সোমবার ৮ দফা দাবিতে বান্দরবানে হরতালের ডাক

আগামী সোমবার (১৩ অক্টোবর) বান্দরবান জেলা সদরসহ সকল উপজেলায় সকাল-সন্ধ্যা হরতাল ডেকেছে পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদের চেয়ারম্যান কাজী মো. মজিবর রহমান। পার্বত্য অঞ্চলে বসবাসকারী বাঙালিদের ওপর কয়েক যুগ ধরে চলা নানা বৈষম্য ও বাংলাদেশের একজন নাগরিক হিসেবে দেশের অন্য ৬১টি জেলায় বসবাসকারী জনসাধারণের সম সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত হওয়ার প্রতিবাদে এবং পাহাড়ে বাঙালিদের ওপর চলমান বৈষম্য নিরসনে ৮ দফা দাবি।
আজ বৃহস্পতিবার (৯ অক্টোবর) জেলা সদরের একটি হোটেলে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বিষয়টি নিশ্চিত করেন নাগরিক পরিষদের চেয়ারম্যান কাজী মো. মজিবর রহমান।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে কাজী মো. মজিবর রহমান বলেন, আপনারা জানেন পার্বত্য চট্টগ্রামে আমরা বাঙালি সম্প্রদায় যুগের পর যুগ ধরে বিভিন্ন ধরনের বৈষম্যের শিকার এবং সাংবিধানিক অধিকার থেকে বঞ্চিত। তাই আমাদের সাংবিধানিক ও ন্যায্য অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে ৮ দফা দাবিতে আগামী ১৩ অক্টোবর পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদ ও সর্বস্তরের জনগণের পক্ষ থেকে বান্দরবানে সকাল-সন্ধ্যা সর্বাত্মক হরতাল আহ্বান করছি।
তিনি বলেন, সংগঠনের সিদ্ধান্তে পর্যায়ক্রমে রাঙ্গামাটি এবং খাগড়াছড়িতেও আমরা হরতাল পালন করবো।
আরও পড়ুনএদিকে পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদের ঢাকা হরতালে স্কুল, কলেজ, সরকারি অফিস-আদালত, সরকারি কর্মকর্তাদের গাড়ি, অ্যাম্বুলেন্স, খাবারের দোকান, ওষুধের দোকান, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর গাড়ি ও চলাফেরা, প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার সংবাদ সরবরাহের গাড়ি হরতালের আওতামুক্ত থাকবে বলে জানানো হয় সংবাদ সম্মেলনে।
পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদের ৮ দফা দাবি হচ্ছে- ব্রিটিশ রচিত প্রহসনের পার্বত্য চট্টগ্রাম শাসনবিধি-১৯০০ বাতিল করে সংবিধানের আলোকে তিন পার্বত্য জেলার শাসন ব্যবস্থা চালু করা, জমি ক্রয়-বিক্রয়, চাকরি, শিক্ষাসহ সর্বক্ষেত্রে রাজার সনদ বাতিল করা, ৬১ জেলার ন্যায় রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবানে জমি ক্রয়-বিক্রয় এবং ভূমি ব্যবস্থাপনা চালু করা, বাজার ফান্ড প্লটের লিজের মেয়াদ ৯৯ বছরে উন্নীত করা ও বন্ধ রাখা ব্যাংক ঋণ পুনরায় চালু করা, উন্নয়নের স্বার্থে ও কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে বান্দরবানসহ তিন পার্বত্য জেলায় পরিবেশবান্ধব ইটের ভাটাসহ কলকারখানা ও ইন্ডাস্ট্রি চালু করা, আইনশৃঙ্খলা ও জনগণের জানমালের নিরাপত্তার স্বার্থে তিন পার্বত্য জেলায় প্রত্যহারকৃত ২৪৬টি সেনাক্যাম্প পুনরায় স্থাপন করা, অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার করে চাঁদাবাজি, গুম, খুন, ধর্ষণ বন্ধ করে সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তার করে তিন পার্বত্য জেলায় স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠা করা শিক্ষা, স্বাস্থ্য, ব্যবসা, চাকরিসহ সকল ক্ষেত্রে বৈষম্য দূর করে সমান অধিকার প্রদান ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করা।
সংবাদ সম্মেলনে জেলা নাগরিক পরিষদের সিনিয়র সহ-সভাপতি মাওলানা আবুল কালাম আজাদ, জেলা নাগরিক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ নাছির উদ্দিন, জেলা নাগরিক পরিষদের দপ্তর সম্পাদক শাহজালাল প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
মন্তব্য করুন