অটোরিকশা থেকে লাফ দিয়ে রক্ষা পেল অপহৃত যুবক, আটক ৪

নিউজ ডেস্ক: টাঙ্গাইলের সাবালিয়া পানির ট্যাংকির পৌর বাজার থেকে ছানোয়ার হোসেন নামের এক ব্যক্তি অপহরণের শিকার হয়ে নিজ বুদ্ধিমত্তায় অপহরণকারীদের অটোরিকশা থেকে লাফ দিয়ে জনগণের সহায়তায় রক্ষা পান। এ সময় একজন পালালেও অপহরণকারী দলের বাকি ৪ সদস্য জনতার হাতে আটক হন।
মঙ্গলবার বিকালে মধুপুর থানায় অভিযোগ দিয়েছেন অপহৃত ছানোয়ারের ছোট ভাই মুহাইমিনুল ইসলাম হৃদয় নামের গণমাধ্যমকর্মী।
মো. ছানোয়ার হোসেন (৪২) ভূঞাপুর উপজেলার কোনাবাড়ী গ্রামের আব্দুস ছাত্তার ওরফে সুরমানের ছেলে। তিনি এখন টাঙ্গাইল সদরের সাবালিয়া এলাকায় বসবাস করছেন।
আটক অপহরণকারীরা হলেন- টাঙ্গাইল সদর উপজেলার সাবালিয়ার চৌধুরী মালঞ্চ এ/পি এলাকার ইমদাদুল হকের ছেলে মো. ফিরোজ অর রশিদ (৩৫), সাইফুল ইসলামের ছেলে মো. রাকিব (১৯), একই জেলার বাসাইল উপজেলার আইশরা গ্রামের মৃত সৈয়দ মকবুলের ছেলে সৈয়দ শরিফ (৫৩) এবং গোপালপুর উপজেলার মোহনপুর গ্রামের মৃত আব্দুল গফুরের ছেলে মো. ফেরদৌস রহমান (৩৮)।
মুহাইমিনুল ইসলাম হৃদয় জানান, অপহরণকারীরা সোমবার রাত ৮টার দিকে ছানোয়ার হোসেন টাঙ্গাইল সদরের সাবালিয়া পানির ট্যাংকির পৌর বাজার থেকে অপহরণ হন। তিনি বাজার করে বাসায় যাওয়ার জন্য রাস্তার পাশে রিকশার অপেক্ষা করছিলেন।
সংঘবদ্ধ অপহরণকারী দল অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে এ সময় তাকে জোর করে সিএনজিতে উঠিয়ে অজ্ঞাতনামা স্থানে নিয়ে মারপিট করে। ফিরোজ অর রশিদ ১০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে আধঘণ্টার মধ্যে বাসা থেকে আনতে নির্দেশ দেন। এ সময়ের মধ্যে দিতে না পারায় অঙ্ক বাড়িয়ে পরে ২০ লাখ টাকা দাবি করে তারা।
আসামিরা অজ্ঞাত স্থান থেকে তাকে নিয়ে সিএনজিযোগে টাঙ্গাইল থেকে মধুপুর বনের দিকে যাত্রা করেন। এদিক ওদিক তাকাতে দেননি। সিএনজির ভিতরে তাকে হাতুড়ি দিয়ে শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতে জখম করেন। দাবিকৃত টাকা না দিলে তারা মধুপুর বনের মধ্যে নিয়ে খুন করে লাশ গুম করতে মাটিতে পুঁতে রাখার হুমকি দেন।
মধুপুর বাসস্ট্যান্ডে অবস্থান করা আব্দুল হালিম জানান, রাত ২টার দিকে মধুপুর বাসস্ট্যান্ডে বিসমিল্লাহ হোটেলের সামনে পৌঁছালে সিএনজির গতি হালকা হয়। একজন তাকে বলেন, মধুপুর কলেজ কোন দিকে। হাত দিয়ে ইশারায় দেখানোর সময় হঠাৎ সিএনজি থেকে লাফ দিয়ে রাস্তায় পড়ে ‘বাঁচাও বাঁচাও’ আমাকে অপহরণ করা হয়েছে’ চিৎকার করলে তিনি ও স্থানীয় লোকজন এগিয়ে আসেন। স্থানীয় জনগণ অপহরণকারী দলের কাছ থেকে তাকে উদ্ধার এবং অপহরণকারীদের আটক করেন। এ সময় দলের একজন পালিয়ে যেতে সক্ষম হন। স্থানীয়দের কাছ থেকে খবর পেয়ে থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে অপহরণকারী দলের চার জনসহ অপহৃত ছানোয়ারকে হেফাজতে নেয়।
অপহৃত ছানোয়ারের আত্মীয় মধুপুরের লাল মিয়াসহ একাধিক স্বজন জানান, ছানোয়ারকে মধুপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসার পর অপহরণকারীদের সঙ্গে থানা গারদে রাখা হয়। তারা অভিযোগ করেন, অপহরণকারীদের রহস্যজনক পরিচয়ে দীর্ঘ সময় মামলা নিয়ে নানা জল্পনা কল্পনা চলে। অবশেষে মামলার সিদ্ধান্ত হয়।
মধুপুর থানার ওসি এমরানুল কবির জানান, অভিযোগ নেওয়া হয়েছে। মামলার প্রক্রিয়া চলছে।
মন্তব্য করুন