ভিডিও বৃহস্পতিবার, ১৫ মে ২০২৫

চিনিকলের জমিতে খেজুর বাগান রসে ভরা বোচাপুকুর গ্রাম

চিনিকলের জমিতে খেজুর বাগান রসে ভরা বোচাপুকুর গ্রাম, ছবি : দৈনিক করতোয়া

ঠাকুরগাঁও জেলা প্রতিনিধি : ভোরের কুয়াশাভেদ করে পূর্বদিকে সূর্যের আভা। কুয়াশার সাগরে ডুবে তখনো অদৃশ্য সবুজ দিগন্ত। এর মধ্যেই খেজুরের টাটকা রসের স্বাদ নিতে তীব্র শীত আর কুয়াশা উপেক্ষা করে বাগানে ভিড় করছে শত শত রসপ্রেমী।

অন্যদিকে নরম ঘাসের শিশির মাড়িয়ে হাঁড়ি ভরা খেজুরের রস গাছ থেকে নামিয়ে আনেন গাছিরা। আর সেই রস জ্বাল দিয়ে তৈরি করা হয় সুস্বাদু খেজুরের গুড়। এমন দৃশ্য চোখে পড়ে ঠাকুরগাঁও সদরের নারগুন ইউনিয়নের বোচাপুকুর গ্রামের খেজুর বাগানে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ঠাকুরগাঁও সুগারমিলের ১৬ বিঘা জমিতে রোপণ করা সাত শতাধিক ছোট-বড় খেজুরগাছ নিয়ে বোচাপুকুর গ্রামে গড়ে ওঠে ওই বাগান। এবার বাগানটি সাড়ে আট লাখ টাকায় দুই বছরের জন্য লিজ নেন সেলিম নামেন স্থানীয় এক বাসিন্দা। গাছিরা জানান, প্রতিদিন ভোর থেকে সকাল ৮টা-৯টা পর্যন্ত গাছ থেকে রস সংগ্রহ করেন তারা।

পরে টিনের বড় তাওয়ায় জ্বাল দেওয়া হয় রস। ধীরে ধীরে রস শুকিয়ে রূপ নেয় সুস্বাদু গুড়ে। বিশেষ কিছু প্রক্রিয়া সেরে একপর্যায়ে তরল গুড় ঢালা হয় নির্দিষ্ট পাত্রে। পরে জমাট বেঁধে তৈরি হয় ঐতিহ্যবাহী হাজারি, পাটালি, নারকেলি, দানা, ঝোলাসহ হরেক রকমের গুড়। প্রতি কেজি গুড় বাগানে বিক্রি হয় ৩শ’ থেকে ৪শ’ টাকা কেজি।

গতকাল রোববার ভোরে বোচাপুকুর এলাকায় সরেজমিনে দেখা যায়, গাছ থেকে সরাসরি কাঁচা রস পান না করার ব্যাপারে স্বাস্থ্য বিভাগের সতর্কতা সত্ত্বেও এর স্বাদ নিতে বিভিন্ন যানবাহনে করে দূর-দূরান্ত থেকে ছুটে আসছে রসপ্রেমীরা। ভোরের আলো ফোটার আগেই শত শত মানুষের আগমনে এলাকাটি উৎসবমুখর হয়ে ওঠে।

আরও পড়ুন

পঞ্চগড় থেকে এসেছেন গাছি রাজন মাহমুদ ও তার নেতৃত্বে ছয় সদস্যের দল। তিনি বলেন, শীত মৌসুমে টানা ৩-৪ মাস রস সংগ্রহ ও গুড় তৈরির এ প্রক্রিয়া চলবে। এতে দিনপ্রতি তাদের মজুরি পড়ে ১ হাজার ২শ’ টাকা। গুড় তৈরির মৌসুম শেষে ফিরে যাবেন নিজ এলাকায়।

আরেক গাছি সাদ্দাম হোসেন বলেন, প্রতিটি খেজুরগাছ থেকে ১০-১২ লিটার রস হাঁড়িতে পড়ে। ৫ থেকে ৬ হাজার লিটার রস থেকে গুড় তৈরি হয় ১শ’ কেজির মতো। বাগান লিজ নেওয়া মো. সেলিম বলেন, এই বাগানের খেজুর গুড়ের স্বাদ প্রসিদ্ধ জেলাগুলোর মতোই। কাঁচা রস বিক্রির পাশাপাশি নির্ভেজাল খেজুরের গুড়ও তৈরি হচ্ছে। প্রতিদিন বাগানে বিক্রি হচ্ছে ১০ থেকে ১২ হাজার টাকার গুড় ও রস।

ঠাকুরগাঁও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক সিরাজুল ইসলাম বলেন, রাসায়নিক মুক্ত নিরাপদ গুড় তৈরিতে উদ্যোক্তাদের সব ধরনের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। খেজুর গুড়ের সুনাম ধরে রাখতে গাছের সংখ্যা বাড়াতে জেলা কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

রংপুরের বদরগঞ্জে যমুনেশ্বরীর অব্যাহত ভাঙনে ‘জলুবরের’ অস্তিত্ব হুমকির মুখে

নীলফামারীতে স্কুলছাত্রী অপহরণ ও ধর্ষণের দায়ে যুবকের ১৩ বছর কারাদন্ড

রংপুরে স্বর্ণের দোকানে চুরি

বগুড়ায় ৪ আগস্টের ঘটনায় ছাত্রলীগ ও স্বেচ্ছাসেবকলীগের ৫ নেতাকর্মী রিমান্ডে

জনবল সংকটে রংপুর বিভাগের অধিকাংশ সরকারি হাসপাতাল

বগুড়ায় জাতীয় সঙ্গীত গাওয়া কর্মসূচিতে হামলা