বটমক্লিন রেসওয়ে পদ্ধতিতে মাছ চাষে সফল রাজশাহীর মেহেদী

রাজশাহী প্রতিনিধি : বটমক্লিন রেসওয়ে পদ্ধতি। এ পদ্ধতিতে অল্প জায়গায় মাছ চাষ করে স্বাভাবিকের চেয়ে উৎপাদন দ্বিগুণ হয়। রাজশাহী জেলার চারঘাট উপজেলার উদ্যোক্তা মেহেদী হাসান ইউটিউবে দেখে এ পদ্ধতিতে মাছ চাষ করে সফলতা পেয়েছেন। তার সফলতায় প্রতিদিন দূর-দূরান্ত থেকে বটমক্লিন রেসওয়ে পদ্ধতিতে মাছ চাষের পরামর্শ নিতে আসছেন নতুন উদ্যোক্তারা।
উদ্যোক্তা মেহেদী হাসান রাজশাহীর চারঘাট উপজেলার ইউসুফপুর ইউনিয়নের বাদুড়িয়া গ্রামের বাসিন্দা। রাজশাহী কলেজ থেকে প্রাণিবিদ্যা বিভাগে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ফিশারিজে মাষ্টার্স করেন মেহেদী। উপজেলায় তিনিই প্রথম সম্পূর্ণ নিজ অর্থায়নে আধুনিক প্রযুক্তি নির্ভর বটমক্লিন রেসওয়ে পদ্ধতিতে মাছ চাষ শুরু করেন।
জানা গেছে, মেহেদী হাসান নিজ এলাকায় পুকুর ইজারা নিয়ে মাছ চাষ শুরু করেন। তিনি ইউটিউব দেখে বটম ক্লিন পদ্ধতিতে মাছ চাষে আগ্রহী হন। এরপর ২০২০ সালের শুরুতে বাড়ির পাশের ৫০ শতক জমিতে ৪ হাজার বর্গফুট জায়গায় গড়ে তোলেন অর্গানিক ফিশ ফার্ম নামে মাছের খামার। মাছ ও মাছের খাবার, সবক্ষেত্রে জৈব পদ্ধতি অনুসরণ করেন মেহেদী। পানিতে অ্যামোনিয়া কমানোর জন্য রেসওয়ে পদ্ধতি অনুসরণ করেন।
দেখা যায়, প্রায় ২০ লাখ টাকা ব্যয়ে এই ফিশ ফার্ম গড়ে তুলেছেন উদ্যোক্তা মেহেদী হাসান। ফার্মে দুটি ট্যাংক রয়েছে, যার আয়তন ৪ হাজার বর্গফুট। মাত্র ১২০ দিনে এই ফার্মে ৮ হাজার কেজি মাছ উৎপাদন হয়। মাছের খাদ্য হিসেবে ব্যবহার করছেন নিজের উৎপাদিত গমের আটা ও ভুসি এবং অর্গানিক ফিড। তার খামারে বর্তমানে টেংরা, কৈ, শিং ও গুলশা মাছ চাষ করা হচ্ছে।
আরও পড়ুনউদ্যোক্তা মেহেদী হাসান বলেন, ছোটবেলা থেকেই ইচ্ছা ছিল গ্রামে কিছু করা। উদ্দেশ্য ছিল নিজের কর্মসংস্থানের পাশাপাশি গ্রামের মানুষের জন্য কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করা। এই ইচ্ছা থেকেই অর্গানিক ফিশ ফার্ম নামে খামার শুরু করি।’
তিনি আরও বলেন, প্রাথমিক অবস্থায় দুটি ট্যাংকে প্রায় ৪ হাজার বর্গফুট জায়গায় শিং, কৈ ও গুলশা জাতের তিন প্রজাতির মাছ চাষ করেছি। গত দেড় বছরে এই মাছ চাষে খরচ হয়েছে প্রায় ৫ লাখ টাকা। তবে এ পর্যন্ত প্রায় ১১ লাখ টাকার মাছ বিক্রি করেছি।
আরও কিছু মাছ খামারে আছে। মাছের পোনা নওগাঁ ও বগুড়া থেকে সংগ্রহ করতে হয়। এজন্য মাছের উৎপাদন খরচ কিছুটা বেড়ে যায়। তবে এখন খামারেই পোনা উৎপাদনের কার্যক্রম শুরু হয়েছে। ফলে উৎপাদন খরচ কমে যাবে।
মন্তব্য করুন