পাবনায় ভুয়া কবিরাজকে ৫টি মাথার খুলি ও সরঞ্জামসহ গ্রেপ্তার

পাবনা প্রতিনিধি : প্যারালাইসিস, জ্বীন ভুতের আছর, স্বামীর সংসার জোড়া লাগানো, ভাঙা প্রেমে জোড়া লাগানো, মনের মানুষকে পাওয়ার ব্যবস্থা, বাচ্চাদানে অক্ষমদের বাচ্চা হওয়ানোর ব্যবস্থাসহ বিভিন্ন রোগের চিকিৎসার কথা বলে সাধারণ মানুষের সাথে প্রতারণা করে আসছিলেন তিনি।
এমনই এক ভুয়া কবিরাজ ও প্রতারকের সন্ধান মিলেছে পাবনার আটঘরিয়ায়। রেজাউল করিম (৪৫) নামের ওই ভুয়া কবিরাজকে আটকের পর এক মাসের সশ্রম কারাদন্ড দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। গতকাল সোমবার দুপুরে আটঘরিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নাহারুল ইসলাম তাকে এই কারাদন্ড দেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার (আরএমও) ডা. কামরুজ্জামান, জেলা এনএসআই পাবনার সহকারী পরিচালক, থানা পুলিশসহ এলাকাবাসী। দন্ডপ্রাপ্ত ভুয়া কবিরাজ হলেন- আটঘরিয়া পৌরসভার ধলেশ্বর মহল্লার মৃত আবু বক্কার হোসেনের ছেলে রেজাউল করিম (৪০)।
পুলিশ ও ভ্রাম্যমাণ আদালত সূত্র জানায়, কবিরাজ রেজাউল করিম দীর্ঘদিন ধরে অসহায় মানুষকে ভুল বুঝিয়ে নানা রকম অপচিকিৎসা দিয়ে আসছিলেন।পাবনা জেলার জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থার (এনএসআই) তথ্যের ভিত্তিতে গতকাল সোমবার বেলা ১১টা থেকে ২টা পর্যন্ত ধলেশ্বর মহল্লার রেজাউলের বাড়ির আস্তানায় অভিযান পরিচালনা করেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট।
তার আস্তানা থেকে ৫টি মাথার খুলি, তজবি, হিন্দু ধর্মের বই, ত্রিশূল, একটি লোহার বড় চেইন, শঙ্খ, সিঁদুর, স্বামীর সংসার জোড়া লাগানো একটি মেয়ের ছবিসহ আরও বিভিন্ন গাছগাছালির ছাল জব্দ করা হয়। পরে সেখানে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন ২০০৯ সালের ৪১ ধারায় দোষী সাব্যস্ত করে ভুয়া কবিরাজ রেজাউলকে এক মাসের সশ্রম কারাদন্ড প্রদান করা হয়।
আরও পড়ুনএলাকাবাসী জানান, রেজাউল করিম গত চার/পাঁচ বছর ধরে বিভিন্ন এলাকার মানুষকে বলে আসছিলেন আমার কাছে হিন্দু জ্বীন আছে, আমার মেয়ের কাছে মুসলমান জ্বীনও আছে। এসব জ্বীন সৌদি আরবের মক্কা-মদিনা, ভারতের কামরুপ কামাখ্যা প্রদেশ থেকে আসে।
প্যারালাইসিস, জ্বীন ভুতের আছর, স্বামীর সংসার জোড়া লাগানো, ভাঙা প্রেমে জোড়া লাগানো, মনের মানুষকে পাওয়ার ব্যবস্থা করে দেওয়া হয় বলে দাবি করতেন তিনি। এছাড়া যৌন মিলনে অক্ষম, বিবাহিত মেয়েদের বাচ্চাদানে অক্ষমদের বাচ্চা হওয়ানোর ব্যবস্থা করাসহ বিভিন্ন রোগের চিকিৎসা করার কথা বলে সাধারণ মানুষকে দীর্ঘদিন ধোঁকা দিয়ে আসছিলেন।
তিনি চিকিৎসা বাবদ মজুরি হিসেবে নগদ অর্থ, মুরগি, পাঠা ছাগল নিতেন। এ বিষয়ে আটঘরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নাহারুল ইসলাম বলেন, ’ভুয়া কবিরাজকে আটক করে এক মাসের কারাদন্ড দেওয়া হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে সাধারণ মানুষদের ধোঁকা দিয়ে বিপুল অর্থ হাতিয়ে নিতো সে।
এসব অপকর্মের আরও কোন সন্ধান পাওয়া গেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সেইসাথে মানুষকে আরও সচেতন হওয়ার পরামর্শ দেন তিনি।’
মন্তব্য করুন