কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারীতে তিন বছরেও বাঁধ নির্মাণ কাজ শুরু করতে পারেনি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান

ভূরুঙ্গামারী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি : কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারীতে তিন বছরে এক ইঞ্চি তীর রক্ষা বাঁধ নির্মাণ করতে পারেনি এসএ-এসআই প্রাইভেট লিমিটেড এন্ড টিআই জেভি নামের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। বাঁধ নির্মাণ না হওয়ায় ওই এলাকার মানুুষের মাঝে ভাঙন আতঙ্ক বিরাজ করছে। বাঁধ নির্মাণের নির্ধারিত সময় শেষ হয়ে অতিরিক্ত আরও দেড় বছর পেরিয়ে গেছে। এছাড়া ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের লোকজনের বিরুদ্ধে স্থানীয়দের কাছ থেকে টাকা নিয়ে গা ঢাকা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
জানা গেছে, কুড়িগ্রামের মধ্যদিয়ে প্রবাহিত দুধকুমার নদের ভাঙন ঠেকাতে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড দুধকুমার নদ ব্যবস্থাপনা ও উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ করে। এই প্রকল্পের আওতায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি বিগত ২০২২ সালের ১ মে ভূরুঙ্গামারীর তিলাই ইউনিয়নের দক্ষিণছাট গোপালপুর গ্রামে ১০ কোটি ২৫ লাখ ৯১ হাজার ৩০ টাকা ব্যয়ে ৫শ’ মিটার তীর সংরক্ষণ বাঁধ (প্যাকেজ নম্বর-১০) নির্মাণ কাজ শুরু করে। বাঁধ নির্মাণের নির্ধারিত সময় ধরা হয়েছিল ১৪ মাস, যা ২০২৩ সালের ২৯ জুন সমাপ্ত হওয়ায় কথা ছিল। বাঁধ নির্মাণ শুরুর পর প্রায় তিন বছর পার হলেও এ পর্যন্ত এক ইঞ্চি বাঁধ নির্মিত হয়নি।
ভাঙন কবলিত ওই স্থানে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান জরুরিভিত্তিতে কিছু জিও ব্যাগ ফেলে। এরপর বাঁধ নির্মাণের জন্য কিছু সিসি ব্লক তৈরি করে ফেলে রাখে। পরে গত বছরের মার্চের মাঝামাঝি প্রতিষ্ঠানটি লোকজন বাঁধ নির্মাণ শুরু না করে গা ঢাকা দেয়।
ভাঙন কবলিত বীর মুক্তিযোদ্ধা মকবুল হোসেন বলেন, তীর রক্ষা বাঁধ নির্মাণ শুরু হলে দুধকুমার নদের তীরে বসবাস করা মানুষের মাঝে স্বস্তি ফিরে এসেছিল। কিন্তু এক বছরযাবৎ বাঁধ নির্মাণ বন্ধ থাকায় তীরে বসবাস করা মানুষের মনে ভাঙন আতঙ্ক বিরাজ করছে।
জেসমিন বেগম ও মর্জিনা বেগম বলেন, কিছুদিন পরে বর্ষা আরম্ভ হবে। এর আগে বাঁধ নির্মাণ শেষ না হলে আমাদের আবারও নদী ভাঙনের শিকার হতে হবে। আমাদের আর কোথাও যাওয়ার জায়গা নেই।
আরও পড়ুনভাঙন কবলিত এলাকার মুদি দোকানী আব্দুল হালিম বলেন, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ম্যানেজার বিভিন্নভাবে তের হাজার টাকা নিয়েছে। ফোন দিলে ফোন ধরে না। স্থানীয় বাসিন্দা পাপ্পু বলেন, ঠিকাদারের লোক আমার কাছ থেকে বিশ হাজার টাকা ধার নিয়েছে।
কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রাকিবুল হাসান বলেন, ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে নোটিশ পাঠানো হয়েছে। তাদের সাথে আলোচনা চলছে।
এদিকে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কেউ প্রকল্প এলাকায় না থাকায় বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি।
মন্তব্য করুন