ভিডিও সোমবার, ১১ আগস্ট ২০২৫

রংপুর গঙ্গাচড়ায় দ্বিতীয় তিস্তা সেতু রক্ষা বাঁধে ধস 

রংপুর গঙ্গাচড়ায় দ্বিতীয় তিস্তা সেতু রক্ষা বাঁধে ধস, ছবি: দৈনিক করতোয়া।

গঙ্গাচড়া (রংপুর) প্রতিনিধি: রংপুরের গঙ্গাচড়ায় তিস্তা নদীর ওপর নির্মিত দ্বিতীয় তিস্তা সেতুর পশ্চিম পাশের সেতু রক্ষা ৯০০ মিটার বাঁধের প্রায় ৬০ মিটার জায়গার ব্লক ধসে গিয়ে স্থানটিতে প্রায় ৭০ ফুট গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। এতে ভাঙন ঝুঁকিতে রয়েছে লালমনিরহাট-রংপুর অঞ্চলের যোগাযোগ সড়কসহ ওই এলাকার প্রায় ১২০০ পরিবার।

স্থানীয়দের অভিযোগ, সেতু রক্ষা বাঁধটি গত দুই বারের বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হলেও কোনো ব্যবস্থা নেয়নি বাঁধ রক্ষণাবেক্ষণ কর্তৃপক্ষ। তাই এবারে নদীতে পানি আসা মাত্রই সেতু রক্ষা বাঁধের প্রায় ৬০ মিটার জায়গার ব্লক ধসে স্থানটিতে প্রায় ৭০ ফুট গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। এতে তিন গ্রামের ১ হাজার ২০০ পরিবারসহ ক্ষতি হতে পারে সেতুটিও। 

সোমবার সরেজমিনে দেখা গেছে, সম্প্রতি উজানের ঢলে নেমে আসা পানি তিস্তায় কমে গেলেও তীব্র স্রোত সরাসরি এসে আঘাত হানছে বাঁধের গায়ে। এতে নিচের অংশের মাটি ভেসে গিয়ে ধসে পরছে ব্লকগুলো। প্রতিনিয়ত একটু একটু করে নিচে নেমে যাচ্ছে বাকি ব্লকগুলোও।

লক্ষীটারী ইউনিয়নের শংকরদহ এলাকার বাসিন্দা নুরু মিয়া (৫৫) বলেন, সেই কয়েকদিন থেকে একদম ওপর থাকি ব্লকগুলো পানিত পরি যায়চোল। নিচত গর্ত হইছে। কায়ো দেখবার আইসেচোল না। এটে যদি ভাঙে ব্রিজ শুকনাত পরি থাকবে। পানি আর একপাশে বাড়িঘর ভাঙি নিয়া যাইবে।

লক্ষীটারী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল হাদী বলেন, এর আগে দুই বারের বন্যায় যখন বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল তখন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানিয়েছিলাম। কিন্তু তারা কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। এবার যেভাবে পানি এসে বাঁধটিতে সরাসরি আঘাত হানতেছে তাতে করে উজানে আর একটু বৃষ্টি হলে এই বাঁধ ভেঙে যাবে।

তিনি আরও বলেন, বাঁধ ভেঙে গেলে পানি এসে সরাসরি আঘাত হানবে লালমনিরহাট-রংপুর সড়কে। এতে সড়কটি ভেঙে যাওয়ার আশঙ্কা শতভাগ। আর যদি সড়কটি ভেঙে যায় তাহলে লালমনিরহাটের প্রায় ৩০ লাখ মানুষের সঙ্গে রংপুর শহরের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হবে এবং বাঁধের পাশে থাকা শংকরদহসহ তিনটি গ্রামের প্রায় ১ হাজার ২০০ পরিবার ভাঙন হুমকিতে পড়বে। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব সেতু ও সড়কটি রক্ষার জন্য দ্রুত বাঁধ সংস্কারের কাজ করতে হবে। 

আরও পড়ুন

গঙ্গাচড়া উপজেলা প্রকৌশলী মজিদুল ইসলাম বলেন, তিনমাস পূর্বে রংপুর এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী স্যার পরিদর্শন করে গেছেন। পরে কি হল স্যারের সাথে কথা বলে আমি বিষয়টি জানাবো।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাহমুদ হাসান মৃধা বলেন, মহিপুরে তিস্তা সেতুটির পশ্চিম অংশের বাঁধটি পানি বাড়া ও কমার সঙ্গে সঙ্গে ভাঙনও নতুন করে শুরু হয়েছে। ভাঙনের বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।

প্রসঙ্গত, গঙ্গাচড়ার মহিপুরে দ্বিতীয় তিস্তা সেতু লালমনিরহাট-রংপুর আঞ্চলিক সড়কে তিস্তা নদীর ওপর অবস্থিত একটি সেতু। যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন ও ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসারের জন্য লালমনিরহাটের পাটগ্রামে অবস্থিত বুড়িমারী স্থলবন্দরের সঙ্গে রংপুরসহ দেশের বিভিন্ন এলাকার দূরত্ব কমিয়ে আনতে তিস্তা নদীর ওপর সেতুটি নির্মাণ করা হয়। ২০১৮ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর এই সেতুর উদ্বোধন হয়। সেতুটি লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলার কাকিনা ইউনিয়নের রুদ্রেশ্বর এলাকার সঙ্গে রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলার লক্ষীটারি ইউনিয়নের মহিপুর এলাকাকে সড়কপথে যুক্ত করেছে। ১২৩ কোটি ৮৬ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত ৮৫০ মিটার দৈর্ঘ্য ও ফুটপাতসহ ৯ দশমিক ৬ মিটার প্রস্থের সেতুতে রয়েছে ১৬টি পিলার, ১৭টি স্প্যান, ৮৫টি গার্ডার।

 

 

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

ঢাবির আন্তঃবিভাগ বাস্কেটবল প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন সাংবাদিকতা বিভাগ

জ্বালানিবাহী বিদেশি ট্যাঙ্কার জব্দ করেছে ইরান

রংপুরের তারাগঞ্জে চোর সন্দেহে জামাই-শ্বশুরকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় গ্রেফতার ৪

গাজায় যুদ্ধাপরাধের জন্য ইসরাইলকে ফুটবল থেকে বহিষ্কারের দাবি

সুনামগঞ্জে শিশু ধর্ষণের অভিযোগে ইমাম আটক

ইভিএম বাতিল, ফিরছে ‘না’ ভোট: ইসি সানাউল্লাহ