সিরাজগঞ্জের কাজিপুরে শতাধিক বাড়িতে তৈরি হচ্ছে হাতপাখা, বিক্রি হচ্ছে হাটেবাজারে

কাজিপুর (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি : বাঙালির হাজার বছরেরও পুরোনো সঙ্গী হাতপাখা। প্রচন্ড কাঠফাটা গরমে যখন নাভিশ্বাস অবস্থা তখনই শীতলতার পরশ বুলিয়ে দেয় হাতে থাকা একখানা পাখা। এই আধুনিক যুগের বাঙালির জীবন যাপনে অতি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হাতপাখা। যখন বিদ্যুৎ ছিল না তখন হাতপাখাই ছিল শীতল হওয়ার অন্যতম ভরসা।
গত কয়েকদিন প্রকৃতিতে বইছে তপ্ত হাওয়া। তীব্র তাপদাহে পুড়ছে সারাদেশ। দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে সাধারণ মানুষের জীবন। এমন সময়ে সাধারণ মানুষ স্বস্তি পেতে হাত বাড়ায় হাতপাখার দিকে। কাজিপুরের হাটবাজার গুলোতে হাতপাখার বিক্রি বেড়েছে অনেক বেশি। সুতার পাখার পাশাপাশি তালপাতার পাখাও কিছু তৈরি হয়।
বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে হাতপাখা বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদিত হয়। সিরাজগঞ্জের কাজিপুরেও এখন এই পাখা তৈরি হচ্ছে। সুতা ও কাপড়ের তৈরি পাখা চৈত্র সংক্রান্তি মেলা, বৈশাখী মেলা, বারুণী মেলা, পহেলা বৈশাখের বিশেষ মেলায় বিক্রি হচ্ছে। দিনদিন গরমের আধিক্যের কারণে হাতপাখার কদরও বাড়ছে পাল্লাা দিয়ে।
শুধু গ্রামে নয় শহরেও দিন দিন এর চাহিদা বাড়ছে। উপজেলার ভানুডাঙ্গা, কুনকুনিয়া, শিমুলদাইড়, বর্শিভাঙ্গায় অনেক মহিলা শখের বশে সুই সুতা দিয়ে বাহারি নকশার হাতপাখা তৈরি করছেন। চাহিদার কারণে এখন অনেকে পেশা হিসেবেও হাত পাখা তৈরিকে বেছে নিয়েছেন।
আরও পড়ুনশিমুলদাইড় গ্রামে বিধবা রমিছা খাতুন জানান, নিজের দরকারে নকশা কইরা বেচন (হাতপাখা) বাইছি। এখন অনেকেই আমার কাছে কিনতে আসে। তাই সারাবছর অবসর সময়ে বানাই। আর গরমে বেইচা দিই। বাড়ি থেকেই পাইকার এসে নিয়ে যান। এই গরমে চাহিদা বেড়েছে।
তিন বছর যাবৎ হাতপাখা তৈরি করে তা বিক্রি করছেন ছালাভরা গ্রামের সখিতন। তিনি জানান, নিজে নিজেই সুতা দিয়ে নানা নকশা কইরা পাখা বানাই। আমার স্বামী তা বাজারে বিক্রি করে। বিশেষ করে এহন বিভিন্ন মেলায় নিয়ে বেঁচে দেন। এতে করে বেশকিছুু বাড়তি টাকা হাতে আসে।
কাজিপুরের মাইজবাড়ি চরের বাসিন্দা রমজান মিয়া জানান, চরের অনেক এলাকায় এখনো বিদ্যুৎ নেই। বিশেষ করে বিদু্যুৎহীন শ্রীপুর, বদুয়ারপাড়া, সুতানারা, মল্লিকপাড়া, ভাঙ্গারছঁও, নতুন মাইজবাড়ি, ফুলজোড়, আমন মেহার, চর আদিত্যপুরসহ প্রায় কুড়িটি গ্রামের গরমের একমাত্র ভরসা হাতপাখা। তাই যারা বানান তাদের বাড়ি থেকে পাইকারি কিনে নিয়ে এসব গ্রামে ও হাটে বিক্রি করি।
মন্তব্য করুন