ভিডিও শনিবার, ০৩ মে ২০২৫

আপনি কি বাসার ভেতরে শব্দ নিয়ে সচেতন

আপনি কি বাসার ভেতরে শব্দ নিয়ে সচেতন। প্রতীকী ছবি

এত চেঁচামেচি কেন? একটু শান্তি চাই! এই কথাটি কি প্রতিদিনই মনে হয়? রাস্তায় হর্নের বিকট শব্দ আর মাইকিং, পাশের বাড়িতে অনুষ্ঠানের স্পিকার, অফিসে কাজের সময় কলিগদের অনবরত গসিপ। সব মিলিয়ে মাথাটা যেন এলোমেলো লাগে।

শব্দদূষণের প্রসঙ্গ এলেই কেবল রাস্তায় গাড়ির শব্দ আর মাইকিংয়ের কথা মাথায় আসে। তবে আপনার বাড়িতেও কি শব্দ নিয়ে সবাই সচেতন? একবার ভেবে দেখুন তো, দিনে কতবার আমাদের মনে হয় যে, আরেকটু আস্তে কথা বললে একটু শান্তি লাগতো অথবা টেলিভিশনের শব্দটা বেশিই কানে লাগছে।

আপনিও যদি অতিরিক্ত শব্দ নিয়ে বিরক্তিতে ভোগেন, তাহলে আশপাশের মানুষদের জানান যে, আজ আন্তর্জাতিক শব্দ সচেতনতা দিবস। ১৯৯৬ সাল থেকে প্রতি বছর এপ্রিল মাসের শেষ বুধবার পালন করা হয় এ দিনটি। কারণ, অতিরিক্ত শব্দ শুধু বিরক্তিকরই নয়, এটি আমাদের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর।

শব্দদূষণ আপনার যেসব ক্ষতি করছে
১. লম্বা সময় উচ্চমাত্রার শব্দ শুনলে শ্রবণশক্তি কমে যেতে পারে।

২. অতিরিক্ত শব্দ উদ্বেগ বাড়ায় ও ঘুমের ব্যাঘাত ঘটায়।

৩. গবেষণা বলছে, ক্রমাগত উচ্চশব্দে থাকলে উচ্চ রক্তচাপ ও হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ে।

৪. মনোযোগের অভাব: পড়াশোনা বা কাজে ফোকাস করতে সমস্যা হয়।

যারা উচ্চমাত্রার শব্দ যুক্ত জায়গায় কাজ করেন ও দিনে অনেকটা সময় রাস্তায় কাটান, তারা সবাই এইসব ঝুঁকির মধ্যে থাকেন। তবে বাড়ি ফিরে কি শব্দ নিয়ে আরেকটু সচেতন হওয়া যায় না?

আরও পড়ুন

ব্যক্তিগত সময়ে শব্দ নিয়ে আরেকটু সচেতন হবেন কীভাবে
১. কাছে গিয়ে কথা বলুন
অনেকের অভ্যাস থাকে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দূরে থেকে বা পাশের ঘর থেকে চিৎকার করে কথা বলার। এটি না করে যার সঙ্গে কথা বলবেন তার কাছাকাছি গিয়ে স্বাভাবিক ভলিউলে কথা বলুন। এতে একদিকে যেমন অযথা চিৎকার করা কমবে, তেমনি আপনার কথা সামনের জন আরো ভালো করে বুঝতে পারবেন।

২. ভিডিও দেখুন আস্তে
মোবাইল-ল্যাপটপে সিনেমা বা রিলস্ দেখার সময় সবার মধ্যে বিকট শব্দে ডিভাইস বাজাবেন না। যদি কাউকে সঙ্গে নিয়ে দেখেন, তাহলে দুজনই শুনতে পান এমন ভলিউম ব্যবহার করুন। তবে যখন সবার মধ্যে বসে একা একা মোবাইল চালাবেন, তখন অন্যদের মানসিক স্বাস্থ্যের বিষয়টিও খেয়াল করুন। ওই পরিবেশে এমন কেউ থাকতে পারেন যিনি হয়তো কোনো শব্দ শুনতে চাচ্ছেন না, তার আরাম করার সময়ে যেন আপনার জন্য ব্যাঘাত না ঘটে।

৩. না দেখলে বন্ধ রাখুন
অনেকের অভ্যাস আছে টেলিভিশন কেউ না দেখলেও উচ্চ ভলিউমে তা চালিয়ে রাখার। এতে বিদ্যুতের অপচয় ও শব্দ দূষণ দুটোই হয়। নির্দিষ্ট কিছু যখন দেখছেন না, তখন টেলিভিশন চালিয়ে অযথা চিৎকার-চেঁচামেচির পরিবেশ তৈরি করবেন না।

৪. একটু ধৈর্য ধরুন
বারবার কলিংবেল বাজালে ফ্ল্যাট বাড়ির ভিতরে বিকট শব্দ হয়। কিন্তু অনেকেই মজা করার জন্য এমনটি করে থাকেন। তবে বন্ধ বাসার মধ্যে কলিংবেলের অতিরিক্ত শব্দ বিরক্তি তৈরি করতে পারে। তাই একবার কলিংবেল দিয়ে উত্তরের জন্য একটু অপেক্ষা করুন।

৫. রিংটোনটি সহনীয় রাখুন
রাস্তায় অন্যান্য শব্দের জন্য মোবাইলের ‍রিংটোন বেশ জোরেই দিতে হয়। কিন্তু বাড়ির ভেতরে ওই শব্দটি নয়েজ তৈরি করে। বিশেষ করে বাসায় ছোট শিশু থাকলে তারা চমকে ওঠে ও ঘুম ভেঙে যায়। তাই বাইরে থেকে ফিরে আপনার মোবাইলের শব্দটি কমিয়ে নিন।

৬. মেশিন চালান বলে-কয়ে
ব্লেন্ডার, মিক্সার, ড্রিল, ভ্যাকিউম ক্লিনার জাতীয় মেশিন, যা বাসার মধ্যে ব্যবহার করা হয় ও উচ্চ শব্দ তৈরি করে, চালানোর প্রয়োজন হলে বাড়ির অন্য সদস্যদের জানান।

বিশ্বে সবচেয়ে উচ্চমাত্রার শব্দ দূষণের শহরের তালিকায় ঢাকার নামও উঠে আসে। রাস্তায় যানজট, নির্মাণ কাজের শব্দ এড়াতে অনেকেই এখন হেডফোন ব্যবহার করেন, তবে সেটাও দীর্ঘসময় ব্যবহার করা ক্ষতিকর হতে পারে। শব্দ নিয়ে সচেতনতা শুধু একটি দিনের বিষয় নয়, এটি দৈনন্দিন অভ্যাস। তাই অপ্রয়োজনীয় আওয়াজ কমাতে চেষ্টা করুন। সেই সঙ্গে নিজের এবং অন্যদের সুস্থ থাকতে সাহায্য করুন।

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

বাংলাদেশে পাঁচ ম্যাচ সিরিজ খেলতে পৌঁছল নিউজিল্যান্ড

মাগুরার সাবেক কাউন্সিলর মীর বাবুকে কুপিয়ে জখম

মেসিকে নিয়ে এশিয়া ও আফ্রিকার তিন দেশ সফরে আসছে আর্জেন্টিনা

বগুড়া জেলা মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের নির্বাচনে জুলাই গণহত্যার আসামিনের মনোনয়ন বাতিলের দাবি

ফুলশয্যার রাতেই বরের মৃত্যু, বাকরুদ্ধ নববধূ

নাফ নদী থেকে আটক ৪ রোহিঙ্গা জেলেকে ছেড়ে দিল আরাকান আর্মি