কাজল কিনতে গিয়ে ধর্ষণের শিকার স্কুলছাত্রী :ধর্ষকের যাবজ্জীবন

কুমিল্লায় কাজল কিনতে গিয়ে ধর্ষণের শিকার হয় এক স্কুলছাত্রী (১৩)। ধর্ষণের শিকার হয়ে অন্তঃসত্ত¡া হওয়ার পর বিষয়টি নজরে আসে স্বজনদের। পরে ভুক্তভোগীর বাবা একটি মামলা করেন। ঘটনার চার বছর পর অভিযুক্তকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড দিয়েছেন আদালত।
মঙ্গলবার জেলার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১-এর বিচারক মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মামুন এই রায় দেন।
রায়ে বিচারক উল্লেখ করেন, ধর্ষণের শিকার শিশুর গর্ভের সন্তান তার মা কিংবা তার আত্মীয়স্বজনের তত্ত¡াবধানে রাখা যাবে। সন্তান তার বাবা অথবা মা কিংবা উভয় পরিচয়ে পরিচিত হতে পারবে। সন্তানের বয়স ২১ (একুশ) বছর হওয়া পর্যন্ত তার ভরণপোষণের ব্যয় রাষ্ট্র বহন করবে। সন্তানের ভরণপোষণের অর্থ সরকার ধর্ষক আলাউদ্দিনের নিকট থেকে আদায় করতে পারবে। এ ছাড়াও আসামির বিরুদ্ধে আরোপিত অর্থদন্ডের অর্থ ধর্ষণের শিকার শিশুর ক্ষতিপূরণ হিসাবে গণ্য করা হবে। অর্থ পরিশোধ না করলে আসামির সম্পত্তি নিলামে বিক্রয় করে সেই টাকা ওই শিশুকে ক্ষতিপূরণ হিসেবে দেওয়ার জন্য কুমিল্লা জেলা প্রশাসককে নির্দেশ দেওয়া হলো।
এসব তথ্য জানিয়েছেন রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি (স্পেশাল পিপি) অ্যাডভোকেট প্রদীপ কুমার দত্ত।
দন্ডপ্রাপ্ত আলাউদ্দিন কুমিল্লা জেলার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার বাতিসা ইউনিয়নের আটগ্রাম এলাকার মৃত আক্কাস আলীর ছেলে। এ সময় আসামিকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ডের পাশাপাশি দুই লাখ টাকা অর্থদন্ড অনাদায়ে আরও দুই মাসের সশ্রম কারাদন্ডের আদেশ দেওয়া হয়। এ সময় দন্ডপ্রাপ্ত আসামি আদালতের কাঠগড়ায় উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুনআইনজীবী প্রদীপ কুমার দত্ত জানান, ২০২০ সালের ১৮ জুলাই সকালে চৌদ্দগ্রাম উপজেলার এক কিশোরী (১৩) বিশ টাকা নিয়ে আলাউদ্দিনের কসমেটিক দোকানে কাজল কিনতে আসে। এ সময় আলাউদ্দিন ওই কিশোরীকে ধর্ষণ করেন। ঘটনার কয়েক মাস পর ভুক্তভোগী কিশোরী অসুস্থ হয়ে পড়ে। পরে ২০২১ সালের ১১ জানুয়ারি চৌদ্দগ্রাম স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে ওই কিশোরী ২৪ সপ্তাহ ১ দিনের অন্তঃসত্ত¡া বলে জানান চিকিৎসক। এ বিষয়ে ওই কিশোরীকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে সে আলাউদ্দিনের কথা বলে। পরে শিশুর বাবা আলাউদ্দিনকে আসামি করে চৌদ্দগ্রাম থানায় মামলা করেন। থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. কামাল উদ্দিন আসামি আলাউদ্দিনকে গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দ করেন। মঙ্গলবার সেই মামলায় রায় দিয়েছেন আদালত।
রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করে রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি (স্পেশাল পিপি) অ্যাডভোকেট প্রদীপ কুমার দত্ত বলেন, ‘আশা করছি উচ্চ আদালত এ রায় বহাল রাখবেন।’
মন্তব্য করুন