বগুড়ায় প্রাথমিকে প্রধান শিক্ষকের ৯০৩টিসহ ১,১৩২টি শিক্ষকের পদ শূন্য

স্টাফ রিপোর্টার : বগুড়ায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে ১ হাজার ১৩২টি শিক্ষকের পদ শূন্য রয়েছে। এরমধ্যে প্রধান শিক্ষকের পদ খালি রয়েছে ৯০৩টি এবং সহকারী শিক্ষকের ২২৯টি পদ। জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস এই তথ্য জানিয়েছে।
সূত্র জানিয়েছে, বগুড়া জেলায় ১ হাজার ৬০১টি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। এর মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য রয়েছে ৯০৩টি। প্রধান শিক্ষকের পদোন্নতিযোগ্য শূন্য পদ রয়েছে ৮৬৩টি এবং সরাসরি নিয়োগের মাধ্যমে শূন্য পদ রয়েছে ৪০টি।
এছাড়া সহকারী শিক্ষকের ২২৯টি শূন্য পদ রয়েছে। প্রাথমিক জেলা শিক্ষা অফিসের পরিসংখ্যান অনুযায়ী সবচেয়ে বেশি সংখ্যক শিক্ষকের পদ শূন্য রয়েছে যমুনা ও বাঙালি নদী বেষ্টিত ধুনট, সারিয়াকান্দি, সোনাতলা ছাড়াও গাবতলী উপজেলায়য়। সবচেয়ে কম সংখ্য শিক্ষকের পদ শূন্য রয়েছে দুপচাঁচিয়া উপজেলায়।
সবচেয়েয়ে বেশি সংখ্যক প্রধান শিক্ষকের শূন্য পদ রয়েছে ধুনট উপজেলায়। ওই উপজেলায় ১৫৫টি শূন্য পদ রয়েছে, এরমধ্যে ১১৮টি স্কুলে প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য রয়েছে। এছাড়া ওই উপজেলায় সরকারি শিক্ষকের শূন্যপদ রয়েছে ৩৭টি। বগুড়া সদর উপজেলায় শূন্যপদ রয়েছে ৭৩টি। এরমধ্যে প্রধান শিক্ষকের শুন্য পদ রয়েছে ৭২টি এবং সহকারী শিক্ষকের শূন্য পদ রয়েছে ১টি।
আদমদীঘি উপজেলায় শূন্যপদ রয়েছে ৮২টি। এরমধ্যে প্রধান শিক্ষকের শূন্যপদ রয়েছে ৫৭টি এবং সহকারী শিক্ষকের শূন্যপদ রয়েছে ২৫টি। কাহালু উপজেলায় ৬৫টি শূন্যপদ রয়েছে। এরমধ্যে প্রধান শিক্ষকের ৫৭টি এবং সহকারী শিক্ষকের ৮টি। গাবতলী উপজেলায় ১২২টি পদ শূন্য রয়েছে। এরমধ্যে প্রধান শিক্ষকের ১০২টি এবং সহকারী শিক্ষকের ২০টি।
দুপচাঁচিয়া উপজেলায় শুধুমাত্র প্রধান শিক্ষকের ৪৫টি পদ শূন্য রয়েছে। নন্দীগ্রাম উপজেলায় ৬৩টি পদ শূন্য রয়েছে। এরমধ্যে প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য রয়েছে ৫৬টি এবং সহকারী শিক্ষকের ৭টি পদ খালি রয়েছে। শিবগঞ্জ উপজেলায় ৮৫টি শিক্ষকের পদ শূন্য রয়েছে। এর মধ্যে প্রধান শিক্ষকের ৭৮টি এবং সহকারী শিক্ষকের ৭টি পদ শূন্য রয়েছে। শেরপুর উপজেলায় ৮৫টি শূন্য পদের মধ্যে প্রধান শিক্ষকের ৭৩টি এবং সহকারী শিক্ষকের ১২টি রয়েছে।
আরও পড়ুনসারিয়াকান্দি উপজেলায় ১৫১টি শূন্যপদের মধ্যে প্রধান শিক্ষকের ৯৯টি এবং সহকারী শিক্ষকের ৫২টি পদ রয়েছে। সোনাতলা উপজেলায় ১২০টি শূন্যপদের মধ্যে প্রধান শিক্ষকের ৭৫টি এবং সহকারী শিক্ষকের ৪৫টি পদ শূন্য রয়েছে। এছাড়া শাজাহানপুর উপজেলায় ৮৬টি শূন্যপদের মধ্যে প্রধান শিক্ষকের ৭১টি এবং সহকারী শিক্ষকের ১৫টি পদ শূন্য রয়েছে।
সূত্র জানিয়েছে, প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে প্রধান শিক্ষক দুটি প্রক্রিয়ায় নিয়োগ হয়। জ্যেষ্ঠতা অনুযায়ী পদোন্নতির মাধ্যমে এবং পিএসসি (পাবলিক সার্ভিস কমিশন) এর মাধ্যমে সরাসরি নিয়োগ। এরমধ্যে ৬৫ শতাংশ পদোন্নতির মাধ্যমে নিয়োগ হয়। তবে মামলার কারণে প্রায় এক যুগ ধরে পদোন্নতির মাধ্যমে প্রধান শিক্ষক নিয়োগ বন্ধ রয়েছে। ২০০৯ সালে একটি মামলার কারণে সারা দেশে পদোন্নতির মাধ্যমে প্রধান শিক্ষকের শূন্য পদ পূরণ বন্ধ হয়ে যায়।
এতে হাজার হাজার প্রধান শিক্ষকের পদ বছরের পর বছর শূন্য থাকে। ২০১৪ সালে ওই মামলার নিষ্পত্তি হয়। কিন্তু একই বছর প্রধান শিক্ষকের পদ দ্বিতীয় শ্রেণিতে উন্নীত করা হয়। এতে প্রধান শিক্ষক পদে নিয়োগ ও পদোন্নতি পিএসসির অধীনে চলে যায়।
ফলে আবার বন্ধ হয়ে যায় পদোন্নতির মাধ্যমে শূন্য পদ পূরণ। পরে ২০১৭ সালের ২৩ মে থেকে প্রধান শিক্ষকের শূন্য পদে চলতি দায়িত্ব দেওয়া হয় সহকারী শিক্ষকদের। তবে পিএসসি’র মাধ্যমে নিয়োগ চালু রয়েছে। বগুড়া জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. রেজোয়ান হোসেন করতোয়া’কে জানান, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষক নিয়োগের বিষয়টি চলমান থাকলেও মামলার কারণে নিয়োগ প্রক্রিয়া বন্ধ রয়েছে। তবে খুব শিঘ্রী ওই মামলার নিষ্পত্তি হবে বলে আশা করা যাচ্ছে।
মামলাটির নিষ্পত্তি হলেই পদোন্নতির মাধ্যমে নিয়োগ প্রক্রিয়া চালু হবে। তবে পিএসসির মাধ্যমে নিয়োগ চালু রয়েছে। গত মাসেও বগুড়ায় বেশ ক’জন প্রধান শিক্ষক নিয়োগ হয়েছে। তারা খুব শিঘ্রী যোগদান করবেন।
মন্তব্য করুন