বগুড়ার নন্দীগ্রামে ফাস্ট ফুডের হাওয়া শহরের খাবার এখন গ্রামে

নন্দীগ্রাম (বগুড়া) প্রতিনিধি : গ্রামবাংলার ঐতিহ্যবাহী খাবারের পাশাপাশি উপজেলা পর্যায়ে ঢুকে পড়েছে শহরের ফাস্ট ফুড খাবার। শহরের খাবার প্রবেশ করেছে গ্রামীণ জনপদে। এক সময় যেখানে শুধুমাত্র ভাত, ডাল, শাক-সবজি, মাংসই ছিল নিত্যনৈমিত্তিক খাবার, এখন সেখানে চিকেন ফ্রাই, পিজ্জা, বার্গার বা কফির কাপ হাতে তরুণদের দেখা যাচ্ছে ফাস্ট ফুডের দোকানে।
গ্রামের ছেলে-মেয়েরা এখন শহরে পড়াশোনা করে, চাকরি করে বা ঘুরতে যায়, আর শহরের সেই খাদ্য সংস্কৃতি তারা নিয়ে আসে নিজের গ্রামে। অনেকে শহরের জনপ্রিয় রেসিপি নিয়ে ছোট আকারে ব্যবসা শুরু করেছেন নিজ গ্রামেই। ফলে নতুন করে কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হচ্ছে, বাড়ছে স্বনির্ভরতা।
বগুড়ার নন্দীগ্রাম উপজেলার কাথম-কালিগঞ্জ আঞ্চলিক সড়কের পাশে নন্দীগ্রাম পৌরসভার ঢাকইর ও নামুইট এলাকায় দেখা গেছে, কিছু তরুণ উদ্যোক্তা শহর থেকে শিখে আসা বিভিন্ন ফাস্ট ফুডের রেসিপি দিয়ে গ্রামের আঞ্চলিক সড়কের পাশে মনোরম পরিবেশে গড়ে তুলেছে ফাস্ট ফুডের দোকান।
তাদের এই দোকানগুলোর সামনে প্রতিদিনই ভিড় জমে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের। সবাই আগ্রহ নিয়ে স্বাদ নিচ্ছেন নতুন খাবারের। বার্গার, চিকেন ফ্রাই, পিজ্জা, স্যান্ডউইচ, ফুচকা, চটপটি, মিল্কসেক যা আগে কল্পনাও করা যেত না।
আরও পড়ুনকথা হয় ড্রিম ফুডের উদ্যোক্তা গোলাম মোস্তফার সাথে। তিনি বলেন, তারা ৯ বন্ধু মিলে ওই ফাস্ট ফুডের দোকান করেছেন। তারা নিজেরা অন্য পেশায় জড়িত থাকলেও গ্রামে বেকার যুবকদের কাজের সুযোগ সৃষ্টি করার জন্য এই ড্রিম ফুড গড়ে তুলেছেন। প্রতিদিন সাত থেকে আট হাজার টাকার খাবার বিক্রি করেন তারা।
এ বিষয়ে কথা হয় নন্দীগ্রাম মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আলী আজমের সাথে তিনি বলেন, ফাস্ট ফুড আসুক, কিন্তু আমাদের গ্রাম যেন তার নিজের স্বাদ না হারায়। গুড় মাখা খই-মুড়ি, চিনির তৈরি হাতি-ঘোড়ার ছাঁচ, মুড়কি, খাগড়াই, খেজুর গুর-এই ঐতিহ্যগুলো যেন থেকে যায় পরের প্রজন্মের জন্য।
তিনি আরও বলেন, পরিবর্তন অপ্রতিরোধ্য, তবে ভারসাম্য বজায় রাখা জরুরি। শহরের স্বাদ গ্রামে আসুক, তবে গ্রামীণ খাবারও টিকে থাকুক আপন বৈচিত্রে।
মন্তব্য করুন