হাতুড়ি দিয়ে মাথায় আঘাত করে ক্যাশিয়ার ইকবালকে হত্যা করেছি : ঘাতক রতনের স্বীকারোক্তি

স্টাফ রিপোর্টার : বগুড়া শহরের দত্তবাড়ী এলাকায় শতাব্দী ফিলিং স্টেশনের ক্যাশিয়ার ইকবাল হোসেন হত্যাকান্ডের রহস্য উন্মোচিত হয়েছে। গ্রেফতারকৃত মূল ঘাতক রতন মিয়া (২৪) এ হত্যার দায় স্বীকার করে আজ সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর) বিকেলে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছে। সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মেহেদী হাসান তার দেওয়া জবানবন্দি ১৬৪ ধারায় রেকর্ড করে তাকে কারাগারে প্রেরণ করেছেন।
পুলিশ সূত্র জানায়, আসামি রতন স্বীকারোক্তিতে বলেছে, টাকা চুরির অপবাদ দেওয়ায় গত শনিবার দিনগত রাত আড়াইটার দিকে সে ফিলিং স্টেশনের ক্যাশরুমে ঘুমন্ত ইকবালের মাথায় হাতুড়ি দিয়ে এলোপাথারিভাবে আঘাত করে তাকে গুরুতর জখম করে। এরপর তাকে ছুরিকাঘাত ও স্লাইসরেঞ্জ দিয়ে আঘাত করে তার মৃত্যু নিশ্চিত করে টাকা ও তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোন নিয়ে পালিয়ে যায়।
এর আগে এ হত্যাকান্ডের ১২ ঘন্টার মধ্যেই গতকাল রোববার রাত সাড়ে ৮টার দিকে ডিবি বগুড়ার একটি টিম তথ্য-প্রযুক্তির সহায়তার গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার মৌচাক বাসস্ট্যান্ড এলাকায় অভিযান চালিয়ে রতনকে গ্রেফতার করে। এসময় তার কাছ থেকে ৩৬ হাজার ৫শ’ টাকা ও ইকবালের ব্যবহৃত একটি এনড্রোয়েড মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়। মোবাইল ফোনটি নিহত ইকবালের। হত্যাকান্ডের পর সেখানে পালিয়ে গিয়ে সে আত্মগোপন করেছিল।
আজ সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর) বেলা ১১টার দিকে বগুড়া ডিবি কার্যালয়ে প্রেস ব্রিফিংকালে ডিবি’র ওসি ইকবাল বাহার এই তথ্য জানান। ডিবি’র ওসি আরও বলেন, আজ সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর) তাকে আদালতে হাজির করার আগে ঘটনাস্থল ওই ফিলিং স্টেশনে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে ক্যাশরুম থেকে তার দেখানো মতে হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত একটি হাতুড়ি ও একটি স্লাইসরেঞ্জ উদ্ধার করা হয়।
এছাড়া গতকাল রোববার সকালে ওই রুম থেকে একটি রক্তাক্ত চাকুও উদ্ধার করা হয়েছে। সেইসাথে ওই রুমের সিসিটিভির ফুটেজও উদ্ধার করা হয়। ফুটেজে দেখা যায় রতন হাতুড়ি দিয়ে ঘুমন্ত ইকবারের মাথায় ১৫ সেকেন্ডে ২৩ বার আঘাত করছে।
আরও পড়ুনএদিকে, ডিবি’র জিজ্ঞাসাবাদে রতন স্বীকার করে যে, শতাব্দী ফিলিং স্টেশনে তেল পাম্প থেকে তেল ও ক্যাশ বাক্স থেকে টাকা চুরির ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিরোধের জের ধরে রতন ইকবালকে হত্যা করে। রতন আরও স্বীকার করে যে, সে এবং ইকবাল রাতের শিফটে কাজ করতো। ইকবাল পাম্প থেকে প্রতিদিনই তেল চুরি করে বিক্রি করতো।
আর এই তেল চুরির করতে গিয়ে ইকবাল মালিকের কাছে ধরাও পড়েছিল। কিন্তু দোষ না করেও তেল চুরির অপবাদ তাকেই দিয়েছিল ইকবাল। মালিক তাকে ভুল বুঝেছিলেন। এ ঘটনায় ইকবাল তাকে চড় মেরেছিল। এতে সে অপমানিত হয়। আর এতেই তার মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। প্রতিশোধ স্পৃহা জেগে ওঠে তার মধ্যে। সে ইকবালকে হত্যার পরিকল্পনা করে।
এই পরিকল্পনা অনুযায়ী সে গত শনিবার রাতে ইকবালকে হত্যা করে পালিয়েছিল। ধৃত রতন শাজাহানপুরের নিশ্চিন্তপুরের চাঁন মিয়ার ছেলে। নিহত ইকবাল সিরাজগঞ্জের পিপুলবাড়িয়া এলাকার আব্দুল করিমের ছেলে। তবে ইকবাল শহরের কাটনারপাড়া এলাকায় ভাড়া বাসায় বসবাস করে আসছিলেন।
মন্তব্য করুন