ভিডিও শনিবার, ১১ অক্টোবর ২০২৫

চোর যেভাবে তওবা করবে

চোর যেভাবে তওবা করবে। প্রতীকী ছবি

একজন জানতে চেয়েছেন, ‘আমি বিভিন্ন লোকের টাকা-পয়সা চুরি করেছি, এখন আমি আল্লাহর কাছে তওবা করেছি। যাদের টাকা-পয়সা চুরি করেছি তাদের ঠিকানাও জানি না?’ অন্য আরেকজন বলেন, ‘আমি এক বিদেশি কোম্পানির কিছু টাকা-পয়সা মেরে দিয়েছি। তাদের কাজকর্ম শেষ হয়ে গেছে এবং তারা দেশ ছেড়ে চলে গেছে।’ তৃতীয় আরেকজন বলেন, ‘আমি এক দোকান থেকে কিছু মালপত্র চুরি করেছিলাম। বর্তমানে সে দোকানের স্থান পরিবর্তন হয়ে অন্যত্র চলে গেছে। নতুন ঠিকানাও জানি না!’

তাদের ক্ষেত্রে পরামর্শ হলো, যথাসম্ভব তাদের ঠিকানা সন্ধান করুন। যদি পেয়ে যান, তাহলে তাদের প্রাপ্য ফেরত দেবেন। যদি মালিক মারা গিয়ে থাকে, তাহলে তার ওয়ারিশদের ফেরত দেবেন। চেষ্টা করেও যদি তাদের না পান, তাহলে এসব মাল আপনি তাদের নিয়তে দান করে দেবেন।

তাদের জন্যই নিয়ত করবেন, যদিও কেউ অবিশ্বাসী হয়ে থাকে। কেননা আল্লাহ তাদের এ দুনিয়ায় তার প্রতিদান দেবেন, পরকালে তারা কিছুই পাবে না।

ইবনুল কাইয়িম (রহ.) তার ‘মাদারিজুস সালেকিন’ নামক গ্রন্থে উল্লেখ করেছেন। মুসলিম বাহিনীর এক সৈনিক গনিমতের মাল চুরি করে। এর কিছুকাল পরে সে তওবা করে। অতঃপর সে চুরি করা মালপত্র নিয়ে সেনাপতির কাছে হাজির হয়। সেনাপতি তা গ্রহণ করতে অস্বীকার করে বলেন, ‘আমি কিভাবে সব সৈন্যের কাছে এসব পৌঁছাব? (তারা তো বিভক্ত হয়ে গেছে)।’ এরপর সে সৈনিক হাজ্জাজ বিন শায়েরের কাছে এসে এ ব্যাপারে ফাতাওয়া চায়।

তিনি বলেন, হে লোক! নিশ্চয়ই আল্লাহ সেনাবাহিনীর সবাইকে জানেন, তাদের নামধামও অবগত এবং বংশ-পরিচয়ও জানেন। সুতরাং তুমি পঞ্চমাংশ তার প্রাপককে দিয়ে দেবে এবং বাকি ওদের পক্ষ থেকে দান করে দাও। নিশ্চয়ই আল্লাহতায়ালা তাদের আমলনামায় নেকি পৌঁছে দেবেন। সে তখন সেভাবেই আমল করে বিষয়টি খলিফা মোয়াবিয়াকে জানায়। তখন তিনি বলেন, ‘আমি যদি তোমাকে এভাবে ফতোয়া দিতে পারতাম, তাহলে তা আমার অর্ধেক সম্পদের চেয়েও আমার কাছে বেশি পছন্দনীয় হতো।’

আরও পড়ুন

আরেক ব্যক্তি বলেন, ‘আমি আমার বাবার ও নিকটাত্মীয়ের পকেট থেকে গোপনে টাকা-পয়সা সরিয়ে নিতাম। আমি এখন তওবা করতে চাই। আমি সঠিকভাবে বলতে পারব না যে মোট কত টাকা নিয়েছি। আমি এদের সামনে যেতে খুবই বিব্রতবোধ করছি। আমার করণীয় কী?’ আপনার জন্য পরামর্শ হলো, আপনি মোটামুটি একটা অনুমান করে নেবেন এবং ধারণা করবেন যে কত হতে পারে। আর আপনি যেমন গোপনে নিয়েছেন তেমনি গোপনে ফেরত দিলে কোনো অসুবিধা নেই।

আপনার জন্য এমন কোনো পন্থা অন্বেষণ করতে অসুবিধে নেই যার দ্বারা আপনি এই বিব্রতকর অবস্থা থেকে বাঁচতে পারেন, যেমন হয়তো অন্য কোনো লোকের মাধ্যমে তাদের কাছে তাদের প্রাপ্য ফেরত পাঠালেন এবং নাম উল্লেখ করতে নিষেধ করলেন অথবা কৌশল অবলম্বন করলেন এবং বললেন, আপনার এসব হক এক ব্যক্তির কাছে ছিল, কিন্তু সে তার নাম উল্লেখ করতে চায়নি। মূলকথা হচ্ছে, প্রাপকের কাছে তার অধিকার ফেরত দিতে হবে।

আরেকটি কথা, যদি চোরের কাছে চুরি করা জিনিস থাকে, তাহলে ফেরত দেবে। আর যদি নষ্ট হয়ে থাকে, তাহলে তা ব্যবহার করার জন্য বা সময়ের কারণে মূল্যমান কমে গিয়ে থাকে, তাহলে চোরের জন্য ক্ষতিপূরণ দেওয়া ওয়াজিব, মালিক যদি না তাকে ক্ষমা করে দিয়ে থাকে। আর মালিক যদি ক্ষমা করে দেয়, তাহলে কিছুই লাগবে না।

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

‘ভিডিও বানানোর নামে হাত ধরছে, এটা কি ব্যবসা?’ | Agargaon Cake | Daily Karatoa

কিছু উপদেষ্টার থেকে প্রধান উপদেষ্টাকে সতর্ক থাকতে বললেন মিয়া গোলাম পরওয়ার | PR | Daily Karatoa

বাংলাদেশিদের সমাবেশে নিউ ইয়র্ক সিটি মেয়র প্রার্থী মামদানি

বাংলাদেশ-বাহরাইন বৈঠক: শ্রমবাজার খুলে দেওয়ার আহ্বান

লিসবনে প্রবাসীদের উৎসব, দূর দেশে আপনজন

কেক পট্টিখ্যাত আগারগাঁওয়ে চলছে পুলিশের অভিযান । cake | Daily Karatoa