পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী দুই দিনের সফরে ঢাকায় আসছেন আজ

পাকিস্তানের উপ-প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার শনিবার দুই দিনের সফরে ঢাকায় এসেছেন। এই সফরে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক পুনরুজ্জীবনের পাশাপাশি রাজনৈতিক স্তরে ঘনিষ্ঠতা বাড়াতে গুরুত্ব দেবে ইসলামাবাদ।
সফরের দ্বিতীয় দিন রবিবার তিনি বাংলাদেশের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেনের সঙ্গে বৈঠক করবেন। এ বৈঠকে ব্যবসা, বিনিয়োগ, সংযুক্তি, ভিসা সহজীকরণসহ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে আলোচনা হবে।
বৈঠক শেষে পাঁচ থেকে ছয়টি চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক সই হওয়ার কথা রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে সরকারি ও কূটনৈতিক পাসপোর্টধারীদের ভিসা বিলোপ, ফরেন সার্ভিস একাডেমির সহযোগিতা, সাংস্কৃতিক বিনিময়, বাণিজ্য সংক্রান্ত যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপ গঠন, বার্তা সংস্থাগুলোর মধ্যে সহযোগিতা এবং দুই গবেষণা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে যৌথ কার্যক্রমের পরিকল্পনা।
তবে সম্পর্ক জোরদারের পাশাপাশি ঢাকা ১৯৭১ সালের গণহত্যার জন্য পাকিস্তানের আনুষ্ঠানিক ক্ষমা, আটকে পড়া পাকিস্তানিদের প্রত্যাবাসন ও অবিভক্ত সম্পদের ভাগ বণ্টনের মতো অমীমাংসিত ইস্যুগুলোও বিবেচনায় রয়েছে।
ইসহাক দার তার সফরে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন। পাশাপাশি তিনি বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া ও জামায়াতে ইসলামীর নেতাদের সঙ্গেও বৈঠক করবেন বলে কূটনৈতিক সূত্রে জানা গেছে।
আরও পড়ুনদীর্ঘ ১৫ বছর পর দুই দেশের মধ্যে এমন উচ্চপর্যায়ের রাজনৈতিক যোগাযোগ আবারো চালু হলো। এর আগে গত এপ্রিলে পররাষ্ট্রসচিব পর্যায়ে বৈঠক হয়। সাম্প্রতিক সময়ে বাণিজ্যিক জাহাজ চলাচল শুরু, ভিসা সহজীকরণ, ভিসা ফি মওকুফসহ বিভিন্ন উদ্যোগে দুই দেশের সম্পর্কে নতুন গতি এসেছে।
বাংলাদেশের পক্ষ থেকে বারবার স্পষ্ট করা হয়েছে যে, ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বাদ দিয়ে পাকিস্তানের সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে তোলার কোনো বার্তা তারা দেয়নি। পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেনও বলেছেন, ‘ভালো সম্পর্ক নিশ্চয়ই গড়ে তোলার চেষ্টা করবো, তবে সেখানে একাত্তরও থাকবে।’
ইসহাক দারের এই সফরকে কেন্দ্র করে দুই দেশের মধ্যে দীর্ঘদিনের অমীমাংসিত ইস্যুগুলো সামনে আনার একটি কৌশলগত সুযোগ দেখছে ঢাকা, যদিও তা কতটা আলোচনায় উঠে আসবে, তা নির্ভর করছে বৈঠকের বাস্তব পরিস্থিতির ওপর।
মন্তব্য করুন