ভিডিও মঙ্গলবার, ০১ জুলাই ২০২৫

গবেষণার পরিসর বাড়ানোর আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার

শতবর্ষ পেরিয়ে অনন্ত সম্ভাবনার পথে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

শতবর্ষ পেরিয়ে অনন্ত সম্ভাবনার পথে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়: গবেষণার পরিসর বাড়ানোর আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার, ছবি: সংগৃহীত।

ঢাবি প্রতিনিধি : আজ ১ জুলাই। দিনটির সঙ্গে জড়িয়ে আছে একটি নাম, একটি স্বপ্ন, একটি সংগ্রাম-‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়’। ১৯২১ সালের এই দিনে যে বিদ্যাপীঠ যাত্রা শুরু করেছিল মাত্র ৮৭ জন শিক্ষার্থী ও ৩টি অনুষদ নিয়ে, আজ তা ১০৩ বছর পেরিয়ে দাঁড়িয়েছে হাজার বছরের ইতিহাসচর্চার কেন্দ্রস্থলে। ‘প্রাচ্যের অক্সফোর্ড’ খ্যাত এই বিশ্ববিদ্যালয় শুধু শিক্ষা নয়, জন্ম দিয়েছে একের পর এক যুগান্তকারী রাজনৈতিক আন্দোলনের, নির্মাণ করেছে নেতৃত্ব, জাগিয়েছে বুদ্ধিবৃত্তিক আলোড়ন। এ বছর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় দিবসের প্রতিপাদ্য ‘বৈষম্যহীন ও অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজ বিনির্মাণে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।’ আজ সকালে ঐতিহাসিক কার্জন হল চত্বর থেকে শুরু হয় বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা। মুখে স্লোগান, হাতে প্ল্যাকার্ড, চোখে আগামীর স্বপ্ন নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারী ও প্রাক্তনরা অংশ নেবেন এই আনন্দযাত্রায়। 

ইতিহাসের পাতায় ঢাবি : ১৯২১ সালে ব্রিটিশ শাসকদের এক ধরনের ‘দায় মেটাতে’ প্রতিষ্ঠিত হলেও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় দ্রুতই হয়ে ওঠে বাঙালি জাতিসত্তার লালনভূমি। ভাষা আন্দোলন, ’৬৯-এর গণঅভ্যুত্থান, মুক্তিযুদ্ধ ও ২৪ এর বিপ্লব-প্রতিটি অধ্যায়েই এই ক্যাম্পাসের দেয়াল লিখে রেখেছে সাহসী ইতিহাস।

স্বাধীন বাংলাদেশ পেয়েছে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠশালায় তৈরি হওয়া বহু নেতা, লেখক, কবি, বিজ্ঞানী ও সমাজচিন্তককে। যদিও ঐতিহ্যে পূর্ণ, কিন্তু আজকের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে রয়েছে বহু চ্যালেঞ্জ। আবাসন সংকট, শিক্ষকের অভাব, গবেষণায় তহবিল ঘাটতি, জীর্ণ অবকাঠামো, কিছু ক্ষেত্রে ছাত্ররাজনীতির নেতিবাচক প্রভাব-এ সবই এর গতি রুদ্ধ করার মতো বড় প্রতিবন্ধক। তবুও আশাবাদী নতুন প্রজন্ম।

সম্প্রতি চালু হওয়া ‘গবেষণা অনুদান কেন্দ্র’, ‘ডিজিটাল লাইব্রেরি’, ‘ইন্টারন্যাশনাল একাডেমিক প্রোগ্রাম’-এসব উদ্যোগ একে আধুনিকতার সঙ্গে তাল মিলিয়ে এগিয়ে নিতে সাহায্য করছে।

প্রাক্তনদের চোখে স্মৃতির ঢেউ : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী, বর্তমানে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের কর্মকর্তা মো. মাহমুদুল হাসান বলেন, “ঢাবি শুধু একটি ডিগ্রি দেয়নি, দিয়েছে চিন্তা করার দৃষ্টি। দিয়েছে মানবিক মূল্যবোধ। আজো ক্যাম্পাসে পা রাখলে মনে হয়, সময় থেমে আছে। সেই ক্যান্টিন, সেই টিএসসি, সেই বৈশাখী মেলা- সব এখনো রক্তে জ্বলে।”

আরও পড়ুন

শিক্ষার্থীদের স্বপ্ন : সমাজবিজ্ঞান বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী নুজহাত জামান বলেন, “আমরা চাই আমাদের ঢাবি শুধু অতীতের গৌরবেই নয়, বর্তমান ও ভবিষ্যতের বিশ্বমানের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবেও প্রতিষ্ঠিত হোক। প্রযুক্তি, গবেষণা ও উদ্ভাবনে আমরা পিছিয়ে থাকতে চাই না।”

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে গবেষণার পরিসর বাড়ানোর আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার : প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে গবেষণার পরিসর আরো সম্প্রসারণ এবং গবেষণালব্ধ অর্জিত জ্ঞান দেশ ও জনগণের কল্যাণে কাজে লাগানোর আহ্বান জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, ‘বিশ্বায়ন ও চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের এই যুগে আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে উদ্ভাবনের জন্য কাজ করতে, গবেষণার পরিসর বাড়াতে এবং গবেষণায় অর্জিত জ্ঞান দেশ ও জনগণের কল্যাণে প্রয়োগ করার জন্য আহ্বান জানাচ্ছি।’ দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে গতকাল এক বার্তায় অধ্যাপক ইউনূস এ কথা বলেন। আজ দিনটি উদযাপন করবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। প্রধান উপদেষ্টা বলেন, সততা ও নৈতিকতা সমুন্নত রেখে অর্জিত জ্ঞানের সর্বোত্তম ব্যবহারের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদেরকে সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গঠনে নিজেদের উৎসর্গ করতে হবে। তিনি বলেন, ‘আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ভবিষ্যতেও বিশ্বমানের উচ্চশিক্ষা প্রদানে অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে এবং জ্ঞানভিত্তিক সমাজ ও রাষ্ট্র গঠনে প্রত্যাশিত অবদান রাখবে।’ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে ড. ইউনূস বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের সকল সদস্য-শিক্ষক, শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান। 

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

ইন্টারকে বিদায় করে শেষ আটে ব্রাজিলের ফ্লুমিনেন্স

ভারতে রাসায়নিক কারখানায় বিস্ফোরণে নিহত ৩৪

ফোনালাপ ফাঁস : বরখাস্ত হলেন থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী

গাজার একাধিক স্থানে ইসরায়েলি হামলায় নিহত ৯৫

শাকিব খানের আগে ‘মেগাস্টার’ শব্দটা কানে লাগে : জাহিদ হাসান

বিএনপি’র জাতীয় ঐক্য অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি খালেদা জিয়া