ভিডিও সোমবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৫

আর কিছু দিন পরই বাজারে আসছে দিনাজপুরের লিচু

আর কিছু দিন পরই বাজারে আসছে দিনাজপুরের লিচু

দিনাজপুর জেলা প্রতিনিধি : লিচুর ‘রাজধানী’ হিসেবে পরিচিত দিনাজপুরের লিচুর বাগানগুলোতে গাছে গাছে ঝুলছে গুটি। আর কিছুদিন (দুই সপ্তাহ) পরই বাজারে আসবে লাল-গোলাপী টসটসে লিচু। এখন পর্যন্ত আবহাওয়া অনুকূলে থাকলেও এবার জাতভেদে লিচুর ফলন কিছুটা কম হবে বলে মনে করছেন লিচুচাষিরা। মাদ্রাজি জাতের লিচুতে ফলন মোটামুটি ভালো হলেও চাষিরা হতাশ বোম্বে লিচুতে। এছাড়াও এলাকাভেদে ফলনের তারতম্য রয়েছে বলে জানান তারা।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের হিসাব অনুযায়ী দিনাজপুর জেলায় ৫ হাজার ৫২০ হেক্টর জমিতে লিচুর বাগান আছে ৯ হাজার ৯৮টি। এবার উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৩৪ হাজার ৬২৮ মেট্রিকটন। জেলায় সবচেয়ে বেশি তিন হাজার ২২৩ হেক্টর জমিতে বাগান আছে বোম্বাই জাতের লিচুর। এছাড়াও মাদ্রাজি এক হাজার ১১৭ হেক্টরে, চায়না-থ্রি ৮০৫ হেক্টরে, বেদানা ৩১৮ হেক্টরে, কাঁঠালি ৫৬ হেক্টরে এবং মোজাফফরি লিচুর বাগান আছে এক হেক্টর জমিতে। আর বসতবাড়ির উঠানসহ বাগানগুলোতে সাত লক্ষাধিক লিচু গাছ রয়েছে।

দিনাজপুরের বিভিন্ন লিচু বাগান ঘুরে দেখা যায়, গাছ এবং ফলের শেষ সময়ের পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন চাষিরা। লম্বা পাইপ দিয়ে কীটনাশক ছিটানো হচ্ছে। বিগত বারো দিনে এ জেলায় ১০০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হওয়ায় এবার লিচুর গুরুত্বপূর্ণ সময়ে সেচের প্রয়োজন পড়ছে না। চাষিরা বলছেন, এখন পর্যন্ত অনূকুল আবহাওয়া থাকায় তারা ভারমুক্ত আছেন।

কিছু কিছু এলাকায় গাছে ফলন কম দেখা দিলেও কালবৈশাখী ঝড় কিংবা মাত্রাতিরিক্ত বৃষ্টিপাত না হলে যে পরিমাণ ফলন এসেছে তাতে ঝরে পড়ার হার কমবে। লিচুচাষি শাহজাহান আলী বাগানে পোকামাকড় দমনে কীটনাশক ছিটাচ্ছিলেন। তিনি বলেন, ‘৫০টি বেদানা লিচু গাছের বাগান তার।

গত তিন বছর বাগান চুক্তি দিয়েছিলেন এবার নিজে করছেন। গত মৌসুমে মাত্র কয়েকটি গাছে ফলন আসে। তবে এবার প্রায় সব গাছে ফলন আসছে। গুটির আকারও বেশ বড় হয়েছে। ধারণা করছেন এবার প্রতিটি গাছে গড়ে সাড়ে তিন হাজার পিচ পর্যন্ত লিচু পাবেন।

আরও পড়ুন

আরেক চাষি আফজাল হোসেন বলেন, চার উপজেলায় ছোট-বড় মিলিয়ে যে কয়েকটি বাগান কিনেছি তাতে অন্তত ২২শ’ গাছ আছে। বেশিরভাগ মাদ্রাজি ও বোম্বাই। এবার প্রায় ৪০ শতাংশ ফলন কম এসেছে। বিশেষ করে বোম্বাই জাতের লিচুর ফলন খুবই কম। গতবছর মাদ্রাজি লিচুর দাম পেয়েছি ২২শ’ টাকা প্রতি হাজার। এবার হয়তো বাজারটা একটু ভালো যাবে।’

লিচু ব্যবসায়ী মোহাম্মদ মামুর বলেন, দিনাজপুরে মে মাসের ১০-১৫ তারিখের মধ্যে লিচুর ভরা মৌসুম শুরু হবে। সবার আগে বাজারে আসবে মাদ্রাজি, তারপর বোম্বাই, বেদানা ও চায়না-থ্রি। সবেশেষে বাজারে আসবে হাড়িয়া বেদানা, কাঁঠালি এবং মোজাফফরি জাতের লিচু। তিনি বলেন, লিচুর বাজার ব্যবস্থাপনাটা সুন্দর করা জরুরি।

জেলায় সবচেয়ে বেশি লিচুর বাগান বিরল উপজেলায়। লিচুর উৎপাদন ও পরিচর্যা নিয়ে এই উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা মোস্তফা হাসান ইমাম বলেন, এবার লিচুর ফলন খুবই ভালো। তুলনামূলকভাবে তাপমাত্রা কম থাকায় রোদে পুড়ে যাওয়া, পোকার আক্রমণ ও ঝরে পড়ার হার কম।

তিনি আরও বলেন, অনূকুল আবহাওয়ায় এবার লিচুর আকার বড় ও মিষ্টি হবে। বিগত দুই বছরে এই উপজেলা থেকে ইউরোপের দেশগুলোতে প্রায় ৪০ হাজার পিচ লিচু রপ্তানি করা হয়েছে, এবারও এমন উদ্যোগ নেওয়া হবে।

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

লাইসেন্স পেলো স্টারলিংক

আদালত চত্বরে সাবেক মন্ত্রী আনিসুল হ‌ককে আইনজীবীদের থাপ্পড়

দ্রুতই ডিএসসিসির মেয়রের চেয়ারে বসছেন ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক

চাঁপাইনবাবগঞ্জে হেরোইন সংক্রান্ত মামলায় যুবকের যাবজ্জীবন

জনগণ ভোট চাইছে না, কীভাবে বুঝলেন?

ফ্রান্সের থেকে ২৬টি রাফাল যুদ্ধবিমান কিনছে ভারত