আল-আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংকে স্বচ্ছতা, মেধা ও আইনের ভিত্তিতে ৮৬৪ জন কর্মকর্তার নিয়মিতকরণ সম্পন্ন

আল-আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংক পিএলসি সদ্য একটি গুরুত্বপূর্ণ মূল্যায়ণ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেছে, যা অভ্যন্তরীণ ও বহিঃস্থ অডিট রিপোর্ট এবং নিয়ন্ত্রক সংস্থাসমূহের সুপারিশ অনুযায়ী পরিচালিত হয়। ২০২১ সাল থেকে নিয়োগ সংক্রান্ত বেশ কিছু অনিয়মের বিষয় উঠে আসায়, ব্যাংক সুশাসনের অংশ হিসেবে একটি পূর্ণাঙ্গ যাচাই ও মেধা মূল্যায়নের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। এই উদ্যোগের মাধ্যমে ব্যাংকের কর্মপ্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা, সাম্য এবং নীতিনিষ্ঠতার দৃঢ়তা পুনরায় নিশ্চিত করা হয়েছে।
মূল্যায়ণ পরীক্ষায় মোট ১,৪১৪ জন কর্মকর্তা অংশগ্রহণ করেন। এই প্রক্রিয়াটি পরিচালনা করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্সটিটিউট অব বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (আইবিএ), যার মাধ্যমে মেধা ও সামর্থ্যের একটি নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য মানদণ্ড তৈরি হয়। এটি মেধা যাচাইয়ের একটি বৈধ ও স্বীকৃত উপায়, বিশেষ করে যখন নিয়োগের প্রক্রিয়া ছিল সুপারিশভিত্তিক, অস্বচ্ছ ও নিয়ম-নীতি বহির্ভূত যা অডিটে প্রমাণিত হয়েছে।
মূল্যায়নের ভিত্তিতে ৮৬৪ জন কর্মকর্তা নির্ধারিত মান অর্জন করে সফলভাবে উত্তীর্ণ হন এবং নিয়মিতকরণের মাধ্যমে তাদের চাকরি এখন পূর্ণ নিরাপত্তায় রয়েছে। তারা ইতোমধ্যে নিজ নিজ দায়িত্বে নিষ্ঠার সঙ্গে ব্যাংকের কার্যক্রম পরিচালনায় যুক্ত হয়েছেন।
অন্যদিকে, এই মূল্যায়নে অংশ নেওয়া ৫৪৭ জন কর্মকর্তা নির্ধারিত মান অর্জন করতে পারেননি। তবে এই ফলাফলের ভিত্তিতে যারা উত্তীর্ণ হতে পারেনি, তাদের সবার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য আইন, ব্যাংকের চাকরি বিধি এবং বাংলাদেশ শ্রম আইনের আলোকে সম্মানজনক ও মানবিক প্রক্রিয়ায় অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। যেসব কর্মকর্তা মূল্যায়ণ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হননি, তাদের পূর্ববর্তী চাকুরিকালীন অভিজ্ঞতাকে যথাযথভাবে সম্মান জানিয়ে ছাড়পত্র, অভিজ্ঞতা সনদ ও প্রাসঙ্গিক কাগজপত্র প্রদান করা হচ্ছে যাতে তারা সামনে এগিয়ে যেতে পারে। পাশাপাশি, প্রচলিত আইন অনুযায়ী সকল আর্থিক প্রাপ্যতা ও সুবিধা সম্পূর্ণভাবে এবং যথাযথভাবে প্রদান করা হয়েছে।
ব্যাংক গভীর উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করছে যে, একটি সম্পূর্ণ আইনসম্মত ও স্বচ্ছ মানবসম্পদ মূল্যায়ন প্রক্রিয়াকে কেন্দ্র করে কিছু প্রাাক্তন কর্মকর্তা ও বহিরাগত স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠী ইচ্ছাকৃতভাবে অস্থিরতা সৃষ্টি করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে। শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদকে সহনশীলভাবে দেখা হলেও, আন্দোলনের নামে ইচ্ছাকৃতভাবে ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে প্রবেশ সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করে রেখেছে, ফলে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অফিসে প্রবেশ করতে পারছেন না এবং স্বাভাবিক ব্যাংকিং কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। এ ধরনের কর্মকাণ্ড শুধু ব্যাংকের নয়, বরং দেশের ব্যাংকিং খাত ও জাতীয় অর্থনীতির ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে, যা অত্যন্ত দুঃখজনক ও অনভিপ্রেত।
একটি স্বচ্ছ, আইনসম্মত ও ন্যায়সঙ্গত প্রক্রিয়াকে অজুহাত হিসেবে ব্যবহার করে যারা এই ধরনের বিশৃঙ্খলা তৈরির চেষ্টা করছে, তাদের কর্মকাণ্ড কোনভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়, যা একেবারেই অনাকাক্সিক্ষত, বেআইনি এবং জাতীয় স্বার্থবিরোধী।
আল-আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংক একটি মানবিক ও আইনসম্মত প্রতিষ্ঠান, যা সবসময় শ্রম আইন, মানবাধিকারের মর্যাদা এবং কর্মীদেও প্রতি সম্মান প্রদর্শনে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। ব্যাংক বিশ্বাস করে, প্রাতিষ্ঠানিক শৃঙ্খলা ও আইনের শাসন শুধু ব্যাংকের নয়, বরং জাতীয় অর্থনীতির স্বার্থেও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রতিষ্ঠার ৩০ বছর পূর্তিতে এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ব্যাংক তার নেতৃত্বে জবাবদিহিতা, নীতিশৃঙ্খলা এবং মানবিক মূল্যবোধকে আরও দৃঢ় করেছে।
আমরা দেশের সকল গণমাধ্যম ও সম্মানিত সাংবাদিকদের প্রতি আন্তরিক অনুরোধ জানাই, আপনারা যেন এই প্রক্রিয়াকে যথাযথভাবে উপলব্ধি করে বস্তুনিষ্ঠ ও নিরপেক্ষ সংবাদ পরিবেশনের মাধ্যমে দেশের ব্যাংকিং খাতের স্বচ্ছতা ও অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতাকে আরও দৃঢ় করতে আপনারা দীর্ঘদিনের মতোই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবেন।
মন্তব্য করুন