বগুড়ায় শ্রমিক সংকটে ধান কাটা-মাড়াই নিয়ে দুঃশ্চিতায় কৃষক

স্টাফ রিপোর্টার : বগুড়ায় বোরো ধান ঘরে তোলার শুরুতেই দেখা দিয়েছে শ্রমিক সংকট। ফলন ভাল হলেও শ্রমিক সংকট এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগের আশংকায় দুঃশ্চিন্তায় রয়েছেন কৃষক। কৃষি বিভাগ প্রাকৃতিক দুর্যোগের আশংকায় দ্রুত ধান কাটার পরামর্শ দেয়ার কারণে বাধ্য হয়ে চড়া দামে শ্রমিক নিয়ে ধান কাটা মাড়াই শুরু করেছেন বিভিন্ন এলাকার কৃষক।
বগুড়া কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ সূত্রে জানাগেছে, চলতি মৌসুমে ১ লক্ষ ৮৫ হাজার ৫৯০ হেক্টর জমিতে বোরো ধান চাষ করা হয়েছে। এই পরিমাণ জমি থেকে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে চাল আকারে ৭ লক্ষ ৭৭ হাজার ৪৭৪ মেট্রিক টন। এবার ফলন ভাল হওয়ায় কৃষি বিভাগ আশা করছে উৎপাদন আরো অনেক বেশী হবে। কৃষি বিভাগের মতে জেলায় শতকরা ৮০ ভাগ জমির ধান পেকেছে। গত এক সপ্তাহ আগে থেকে ধান কাটা মাড়াইও শুরু হয়েছে।
জেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে কৃষক বোরো ধান ঘরে তোলা নিয়ে ব্যস্ত। তবে শ্রমিক সংকট থাকায় ধান কাটা মাড়াই ধীরগতিতে চলছে বলে কৃষক জানিয়েছেন। নন্দীগ্রাম উপজেলার রিধইল গ্রামের কৃষক ফজলুর রহমান এবার ১৫ বিঘা জমিতে মিনিকেট জাতের ধান চাষ করেছেন। ফলনও হয়েছে ভাল। কিন্তু ধান ঘরে তোলার জন্য পর্যাপ্ত শ্রমিক পাচ্ছেন না।
তিনি বলেন, গত বছর শ্রমিকদের একবেলা খাওয়াসহ চার হাজার টাকায় প্রতি বিঘা ধান কাটা মাড়াই করা হয়েছে।এবার একই জমির ধান কাট মাড়াই করতে শ্রমিক খরচ হচ্ছে ছয় হাজার টাকা। তিনি আরো জানান, এবার ফলন ভাল হওয়ায় বিঘা প্রতি ২২ থেকে ২৫ মণ ধান পাওয়া যাচ্ছে। ধানের দামও রয়েছে ভাল। আজ শনিবার কাটা মাড়াই এর পর জমি থেকেই তিনি প্রতিমণ ধান এক হাজার ২৮০ টাকা মণ দরে বিক্রি করেছেন।
গাবতলী উপজেলার রানীরপাড়া গ্রামের কৃষক আরিফুর রহমান রিবন বলেন, উত্তরাঞ্চল থেকে ধানকাটা শ্রমিক কম আসায় শ্রমিক সংকট দেখা দিয়েছে। শহরে রিক্সা চালায় এমন লোকজন ধান কাটার কাজ করছে চড়া দামে।তিনি বলেন দুই বেলা খাওয়া ছাড়াও ৭৫০ টাকা দিন মজুরি দিয়ে ধান কাটা মাড়াই করতে হচ্ছে।
আরও পড়ুনদুপঁচাচিয়া উপজেলার আমসষ্ট গ্রামের কৃষক মোজাহার হোসেন বলেন, কয়েকদিন হচ্ছে আবহাওয়া ভাল না, যে কোন সময় ঝড় বৃষ্টি হলে কৃষকের সর্বনাশ হয়ে যাবে। কিন্তু পর্যাপ্ত শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছে না ধান কাটা মাড়াই করার জন্য।কৃষি বিভাগ থেকে দ্রুত ধান কেটে ঘরে তোলার জন্য তাগিদ দেয়া হচ্ছে। ধান কাটা- মাড়াই নিয়ে এলাকার কৃষক চরম দুঃশ্চিতায় রয়েছেন।
বগুড়া কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক সোহেল মোঃ সামছুদ্দিন ফিরোজ বলেন, প্রাকৃতিক দুর্যোগের আশাংকায় যে সকল জমির ৮০ ভাগ ধান পেকে গেছে সে সকল জমির ধান কেটে ঘরে তোলার জন্য কৃষকদের পরামর্শ দেয়া হয়েছে। তিনি বলেন, বোরো চাষের জন্য।
কৃষি বিভাগের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১ লক্ষ ৮৭ হাজার ২০০ হেক্টর জমি। কিন্তু ভুট্টার চাষ বেড়ে যাওয়ার কারণে প্রায় দুই হাজার হেক্টর কম জমিতে বোরো চাষ হলেও এবার ফলন ভাল হয়েছে। এবার বোরো ধানের ফলন হয়েছে চাল আকারে হেক্টর প্রতি ৪ দশমিক১৩ মেট্রিক টন।
মন্তব্য করুন