ভোলায় মসজিদের খতিবকে হত্যা: জড়িতদের বিচারের দাবিতে ৩ কর্মসূচি ঘোষণা

ভোলায় নিজ বসতঘরে ঢুকে মাওলানা আমিনুল হক নোমানী (৪৫) নামে এক মসজিদের খতিব ও মাদরাসা শিক্ষককে নৃশংসভাবে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে ভোলা ব্লকেডের হুঁশিয়ারিসহ তিন কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে।
কর্মসূচিগুলো হলো—সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর) ভোলার সব স্কুল-কলেজ ও মাদরাসা বন্ধ, বেলা ১১টায় তৌহিদী জনতার ব্যানারে সমাবেশ ও শোক র্যালি এবং জেলা প্রশাসক বরাবর স্মারকলিপি প্রদান।
আজ রোববার (৭ সেপ্টেম্বর) দুপুর আড়াইটার দিকে শহরের সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে মাওলানা আমিনুল হক নোমানীর জানাজার পূর্বে এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন হত্যাকাণ্ডের বিচারের দাবিতে গঠিত কমিটির আহ্বায়ক মোহাম্মদ মোবাশ্বিরুল হক নাঈম।
পরে জানাজায় ইমামতি করেন ভোলার প্রবীণ আলেম মাওলানা রুহুল আমিন এবং জানাজা শেষে চচরনোয়াবাদ এলাকায় পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়েছে।
এ সময় জানাজায় নিহতের পরিবারের সদস্যসহ ভোলার বিভিন্ন রাজনৈতিক সামাজিক ও বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার কয়েক হাজার মানুষ অংশ নেন। এ সময় নিহতের স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন বক্তারা।
ক্ষোভ ও উদ্ভেগ প্রকাশ করে বক্তারা বলেন, মাওলানা আমিনুল হক নোমানীর হত্যাকারীদের গ্রেপ্তারের জন্য গতরাতে ভোলার প্রশাসনকে ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দেওয়া হয়েছিল। ২৪ ঘণ্টা হতে চললেও এখনো হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার করতে পারেনি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। হত্যাকারীদের ধরতে দৃশ্যমান কোনো পদক্ষেপও দেখিনি। এ হত্যাটি ইসলামী নেতৃত্বকে শুন্য করার চক্রান্ত। আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে হত্যাকারীদের আইনের আওতায় না আনা হলে ভোলা জেলা ব্লকেড করে দেওয়ার হুঁশিয়ারি দেন বক্তারা।
আরও পড়ুনহত্যাকারীদের আইনের আওতায় এনে তাদের বিচারের দাবিতে সোমবারের ৩ কর্মসূচি পালনের পাশাপাশি আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে হত্যাকারীদের আইনের আওতায় আনার কার্যক্রম দৃশ্যমান না হলে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে পরবর্তী কার্যক্রম ঘোষণা করা হবে বলে জানানো হয়।
তারা অভিযোগ করে বলেন, এ হত্যাকাণ্ড কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়, এটি একটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। ভোলায় বিগত দিনে ঘটে যাওয়া হত্যাকাণ্ডগুলোর সঙ্গে জড়িতদের আইনের আওতায় না আনার ফলে ফের হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। আমরা ভোলায় আর কোনো নিরীহ মানুষ ও আলেম ওলামাকে হত্যার শিকার হতে দেখতে চাই না।
এর আগে, শনিবার দিবাগত রাত আনুমানিক পৌনে ৯টার দিকে শহরের চরনোয়াবাদ-সংলগ্ন বাপ্তা ৯ নম্বর ওয়ার্ডের নুরানী পাড়ায় মাওলানা এনামুল হকের বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। তিনি বাড়িতে একাই ছিলেন। পরে গুরুত্বর আহত অবস্থায় স্থানীয় বাসিন্দারা তাকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য ভোলা সদর হাসপাতালে নিলে রাত সাড়ে ৯টার দিকে তিনি চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন।
তিনি ভোলা সদর উপজেলা জামে মসজিদের খতিব ও ভোলা দারুল হাদিস কামিল মাদরাসার মুহাদ্দিস এবং ইসলামী ঐক্য আন্দোলনের জেলার সাধারণ সম্পাদক ছিলেন।
এদিকে এদিন দুপুরে ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে ভোলা সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু শাহাদাত মো. হাচনাইন পারভেজ সাংবাদিকদের বলেন, ঘটনাটি শোনার পরপরই আমরা ঘটনাস্থলে এসে তদন্ত শুরু করেছি। ডিবিসহ আমাদের একাধিক টিম কাজ করছে। তদন্ত সাপেক্ষে যারা দোষী, তাদের শনাক্ত করবো এবং আইনের আওতায় আনবো। তবে এ ঘটনায় এখনো মামলা হয়নি, নিহতের মরদেহ দাফন শেষে মামলা করবেন বলে জানিয়েছে পরিবার। এ হত্যায় ব্যবহৃত কিছু আলামত পেয়েছি।
মন্তব্য করুন