ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈলে সরিষার বাম্পার ফলনের আশা

রাণীশংকৈল (ঠাকুরগাঁও) প্রতিনিধি : দিগন্ত জোড়া মাঠে মাঠে হলুদের সমারোহ। মাঠের পর মাঠ শুধু হলুদের বিশাল গালিচা, যতো দূরে চোখ পড়ে শুধু হলুদ আর হলুদ। চির সবুজের বুকে যেন কাঁচা হলুদের আলপনা। সরিষা ফুলের হলুদ রাজ্যে এখন মৌমাছির গুঞ্জনে মুখরিত।
ফুলে ফুলে মৌমাছিরা মধু আহরণে ব্যস্ত। প্রকৃতিতে হলুদ বর্ণে শোভা পাচ্ছে বিস্তীর্ণ সরিষার মাঠ। চারদিক ছড়িয়ে পড়ছে ফুলের গন্ধের সুবাস। পরিবেশকে করে তুলেছে মোহনীয়। সেই মোহনীয় পরিবেশ ও হলদে আভার পরশ নিতে ক্ষেতে ছুটছেন প্রকৃতিপ্রেমী উৎসুক অনেকেই। সেই সাথে সরিষা ফুলের ছবি তুলতে ভিড় করছেন নানা বয়সী মানুষ। ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈল উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে এমন দৃশ্য।
আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে চলতি মৌসুমে এ উপজেলায় সরিষার উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাওয়ার আশা করছেন কৃষকেরা। তাই তো ভালো ফলনের আশায় উপজেলার কৃষকেরা রাতদিন পরিশ্রম করে যাচ্ছে। কৃষকের পাশাপাশি বসে নেই কৃষি অধিদপ্তরের কর্মকর্তারাও।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে রাণীশংকৈল উপজেলার ১টি পৌরসভাসহ ৮টি ইউনিয়নের অধিকাংশ কৃষকেরা তাদের জমিতে উচ্চ ফলনশীল বারি-১৪, বারি-১৭, বারি-১৮ ও বিনা সরিষা-৯ আবাদ করেছেন। সরিষা একটি লাভজনক ঝুঁকিমুক্ত ফসল। সরিষার আবাদ বৃদ্ধিতে সরকার কৃষকদের বীজ, সার ও পরামর্শ দিয়ে উদ্বুদ্ধ করছে। সরিষা চাষ সম্প্রসারণের জন্য কৃষি বিভাগ অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছে।
আরও পড়ুনএ মৌসুমে সরিষা আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ৬ হাজার ৪২৫ হেক্টর জমি নির্ধারণ করা হয়েছে। যা গত মৌসুমে সরিষার অর্জিত লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ৬ হাজার ৯৫০ হেক্টর। গত বছরের তুলনায় এবার কিছুটা কম। তবে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর আশা করছে আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে উপজেলায় এ মৌসুমে প্রায় ১ হাজার ১০৪ মেট্রিক টন সরিষা কৃষক ঘরে তুলতে পারবে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ শহীদুল ইসলাম জানান, সরকার দেশে ভোজ্য তেলের আমদানি নির্ভরতা কমাতে সরিষা ও তেলজাতীয় ফসল আবাদের ওপর জোর দিয়েছে। রাণীশংকৈল উপজেলায় একটি তেল জাতীয় ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধিকরণ প্রকল্প চলমান রয়েছে।
এ প্রকল্পের কার্যক্রমের কারণে উপজেলায় সরিষার আবাদ ও ফলন প্রতিবছর বৃদ্ধি পাচ্ছে। এরই অংশ হিসেবে উপজেলার প্রায় ৫৬০ হেক্টর ৪ হাজার ২শ’ কৃষকের মাঝে বিনামূল্যে সরিষার বীজ ও সার বিতরণ করা হয়েছে। ইতোমধ্যে গত এক বছরেই দেড়গুণ উৎপাদন বাড়ানোর পাশাপাশি জনসংখ্যা অনুপাত হিসেবে ৪০-৫০ ভাগ সরিষার চাহিদা পূরণ হবে।
মন্তব্য করুন