তিস্তার পানি কমলেও দুর্ভোগ বেড়েছে মানুষের, পানি বাড়ছে যমুনায়

করতোয়া ডেস্ক : পাহাড়ি ঢল আর গত কয়েকদিনের টানা ভারি বৃষ্টিতে লালমনিরহাটে তিস্তার পানি বৃদ্ধি পেলেও আবার তা নেমে গেছে। আজ মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) তিস্তা ব্যারেজের ডালিয়া পয়েন্টে ভোর ৬ টায় বিপৎসীমার ২৫ সেন্টিমিটার এবং সকাল ৯টায় বিপৎসীমার ২৮ সেন্টিমিটার নিচে তিস্তার পানি প্রবাহিত হচ্ছে। এর আগে গতকাল সোমবার সকালে ডালিয়া পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। বন্যা নিয়ন্ত্রণে তিস্তা ব্যারেজের ডালিয়া পয়েন্টে ৪৪টি জলকপাট খুলে রাখা হয়েছে।
লালমনিরহাট প্রতিনিধি জানান, উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল আর গত কয়েকদিনের টানা ভারি বৃষ্টিতে লালমনিরহাটে তিস্তার পানি বৃদ্ধি পেলেও আবার তা নেমে গেছে। আজ মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) সকাল ৭টায় বিপৎসীমার ২৫ সেন্টিমিটার এবং সকাল ১০টায় বিপৎসীমার ২৮ সেন্টিমিটার নিচে তিস্তার পানি প্রবাহিত হয়। যা বিকেল পর্যন্ত বলবৎ ছিল বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়। এর আগে গতকাল সোমবার ডালিয়া পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। বন্যা নিয়ন্ত্রণে তিস্তা ব্যারেজের এই পয়েন্টে ৪৪টি জলকপাট খুলে রাখা হয়েছিল।
এদিকে বন্যা সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানিয়েছে, আগামী দুইদিন তিস্তার পানি বাড়তে পারে। একইসাথে ধরলা ও দুধকুমার নদীর পানি সতর্কসীমার কাছাকাছি পৌঁছাতে পারে। সকাল ৭টায় কাউনিয়া পয়েন্টে তিস্তার পানি বিপৎসীমার ১৫ সেন্টিমিটার নিচে থাকলেও সকাল ১০টায় তা নেমে আসে ১৭ সেন্টিমিটারে। অপরদিকে তিস্তার পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় লালমনিরহাটের পাটগ্রাম, হাতীবান্ধা, কালীগঞ্জ, আদিতমারী ও সদর উপজেলার চরাঞ্চল ও নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে।
তবে রাতারাতি পানি নামতে শুরু করায় অনেক জায়গায় পানি কমে গেছে। বিশেষ করে পাটগ্রামের গড্ডিমারী, দোয়ানী, ছয়আনী, সানিয়াজান, সিঙ্গামারি, সিন্দুর্না, হলদিবাড়ী ও ডাউয়াবাড়ী, কালীগঞ্জের ভোটমারী, শৈইলমারী ও নোহালী, আদিতমারীর মহিষখোচা, গোবর্ধন, কালমাটি, বাহাদুরপাড়া ও পলাশী এবং সদর উপজেলার ফলিমারী, খুনিয়াগাছ, কুলাঘাট, মোগলহাট, রাজপুর, বড়বাড়ী ও গোকুন্ডা ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চলের পানি কমেছে।
খুনিয়াগাছ ইউনিয়নের আমেনা বেগম বলেন, হঠাৎ পানি বেড়ে গিয়ে অনেক পরিবার পানিবন্দি হয়েছিল। আবার পানি নেমে গেছে, তবে নানা দিক থেকে দুর্ভোগ বেড়েছে। আদিতমারীর গোর্বরধন গ্রামের আমিনুল বলেন, এখন পানি অনেক নিচে। তবে বৃষ্টি থামছে না। এতে করে কর্মহীন হয়ে পড়েছে বেশিরভাগ মানুষ।
আজ মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) লালমনিরহাটের নির্বাহী প্রকৌশলী শুণীল কুমার বলেন, আগেই জানানো হয়েছিল ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তিস্তার পানি বিপদসীমা অতিক্রম করতে পারে। গতকাল তা ওপরে উঠলেও আবার নেমে গেছে। আপাতত উজানে পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে না। তবে বৃষ্টিপাত চলমান রয়েছে। বৃষ্টি অব্যাহত থাকলে বন্যসহ নিম্নাঞ্চলগুলো প্লাবিত হয়ে পড়বে বলেও জানান তিনি।
আরও পড়ুনগঙ্গাচড়া (রংপুর) প্রতিনিধি জানান, উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও কয়েকদিনের অব্যাহত বৃষ্টিতে তিস্তার পানি বৃদ্ধি পেলেও আবার নেমে গেছে। আজ মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) তিস্তা ব্যারেজের ডালিয়া পয়েন্টে ভোর ৬ টায় বিপৎসীমার ২৫ সেন্টিমিটার এবং সকাল ৯টায় বিপৎসীমার ২৮ সেন্টিমিটার নিচে তিস্তার পানি প্রবাহিত হচ্ছে। এর আগে গতকাল সোমবার সকালে ডালিয়া পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। বন্যা নিয়ন্ত্রণে তিস্তা ব্যারেজের ডালিয়া পয়েন্টে ৪৪টি জলকপাট খুলে রাখা হয়েছে।
তিস্তার পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলার কোলকোন্দ, লক্ষীটারী, মর্নেয়া, নোহালি, গজঘন্টা ইউনিয়নের চরাঞ্চল ও নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়। তবে রাতারাতি পানি নামতে শুরু করায় অনেক জায়গায় পানি কমে গেছে। এতে স্বস্তিতে রয়েছেন তিস্তা পাড়ের বাসিন্দারা। উপজেলার লক্ষীটারী ইউনিয়নের পশ্চিম ইচলি আরজিনা বেগম (৪৫) বলেন, হঠাৎ পানি বেড়ে গিয়ে গতকাল বাড়ির আঙিনা পর্যন্ত পানি উঠেছিল। আবার পানি নেমে গেছে।
পাউবোর ডালিয়া ডিভিশনের নির্বাহী প্রকৌশলী অমিতাভ চৌধুরী বলেন, পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে ব্যারাজের সব জলকপাট খুলে রাখা হয়েছে। তবে পানি কমলেও যে কোনো সময় পানি বিপৎসীমার ওপরে উঠতে পারে।
এদিকে বন্যা সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানিয়েছে, আগামী দুইদিন তিস্তার পানি বাড়তে পারে। একইসাথে ধরলা ও দুধকুমার নদীর পানি সতর্কসীমার কাছাকাছি পৌঁছাতে পারে। ভোর ৬টায় কাউনিয়া পয়েন্টে তিস্তার পানি বিপৎসীমার ১৫ সেন্টিমিটার নিচে থাকলেও সকাল ৯টায় তা নেমে আসে ১৭ সেন্টিমিটার নিচে।
সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি জানান, উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও টানা বর্ষণের কারণে যমুনা নদীর পানি সিরাজগঞ্জ ও কাজিপুর পয়েন্টে বেড়েই চলেছে। আজ মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) সকালে যমুনা নদীর সিরাজগঞ্জ হার্ড পয়েন্টে পানির সমতল রেকর্ড করা হয়েছে ১১.৫৩ মিটার। ২৪ ঘণ্টায় ১২ সেন্টিমিটার বেড়ে বিপৎসীমার ১২৫ মিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
অপরদিকে জেলার কাজিপুর মেঘাই পয়েন্টে পানির সমতল রেকর্ড করা হয়েছে ১১.৫৩ মিটার। ২৪ ঘণ্টায় ১৩ সেন্টিমিটার বেড়ে বিপৎসীমার ১৩৭ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোখলেছুর রহমান বলেন, গত কয়েকদিন পানি অল্প কিছুটা কমলেও পুনরায় যমুনায় পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলেও বড় ধরনের বন্যার আশঙ্কা নেই বলে তিনি জানান। তবে সিরাজগঞ্জে পানি বৃদ্ধির কারণে যমুনা পাড়ের মানুষের মাঝে আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
মন্তব্য করুন