ভিডিও সোমবার, ০৪ আগস্ট ২০২৫

বাংলা ভাষাকে বিদেশি ভাষা বলা চরম দায়িত্বজ্ঞানহীন : মমতা

বাংলা ভাষাকে বিদেশি ভাষা বলা চরম দায়িত্বজ্ঞানহীন : মমতা, ছবি: সংগৃহীত।

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : দিল্লি পুলিশের একটি চিঠিতে বাংলা ভাষাকে ‘বাংলাদেশি ভাষা’ হিসেবে উল্লেখ করায় তীব্র প্রতিবাদ জানালেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রবিবার (৩ আগস্ট) তিনি একে ‘লজ্জাজনক, অপমানজনক, সংবিধানবিরোধী এবং জাতিবিরোধী’ বলে আখ্যা দেন। তিনি বলেন, ‘এটি ভারতের সব বাংলা ভাষাভাষী মানুষকে অপমান করার সামিল’।

যা বলা হয় চিঠিতে 

২৯ জুলাই দিল্লির লোধি হাউস থানার অফিসার ইনচার্জ ‘বাংলা ভবন’-এর অফিসার ইনচার্জকে একটি চিঠি পাঠান। যেখানে তিনি অনুরোধ করেন একটি নথির অনুবাদ করে দিতে-যেটি লেখা ‘বাংলাদেশি ভাষায়’। চিঠিটি একটি এফআইআরের প্রেক্ষিতে পাঠানো হয়েছিল, যেখানে দিল্লিতে বসবাসকারী আটজন ‘বাংলাদেশি নাগরিক’ সন্দেহে তদন্তাধীন রয়েছেন। এই চিঠি সামনে আসতেই ক্ষোভে ফেটে পড়েন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘বাংলা ভাষাকে ‘বাংলাদেশি ভাষা’ বলা শুধুই ভুল নয়-এটি একটি রাজনৈতিক অপকৌশল যা আমাদের ভাষা, সংস্কৃতি ও আত্মপরিচয়কে হেয় করার চেষ্টা।’ তিনি আরো বলেন, ‘জাতীয় সঙ্গীত ‘জন গণ মন’ এবং জাতীয় গান ‘বন্দে মাতরম’-উভয়ই বাংলা ভাষায় রচিত। কোটি কোটি ভারতবাসীর মাতৃভাষা বাংলা। সেই ভাষাকে বিদেশি ভাষা বলে অপমান করা চরম দায়িত্বজ্ঞানহীন ও বিভাজনমূলক।’ তৃণমূল কংগ্রেস চেয়ারপার্সন মমতা ব্যানার্জি একে ‘বাঙালি বিরোধী ভারত সরকার’-এর ষড়যন্ত্র বলে অভিযোগ করেন এবং বলেন, ‘সংবিধানবিরোধী ভাষা ব্যবহার করে ভারতের বাঙালি ভাষাভাষীদের অপমান ও হেয় করা হচ্ছে। এর বিরুদ্ধে তীব্র এবং তাৎক্ষণিক প্রতিবাদ হওয়া উচিত।’

এই ঘটনার পর তৃণমূল কংগ্রেস রাজ্যজুড়ে ‘ভাষা আন্দোলন’ কর্মসূচি ঘোষণা করেছে, যা আগামী বছরের বিধানসভা নির্বাচন পর্যন্ত চলবে বলে জানানো হয়েছে। তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘এটি কোনো সাধারণ কেরানির ভুল নয়। এটি বিজেপি’র পরিকল্পিত রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র, যার মাধ্যমে তারা বাংলা ও পশ্চিমবঙ্গকে বাংলাদেশ বলে প্রচার করতে চাইছে।’ তিনি আরো বলেন, ‘বাংলাকে বিদেশি ভাষা বলা মানে আমাদের আত্মপরিচয়, সংস্কৃতি ও অস্তিত্বে আঘাত। পশ্চিমবঙ্গের বাঙালিরা তাদের নিজের মাতৃভাষায় নিজেদের পরিচয় বহন করে। এখানে তারা ‘বহিরাগত’ নয়।’ 

আরও পড়ুন

তিনি অবিলম্বে তদন্তকারী কর্মকর্তা অমিত দত্তকে বরখাস্ত করার দাবি জানান এবং দিল্লি পুলিশ, বিজেপি এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর (অমিত শাহ) পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান জানান।

এই বিতর্ক এমন সময়ে তৈরি হয়েছে যখন বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলিতে অভিবাসী শ্রমিকদের লক্ষ্য করে অভিযান চালানো এবং তৃণমূলের পক্ষ থেকে ‘বাঙালি সম্মান’ রক্ষার দাবিতে রাজ্যজুড়ে আন্দোলনের আহ্বান জানানো হচ্ছে। বাংলা ভাষাকে ‘বিদেশি’ বলে দাগানোর এই ঘটনা রাজ্য রাজনীতিতে বড় বিতর্ক তৈরি করেছে এবং আগামী নির্বাচনের আগে বাঙালি পরিচিতির প্রশ্নে রাজনীতি আরও তীব্র হবে বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকরা। সূত্র : দ্য হিন্দু

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

অভয়নগরে ব্যবসায়ীকে মাটিতে পুতে চাঁদা আদায়ের ঘটনায় গ্রেপ্তার ১

চট্টগ্রামে হত্যা মামলায় ৫ জনের মৃত্যুদণ্ড

ঢাকা শহর এবং জুলাই আন্দোলন নিয়ে যা বললেন আমেরিকার তরুণ ব্লগার | Daily Karatoa

যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান চীনের

বাংলাদেশি জলসীমায় অবৈধ অনুপ্রবেশে আটক ১৪ ভারতীয় জেলে কারাগারে

সাতক্ষীরা সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশি ব্যবসায়ী আহত