বগুড়া সারিয়াকান্দির চরাঞ্চলে কাঁচা মরিচ উত্তোলন শুরু, কমছে দাম

সারিয়াকান্দি (বগুড়া) প্রতিনিধি : সারিয়াকান্দির বিভিন্ন চরাঞ্চলে কাঁচা মরিচ উত্তোলন শুরু হয়েছে। চরাঞ্চল জুড়ে কেবলই বিভিন্ন জাতের হাইব্রিড মরিচের চাষ। বাজারে ভালো দাম পেয়ে খুশি কৃষক। এদিকে নতুন মরিচ বাজারজাত হওয়ায় কমেছে কাঁচা মরিচের দাম।
মরিচ চাষের জন্য বিখ্যাত বগুড়ার সারিয়াকান্দিতে প্রতি বছরের মত এ বছরও কৃষকরা বন্যার পানি নামার পর পরই জমিতে বিভিন্ন জাতের হাইব্রিড মরিচ চাষ করেছেন। তবে এ বছর মৌসুমের শেষের দিকে দেরিতে বৃষ্টিপাতের কারণে আগাম ভাবে রোপণকৃত মরিচে রোগবালাই বেশি হয়েছে এবং মরিচের পচন রোগও বেশি হয়েছে।
এতে বার বার পুরাতন গাছের পাশে নতুন মরিচের চারা খোসা দিতে হয়েছে। তবে সকল চড়াই উৎরাই পেরিয়ে আবহাওয়া অনুকূলে আসায় মরিচ গাছে প্রচুর পরিমাণে মরিচ ধরেছে এবং পরিপক্ক হয়েছে। তাই কৃষকেরা এখন মরিচ উত্তোলন এবং তা বাজারজাত করতে ব্যস্ত সময় পার করছেন। পুরুষের পাশাপাশি উপজেলার অনেক নারী কাঁচা মরিচ উত্তোলন করে জনপ্রতি ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা পর্যন্ত দিন মুজুরি পাচ্ছেন।
উপজেলার সদর ইউনিয়নের পারতিত পরল গ্রামের লেবু মিয়া জানান, প্রতিবছরের মত এ বছর তিনি ১০ বিঘা জমিতে হাইব্রিড জাতের মরিচ চাষ করেছেন। এ বছর চারা লাগানোর পর পরই অতিবৃষ্টির কারণে ক্ষেতে পচারি রোগের আক্রমণ হয়।
এ কারণে শুরুর দিকে মরিচ গাছের অবস্থা ভালো না থাকলেও পরবর্তীতে পরিচর্যার কারণে এবং ভালো আবহাওয়ার জন্য মরিচ গাছে অনেক মরিচ ধরেছে। এ পর্যন্ত তিনি ৩ বার করে মরিচ উত্তোলন করেছেন। প্রত্যেকবার বিঘাপ্রতি ৫ থেকে ৮ মণ করে মরিচ পেয়েছেন। বাজারে প্রতিমণ মরিচ ২৮০০ টাকা থেকে ৪ হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি করেছেন।
আরও পড়ুনসারিয়াকান্দির পাইকারি ব্যবসায়ী রফিকুল ইসলাম জানান, এ উপজেলার বিভিন্ন আড়ৎগুলোতে প্রচুর পরিমাণে কাঁচা মরিচ আমদানি হতে শুরু করেছে। উপজেলার যমুনাতীর ঘেঁষে ৪ থেকে ৫ টি কাঁচামালের আড়ৎ গড়ে উঠেছে। প্রতিটি আড়ৎ এ প্রতিদিন ১৫০ থেকে ২০০ মণ পর্যন্ত মরিচের আমদানি হচ্ছে। প্রতিমণ মরিচ সাদা ২১০০ থেকে ২২০০ টাকা এবং কালো ২৮০০ থেকে ৩০০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে।
সারিয়াকান্দি উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্য অনুযায়ী, গত বছর এ উপজেলায় ৩ হাজার ৩১০ হেক্টর জমিতে মরিচ উৎপন্ন হয়েছিল। উৎপাদন হয়েছিল ৪ হাজার ৭৫০ মেট্রিক টন শুকনা মরিচ। এ বছর উপজেলায় মরিচ চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ৩২০০ হেক্টর জমিতে। কিন্তু মরিচ বপন বা রোপনকালীন সময়ে বৈরী আবহাওয়ায় জন্য ৩ হাজার ১৭০ হেক্টর জমিতে মরিচ চাষ হয়েছে।
সারিয়াকান্দি উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল হালিম বলেন, শুরুর দিকে বৈরী আবহাওয়ার জন্য মরিচগাছের সমস্যা দেখা দিলেও আমাদের পরামর্শে এবং পরবর্তীতে অনুকূল আবহাওয়ার কারণে এখন বিভিন্ন এলাকায় মরিচের ফলন বেশ ভালো হয়েছে।
কৃষকেরা কাঁচা মরিচ বাজারে বিক্রি করছেন এবং ভালো দাম পেয়ে লাভবান হচ্ছেন। এতে বাজারে মরিচের সংকট দূর হয়েছে এবং আগের তুলনায় এখন মরিচের দাম তুলনামূলক কমেছে।
মন্তব্য করুন