোপ্যাথলজি) ডা. ডিএম আরিফুর রহমান এসব তথ্য জানান।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন টিএমএসএস’র প্রতিষ্ঠাতা নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপিকা ড. হোসনে আরা বেগম, টিএমএসএস’র উপ-নির্বাহী পরিচালক ডা. মতিউর রহমান, অস্ট্রেলিয়ার মিহেলথঅমিক্স’র চেয়ারম্যান ও সিইও প্রফেসর ড. পল মেইনওয়ারিং, জিং-টেকনোলজিস’র এমডি মোসাদ্দেক শহীদ, আইএসও পরিদর্শক প্যাট্রিক মাতেটা এবং মিসেস শিলা উডকক, টিবিএল’র কিউসি ব্যবস্থাপক ড. ফরহাদ আহমেদসহ বিভাগীয় প্রধানগণ, ডাক্তারগণ ও কর্মকর্তাবৃন্দ।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয় টিএমএসএস ২০২২ সাল থেকে বগুড়ার ঠেঙ্গামারায় ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট সুপার স্পেশালাইজড ক্যান্সার সেন্টার পরিচালনা করে আসছে। যেখানে রয়েছে ক্যান্সার স্ক্রিনিং, সিটি স্ক্যান, এমআরআই, হিস্টোপ্যাথলজি, ইমিউনোহিস্টো কেমিস্ট্রি ও রেডিওথেরাপিসহ আধুনিক চিকিৎসা সুবিধা। ল্যাবটিতে বিশ্বের সর্বাধুনিক নেক্সট জেনারেশন সিকোয়েন্সিং (এনজিএস) প্রযুক্তি ব্যবহার করা হচ্ছে, যা ক্যান্সার নির্ণয়ে জিনগত তথ্য বিশ্লেষণ করে রোগীর জন্য সুনির্দিষ্ট চিকিৎসার দিকনির্দেশনা দেবে।
এছাড়া রয়েছে রিয়েল-টাইম পিসিআর, জেনেটিক অ্যানালাইজার, ইমিউনোহিস্টোকেমিস্ট্রি এবং লিকুইড বায়োপসি প্রযুক্তি, যা রোগ নির্ণয়কে করেছে আরও নির্ভুল ও দ্রুত। সংবাদ সম্মেলনে জানান হয়, ল্যাবটিতে ২০২৫ সালের জুন পর্যন্ত ইতোমধ্যেই ১৯২টির বেশি জটিল জেনেটিক ক্যান্সার পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে। পরীক্ষাগুলোর মধ্যে ছিল- স্তন ক্যান্সার, লিউকোমিয়া, থাইরয়েড ক্যান্সার, ফুসফুস ও কোলন ক্যান্সার। ল্যাবটি এখন আন্তর্জাতিক মানের আইএসও ১৫১৮৯ স্বীকৃতির প্রক্রিয়ায় রয়েছে, যা সম্পন্ন হলে এটি হবে দক্ষিণ এশিয়ার প্রথম আন্তর্জাতিক মানের আইএসও স্বীকৃত মলিকুলার ল্যাব।
আরও পড়ুনটিএমএসএস প্রতিষ্ঠাতা ড. হোসনে আরা বেগম বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্য সাশ্রয়ী ব্যয়ে আধুনিক চিকিৎসা সেবা জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেওয়া। মানুষকে জিনতাত্ত্বিক ক্যান্সার ও জটিল রোগ শনাক্তের জন্য আর বিদেশমুখী হতে হবে না।
আমরা চাই বাংলাদেশের প্রতিটি মানুষ উন্নত বিশ্বের মতোই নির্ভুল জিনগত রোগ নির্ণয় ও চিকিৎসা গ্রহণের সুযোগ পান। ল্যাবটি চিকিৎসা ক্ষেত্রে এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে, যেখানে ক্যান্সারসহ জটিল রোগগুলোর সঠিক এবং প্রিসিশন চিকিৎসা আমাদের দেশেই সম্ভব হবে।’
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ল্যাবটিকে ভবিষ্যতে একটি পূর্ণাঙ্গ গবেষণা কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলার পরিকল্পনা রয়েছে, যেখানে জিনতাত্ত্বিক ভিত্তিতে নতুন ওষুধ ও থেরাপি উদ্ভাবনের কাজ চলবে। উন্নত বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও একদিন ক্যান্সার হবে নিরাময়যোগ্য রোগ, আর সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নের পথে এই ল্যাব হবে এক অনন্য মাইলফলক।
মন্তব্য করুন