ভিডিও সোমবার, ০২ জুন ২০২৫

সিলেটে পানির নিচে জাফলংসহ ৩ পর্যটনকেন্দ্র, নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি

সিলেটে পানির নিচে জাফলংসহ ৩ পর্যটনকেন্দ্র, নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি

নিউজ ডেস্ক:   ভারতের মেঘালয়ের চেরাপুঞ্জিতে বৃষ্টিপাত অব্যাহত থকা ও সাথে টানা বৃষ্টিতে সিলেটে তলিয়ে গেছে গুরুত্বপূর্ণ তিনটি পর্যটনকেন্দ্র। পাহাড়ি ঢল নামছে সাদাপাথর, জাফলং ও বিছানাকান্দি পর্যটনকেন্দ্রের সীমন্ত নদী দিয়ে। এ কারণে তিন পর্যটনকেন্দ্র ভ্রমণে নিরুৎসাহিত করেছে স্থানীয় প্রশাসন। 

শনিবার (৩১ মে) দিনভর বৃষ্টিতে সিলেট নগরীর বিভিন্ন এলাকায় জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে কন্ট্রোলরুম খুলেছে সিলেট সিটি করপোরেশন। সিলেটের নদ-নদীর পানি বিপৎসীমা ছুঁই ছুঁই করছে।

আবহাওয়া অধিদপ্তর সিলেটের সূত্রে জানা গেছে, শনিবার সকাল ৬টা থেকে ৯টা পর্যন্ত সিলেটে ১ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত হয়েছে ৭ মিলিমিটার বৃষ্টি। দুপুর ১২টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত ১৫৬ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। 

এর আগে, গতকাল শুক্রবার সকাল ৬টা থেকে শনিবার সকাল ৬টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় সিলেটে ১৩২ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়।

শনিবার দুপুরে নগরীর এয়ারপোর্ট রোড, রিকাবিবাজার, আম্বরখানা, ইলেক্ট্রিকসাপ্লাই, ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসাপাতাল সড়ক, বাগবাড়ী, উত্তর বাগবাড়ী এলাকা, মিরাবাজার, সুরমাতীরের মহাজনপট্টি, কালিঘাট, কাষ্টঘর, উপশহর-সুবহানীঘাট সংলগ্ন এলাকা, বিমানবন্দর, চৌকীদেখী, শাহপরাণ, কদমতলী ও সংলগ্ন এলাকা, কাজিরবাজার, তালতলা, জামতলা, মাছিমপুর ইত্যাদি এলাকার রাস্তাাঘাটগুলো বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে যায়। ভারী বৃষ্টিতে তলিয়ে গিয়েছিল নগরীর প্রাণকেন্দ্র জিন্দাবাজার চৌহাট্টা এলাকাও। বৃষ্টি কিছুটা কমলে জিন্দাবাজার, চৌহাট্টা পয়েন্ট থেকে পানি নেমে গেলেও অন্য এলাকায় এখনো জলাবদ্ধতায় দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন সাধারণ মানুষ।


স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সীমান্তবর্তী উপজেলা গোয়াইনঘাট, কোম্পানীগঞ্জ, জৈন্তাপুর, জকিগঞ্জ ও কানাইঘাট উপজেলার নিম্নাঞ্চলে দ্রুত পানি বাড়ছে। গোয়াইনঘাট উপজেলার পর্যটনকেন্দ্র জাফলং ও বিছনাকান্দি এবং কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার পর্যটনকেন্দ্র সাদাপাথর পানিতে প্লাবিত হয়েছে। এসব স্থানে পর্যটকদের ভ্রমণে নিরুৎসাহিত করা হয়েছে।

গোয়াইনঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রতন কুমার অধিকারী বলেন, “উপজেলার গোয়াইনঘাট-রাধানগর সড়কের নিচু অংশের অংশবিশেষ প্লাবিত হয়েছে। পাহাড়ি ঢল ও বৃষ্টি অব্যাহত থাকায় কিছু কিছু এলাকায় পানি বাড়ছে। ঢলের এই সময় পর্যটনকেন্দ্র ভ্রমণ ঝুঁকিপূর্ণ। আমরা বলব, পর্যটকদের পরিস্থিতির খোঁজ নিয়ে পর্যটনকেন্দ্রে যেতে।”
কোম্পানীগঞ্জের ইউএনও আজিজুন্নাহার বলেন, “উপজেলায় ৩৫টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। তবে আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে এখনো কারো আশ্রয় নেওয়ার প্রয়োজন পড়েনি।” 

আরও পড়ুন

তিনি বলেন, “উজানে বৃষ্টি হচ্ছে, সাদাপাথর দিয়ে ঢল নামাটা স্বাভাবিত। আমাদের সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।”
অন্যদিকে সিলেটে ভারী বর্ষণের ফলে সিটি করপোরেশন এলাকায় বিভিন্ন স্থানে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। এই পরিস্থিতি মোকাবেলায় দ্রুত ও কার্যকর পদক্ষেপ নিতে সিলেট সিটি করপোরেশন (সিসিক) একটি কন্ট্রোল রুম স্থাপন করেছে।

জলাবদ্ধতা নিরসনে প্রয়োজনীয় তদারকি এবং জরুরি যোগাযোগের জন্য এই কন্ট্রোল রুম সিলেট সিটি করপোরেশন কার্যালয়ের দ্বিতীয় তলায়, কনফারেন্স রুমের কক্ষ নম্বর ২০৫ -এ চালু করা হয়েছে। জরুরি প্রয়োজনে যোগাযোগের দায়িত্বে রয়েছেন নির্বাহী প্রকৌশলী আলী আকবর (মোবাইল: ০১৭১১৯০৬৬৪৭)।

পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সিলেটের নির্বাহী প্রকৌশলী দীপক রঞ্জন দাশ বলেন, “শুক্রবার ২৪ ঘণ্টায় ভারতের মেঘালয়ের চেরাপুঞ্জিতে ৪১০ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। এটাই সতর্কবার্তা। ভারতে বৃষ্টি হলেই পাহাড়ি ঢল সীমান্তের নদ-নদী দিয়ে সিলেটে আসে। ফলে নদ নদীর পানি বাড়ছে। সারি-গোয়াইন ও ধলাই নদের পানি বিপৎসীমা ছুঁই ছুঁই করছে। সিলেটের প্রধান দুই নদী সুরমা, কুশিয়ারাসহ সব নদ-নদীর পানি বাড়ছে। বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকলে বন্যার শঙ্কা রয়েছে সিলেটে।”

সিলেটের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শের মাহবুব মুরাদ বলেন, “আমরা সতর্ক অবস্থানে রয়েছি। পর্যটনকেন্দ্রগুলোর দিকে নজর রাখছি।” 

গোয়াইনঘাট উপজেলা পরিদর্শনে গেছেন বলে জানান জেলা প্রশাসক। আতঙ্কিত না হওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, “বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় স্থানীয় প্রশাসনকে প্রস্তুতি নিতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।”

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

ঈদে ফিরছে ‘ব্যাচেলর পয়েন্ট’ নতুন রূপে

বাংলাদেশের কৃষি গবেষণায় সহযোগিতা করবে চীন

সমাবেশে নারীকে লাথি মারা সেই জামায়াতকর্মী গ্রেফতার

হোয়াইট ওয়াশ এড়াতে পাকিস্তানকে ১৯৭ রানের সহজ লক্ষ্য দিল বাংলাদেশ

ইশরাকের শপথ সংক্রান্ত আদেশের কপি পেল ইসি

দুগ্ধজাত খাবার পুষ্টি নিশ্চিতের পাশাপাশি দৈহিক ও মানসিক বিকাশ করে- ডিসি হোসনা আফরোজা