ভিডিও বৃহস্পতিবার, ০৫ জুন ২০২৫

দেশি দা-ছুরির জায়গা নিচ্ছে বিদেশি চাকু-চাপাতি, ব্যস্ততা কমেছে কামারশালায়

দেশি দা-ছুরির জায়গা নিচ্ছে বিদেশি চাকু-চাপাতি, ব্যস্ততা কমেছে কামারশালায়

স্টাফ রিপোর্টার : কুরবানি ঈদের আর মাত্র তিন দিন বাকি। ঈদকে কেন্দ্র করে ঢিমেতালে চলা কামার বাড়িগুলো একটু যেন নড়েচড়ে বসেছে। তবে এবার দেশীয় তৈরি দা-ছুরির স্থান দখল করেছে বিদেশি ছুরি-চাপাতি। এবারের ঈদে অনেকেই কুরবানি দিচ্ছেন না।

আর এসব কারণেই এবার কামারশালায় নতুন ক্রেতা কম। তবে পুরনো দা-বটি-চাকুতে ধার দিয়ে নিচ্ছেন কুরবানিদাতারা। এছাড়াও অনেকেই সারাবছর অযত্নে, অবহেলায় মরিচা পড়া বটি-দা ও চাকু ধার দিয়ে নিচ্ছেন ভ্রাম্যমাণ সানদারদের কাছ থেকে।

একসময়ের সারা বছর ব্যস্ত থাকা কামারশালাগুলো এখন অনেকটাই ম্রিয়মান হয়ে পড়েছে; চীন-ভারত থেকে আমদানি করা চকচকে, হালকা ও ধারালো হাতিয়ারগুলোর কাছে। এসব বিদেশি হাতিয়ার তুলনামূলকভাবে দেখতে আকর্ষণীয় এবং দামেও কিছুটা সস্তা হওয়ায় ক্রেতারা সেগুলোর দিকেই ঝুঁকছেন বেশি। শুধুমাত্র কুরবানি ঈদ এলেই প্রাণ ফিরে পান এই শিল্পের সুনিপুণ কারিগররা।

সাথে ব্যস্ততা বাড়ে মৌসুমি বিক্রেতাদেরও। ঈদের দু’একদিন আগে শহরের রেলওয়ে ঘুমটির ওপর এবং চাঁদনী বাজার এলাকায় ক্রেতা-বিক্রেতাদের আনাগোনা বেড়ে যায়। শহরের যেসব স্থানে পুরোনা পদ্ধতির কামারশালা ছিল তা অনেকগুলো এখন আর নেই। তবে শহরের মালতীনগরের বকসিবাজার এলাকায় এখনও শ্যামল ও গৌর কর্মকারের কামারশালা এবং বাদুরতলা রেলঘুমটির পশ্চিম পাশে দুলালেরর কামারশালা এখনও টিকে আছে।

দুলাল বলেন, সারা বছর তেমন একটা ভিড় থাকে না। ঈদ এলেই ভিড়টা বাড়ে। দামের প্রসঙ্গে তিনি জানান, নতুন দা-বটি-ছুরির দাম কিছুটা বেড়েছে। কারণ লোহার দাম অনেক বেশি। তবে পুরনো প্রতিটি দা আগুনে পুড়িয়ে পিটিয়ে শান দিতে একশ’ থেকে দুইশ’ টাকা, বড় ছুরি-বটি সানাতে ৫০ থেকে ১শ’ টাকা এবং অন্যান্য ছুরি আকারভদে ৩০ টাকা থেকে ২শ’ টাকায় সানিয়ে দেওয়া হচ্ছে।

আরও পড়ুন

এই ভিড় ঈদের আগের দিনের মধ্য রাত পর্যন্ত চলবে। শহরের সুত্রাপুর এলাকার জাবির ইরবাজ তার দা এবং পশু জবাই করার ছুরি ধার দিয়ে নিয়েছেন ৫শ’ টাকায়। বললেন, এই ছুড়ি দিয়ে অনেকগুলো কুরবানি করা হয়, ছুরির মুখ পড়ে গেছে, তাই পিটিয়ে নিতে এসেছেন। দাম একটু বেশি হলেও করতে তো হবেই। এছাড়াও তিনি গরুর চামড়া ছাড়ানোর জন্য দু’টো পাতের চাকু কিনেছেন ৩শ’ টাকা দিয়ে।

শহরের সবুজবাগ এলাকায় দুই পায়ে প্যাডেল মেরে শান দিয়ে যাচ্ছেন মো. শফিকুল। বাড়ি দুপচাঁচিয়া উপজেলায়। প্রতিটি দা-বটি শান দিয়ে নিচ্ছেন ৩০ টাকা। মাইকে শানের কথা শোনার পর পাঁচতলা বাড়ি থেকে বটি এবং চাকু ধার দিতে এসেছেন গৃহবধূ সুর্বণা। বললেন, গরু কাটাকাটির কাজ ছেলেরা করে। মাংস বাড়িতে আনার পর বটি দিয়ে কাটতে হবে। এজন্য শান দিয়ে নিলাম।

এদিকে শহরের চাঁদনী বাজার এলাকায় রেডিমেট ছুরি বিক্রি হচ্ছে ১শ’ থেকে ৬শ’ টাকায়। সাইজ অনুযায়ী দা বিক্রি হচ্ছে ৩শ’ থেকে ২৫শ’ টাকায়। এখানকার দা-বটি-ছুরি বিক্রির স্থায়ী দোকানদাররাও জানান, প্রতি বছরের মতো এবার এই শিল্পের লোকজন খুব একটা ব্যবসা করতে পারবেন না, কারণ এবার এখন পর্যন্ত মানুষ দোকানে নতুন হাতিয়ার কিনতে খুব একটা ভিড়ছেন না। তবে তারা আশাবাদী ঈদের আগের দিন বেচাকেনা বাড়বে।

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

পবিত্র হজের খুতবা শুরু হয়েছে

‘নির্বাচন নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার গড়িমসি কেন ?’

জেনেভা ক্যাম্পে অভিযানে আড়াই কোটি টাকাসহ গ্রেপ্তার ১০

আদালতের চৌকাঠে শ্রীলঙ্কান ক্রিকেটাররা

গরুর মাংসের কালা ভুনা রান্না করবেন যেভাবে

বগুড়া জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের কেন্দ্রীয় ঈদগাহ মাঠের প্রস্তুতি পরিদর্শন