ভিডিও বুধবার, ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫

লালমনিরহাটে হিমাগারগুলোতে চাষিদের বিপুল পরিমাণ আলু অবিক্রিত

লালমনিরহাটে হিমাগারগুলোতে চাষিদের বিপুল পরিমাণ আলু অবিক্রিত। ছবি : দৈনিক করতোয়া

বেলাল হোসেন, লালমনিরহাট : লালমনিরহাটের বিভিন্ন হিমাগারগুলোতে বিপুল পরিমাণ অবিক্রিত আলু পড়ে আছে। অথচ আর দেড় মাস পর নতুন আলু রোপণ মৌসুম শুরু হবে। এ অবস্থায় বিপুল পরিমাণ আলু এখনই বিক্রি করতে না পারলে তা খাবার অনুপযোগী হয়ে পড়ার পাশাপাশি চাষিরা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এমন পরিস্থিতিতে চাষিদের মাথায় হাত পড়েছে। বর্তমানে আলু প্রকারভেদে গড়ে ১১ হাজার ৩শ’ টাকা প্রতিটন বিক্রি হচ্ছে।

ওই হিসেবে শুধুমাত্র জেলার হিমাগারগুলোতে যে পরিমাণ আলু এখন অবিক্রিত অবস্থায় আছে তার আর্থিক মূল্যই প্রায় ১০৬ কোটি টাকার মত। হিমাগার ও স্থানীয় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়। সরকার হিমাগারের গেইটে আলুর দাম কেজি প্রতি ২২ টাকা নির্ধারণ করলেও বাজারে মাত্র ১২ থেকে ১৩ টাকায় আলু বিক্রি করতে হচ্ছে বলে অভিযোগ করছেন লালমনিরহাটের চাষি ও ব্যবসায়ীরা। অপরদিকে বাজারে দাম কম থাকায় হিমাগার থেকেও আলু নেওয়া হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন মালিকরা।

এবিষয়ে চাষি ও ব্যবসায়ীরা বলছেন, হিমাগারে রাখা আলু নিয়ে চরম বিপাকে পড়েছেন তারা। ৬০ কেজির এক বস্তা আলু উৎপাদন খরচ ও ভাড়া মিলে দাঁড়িয়েছে প্রায় দেড় হাজার টাকা। লালমনিরহাট জেলা কৃষি বিপণন কর্মকর্তা মো. হারুনুর রশিদ বলেন, কৃষকরা আলুর ন্যায্যমূল্য না পাওয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।

আশা করা হচ্ছে, সরকার শিগগিরই পদক্ষেপ নেবে। এদিকে আলুর ন্যয্য দাম না পাওয়ার দাবি করে স্থানীয়ভাবে প্রায় প্রতিনিয়তই রাস্তায় আলু ছিটিয়ে ফেলে চাষিরা তাদের দাবি আদায়ের চেষ্টা করছেন বলেও জানান চাষিদের অনেকেই।

লালমনিরহাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য মতে, চলতি মৌসুমে ৭ হাজার ৮শ’ হেক্টর জমিতে আলু চাষ হয়েছে। উৎপাদন হয়েছে ২ লাখ ৪ হাজার মেট্রিক টন। জেলার ৯টি হিমাগারে সংরক্ষণ করা হয়েছে ৭৮ হাজার মেট্রিক টন আলু। উৎপাদন বেশি হওয়ায় মৌসুমের শুরু থেকেই কৃষকরা আশানুরূপ দাম পাননি এবারে।

আরও পড়ুন

আদিতমারী উপজেলার কৃষক রহমান আলী বলেন, লাভের আশায় হিমাগারে ১শ’ বস্তা আলু রেখেছিলাম। দুই মাস পর বিক্রি করে হাতে এসেছে মাত্র ২৮ হাজার টাকা। অথচ মৌসুমে বিক্রি করলে পেতাম প্রায় ৬০ হাজার টাকা। এখন তুললে ২২ হাজার টাকার মতো লোকসান হবে।

কালীগঞ্জের চাপারহাট বাজারের ব্যবসায়ী লাল মিয়া অভিযোগ করে বলেন, আলুর দাম বাড়লে সরকারি সংস্থা দাম নিয়ন্ত্রণে নামে। কিন্তু দাম পড়ে গেলে কারও কোনো খোঁজ থাকে না। এতে কৃষক ও ব্যবসায়ী উভয়েই সর্বনাশে পড়েছে।

আদিতমারী উপজেলার আবুল কাশেম হিমাহারের মালিক আব্দুল হাকিম বলেন, এবার কৃষকরা আলু তুলতে আসছেন না। গত বছর আগস্টের মধ্যে যেখানে ৫০ থেকে ৬০ হাজার বস্তা আলু বের হয়েছিল, এবার গেছে মাত্র ১০ থেকে ১৫ হাজার বস্তা।

আজ বুধবার (১০ সেপ্টেম্বর) জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক সাইখুল আরেফিন বলেন, চলতি মৌসুমে আলু উৎপাদন হয়েছে দুই লাখ ৪ হাজার মেট্রিক টন। এর মধ্যে ৭৮ হাজার মেট্রিক টন আলু হিমাগারে মজুদ আছে। চাহিদার চেয়ে আলুর উৎপাদন বেশি হওয়ায় আরুর বাজারে ছন্দপতন হওয়ায় চাষিদের মাঝে হতাশার সৃষ্টি করেছে বলেও জানান ওই কৃষি অফিসার।

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

রংপুরের কাউনিয়ায় মহাসড়কে নছিমন খাদে পড়ে গরু ব্যবসায়ী নিহত

জয়পুরহাটের পাঁচবিবিতে প্রতিপক্ষের দেওয়া বিষে পুড়ল বিধবার আমন ক্ষেত

সিরাজগঞ্জে জাল টাকাসহ কারবারি আটক

রাকসু নির্বাচন : প্রাথমিক তালিকায় ভিপিসহ ৭ জনের প্রার্থিতা বাতিল

রাজশাহীর সেই পাহাড়িয়াদের ‘উচ্ছেদের’ অভিযোগ মনগড়া

দীর্ঘ ৯ বছর বন্ধ থাকার পর চালু হচ্ছে বগুড়া জেলা সুইমিংপুল